বক্তব্য প্রত্যাহারের প্রশ্নই ওঠে না: তথ্য প্রতিমন্ত্রী

| আপডেট :  ৬ ডিসেম্বর ২০২১, ১২:১১ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৬ ডিসেম্বর ২০২১, ১২:১১ অপরাহ্ণ

সম্প্রতি বিএনপির শীর্ষস্থানীয় একজন নেতার কন্যাকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য করাসহ সাম্প্রতিক নানা সমালোচিত মন্তব্যের কারণে বাংলাদেশের তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোঃ মুরাদ হাসানের বি’রুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীকে ব্যবস্থা নেবার দাবি জানিয়েছেন নারী অধিকারকর্মীরা। এ ব্যাপারে তথ্য প্রতিমন্ত্রী বিবিসিকে বলেছেন, তিনি এসব বক্তব্য দিয়ে কোন ভু’ল করেননি। এগুলো তিনি প্রত্যাহারও করবেন না কিংবা প্রত্যাহার করার ব্যাপারে স’রকার ও দলের উপর থেকে কোন চা’পও নেই।

সম্প্রতি একটি ইউটিউব ভিডিওতে বি’রোধী বিএনপির একজন শীর্ষস্থানীয় নেতার কন্যাকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী। পরে গত শনিবার একটি টিভি টকশোতে উপস্থিত বিএনপির একজন সাবেক নারী এমপিকে ‘মা’নসিক রো’গী’ বলে অভিহিত করে তার সঙ্গে বিতণ্ডায় লিপ্ত হন তিনি।

এই দুটি ঘটনা নিয়ে গত দুদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে তুমুল সমালোচনা হচ্ছে। এমনকি তথ্য প্রতিমন্ত্রী দল, আওয়ামী লীগের কট্টর সমর্থক বলে পরিচিত অনেকেই ফেসবুকে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর সমালোচনা করে বক্তব্য দিচ্ছেন।

গত শনিবার বেস’রকারি একটি টেলিভিশনের টকশোতে অংশ নিয়ে প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান অপর আলোচক, বিএনপির একজন নেত্রী, সাবেক সং’সদ সদস্য সৈয়দা আসিফা আশরাফী পাপিয়াকে আলোচনার এক পর্যায়ে ‘মা’নসিক রো’গে আ’ক্রান্ত’ এবং তার ‘চিকিৎসা দরকার’ বলে মন্তব্য করেন। সেই সময় দুই জনের মধ্যে তুমুল ঝগড়া লেগে যায়।

এর দুদিন আগে ইউটিউবে প্রকাশিত একটি সাক্ষাৎকারে শীর্ষস্থানীয় একজন বিএনপি নেতার কন্যাকে উদ্দেশ্য করে অশালীন বক্তব্য দিতে দেখা যায় তথ্য প্রতিমন্ত্রীকে। ইউটিউবের ওই টকশোতে মি. হাসানকে বলতে শোনা যায়, ”আমার মুখ ভীষণ খা’রাপ।”

যেসব বক্তব্য নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে, সেগুলোকে ভু’ল বলে স্বীকার করেন কি না কিংবা প্রত্যাহার করবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ”প্রশ্নই ওঠে না।” তথ্য প্রতিমন্ত্রী বিবিসিকে আরো বলেন, তার বক্তব্য নিয়ে নানারকম সমালোচনা হলেও তার ও’পর দল বা স’রকারের তরফ থেকে বক্তব্য প্রত্যাহারের কোন চা’প নেই। সুত্রঃ বিবিসি বাংলা।

তথ্য প্রতিমন্ত্রীকে ‘ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ করার’ আহ্বান মির্জা ফখরুলের
খালেদা জিয়ার নাতনী ব্যারিস্টার জাইমা রহমানকে নিয়ে তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের করা মন্তব্যকে ‘হীন রাজনৈতিক দূরভিসন্ধিমুলক, নারী ও বর্ণবিদ্বেষী, বি”কৃত’ বলে উল্লেখ করেছেন বিএনপির মহাস’চিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সেই সঙ্গে অবিলম্বে তথ্য প্রতিমন্ত্রীকে বক্তব্য প্রত্যাহার করে জনসমক্ষে ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। সোমবার (৬ ডিসেম্বর) সকালে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ আহ্বান জানান।

দলের দফতর বিভাগ থেকে পাঠানো বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ‘অন্যথায় ভবি’ষ্যতে যথাসময়ে এর দাঁতভাঙ্গা জবাব দেওয়া হবে বলেও তিনি (বিএনপির মহাস’চিব) সুস্পষ্টভাবে হুঁ’শিয়ারি উচ্চারণ করেছেন।’ মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া স’রকারের তথ্য-প্রতিমন্ত্রীর একটি বি”কৃত এবং শিষ্টাচার বহির্ভূত নারী ও বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্যের তীব্র ঘৃণা ও ক্ষো’ভ প্রকাশ করেছেন। তিনি অবিলম্বে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব বহনকারী একজন ব্যক্তির এ ধরনের ঘৃণ্য ও কুরুচিপূর্ণ আচরণের প্রতিকার দাবি করেছেন।’

বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘ব্যক্তি হিসেবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী যে দুর্বলতার মানুষই হোক না কেন একজন জাতীয় পতাকাধারী ব্যক্তির এ ধরনের মনোবৈকল্য উৎসারিত বি”কৃতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া সমগ্র জাতিকে স্তম্ভিত করেছে।’

খালেদা জিয়া বর্তমান স’রকারের ‘প্রতিহিংসামুলক আচরণের শি’কার হয়ে’ এখন পর্যন্ত বিদেশে ‘সুচিকিৎসার সুযোগ না পেয়ে জীবন-মৃ’ত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছেন’ বলে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘ঠিক তেমন সময়ে তার পরিবারের একজন নারী সদস্য তথা পরিবারের বিভিন্ন জন সম্পর্কে এহেন অ’শ্লীল ঘৃণ্য অ’পপ্রচার ইতিমধ্যেই নারী নেতৃত্বসহ দেশের সচেতন সকল মহলের ঘৃণা কুড়িয়েছে।’