পু’লিশের এএসপি সেজে ত’রুণীদের ফাঁ’দে ফেলে গো’পনে ভিডিও করতেন তিনি

| আপডেট :  ৪ ডিসেম্বর ২০২১, ০৭:৩০ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৩ ডিসেম্বর ২০২১, ১১:৩১ অপরাহ্ণ

নিজেকে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) হিসেবে পরিচয় দিতেন গাজীপুরের যুবক রাজ আল আবির। ভুয়া এই পরিচয়ে ত’রুণীদের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করতেন তিনি। এরপর ঘনিষ্ঠ হয়ে গো’পনে ছবি ভিডিও করে প্র’তারণার মাধ্যমে টাকা আদায় করতেন। গত দেড় বছরে অন্তত ১০ জন ত’রুণীর পরিবারের কাছ থেকে তিনি কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

গত সোমবার ঢাকা মহানগর পুলিশের গো’য়েন্দা বিভাগের (ডি’বি) অ’ভিযানে আবির ধরা পড়ার পর এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে। ডি’বির একজন কর্মকর্তা জানান, আবিরের বাড়ি গাজীপুরের কালিয়াকৈরের নিশ্চিতপুর গ্রামে। একটি বেস’রকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেওয়ার কথা তিনি জি’জ্ঞাসাবাদে বলেছেন।

ডি’বি জানায়, লেখাপড়া শেষ করে চাকরির জন্য খুব একটা চেষ্টা করেননি আবির। একপর্যায়ে সিদ্ধান্ত নেন এএসপি পরিচয় দিয়ে কিছু করার। সাধারণ মানুষ নানা স’মস্যা নিয়ে প্রথমে পুলিশের কাছে যায়। এই সুযোগ নিয়ে প্র’তারণার মাধ্যমে টাকা আয়ের বি’ষয়টি তাঁর মাথায় আসে।

আবিরের প্র’তারণার শি’কার চট্টগ্রামের এক ব্যবসায়ীর মেয়ে প্রথম আলোকে জানান, গত বছরের আগস্টে ইমু অ্যাপের মাধ্যমে আবিরের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। এর সূত্র ধরে এক মাস পর তাঁকে ঢাকায় নিয়ে আসেন আবির। আইনজীবী পরিচয়ধারী এক ব্যক্তির বাসায় নেওয়া হয় তাঁকে। একটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে বলা হয়, তাঁদের বিয়ে হয়েছে। গাড়ি কেনার জন্য তাঁদের পরিবারের কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা নিয়েছেন আবির। এখন বুঝতে পারছেন তিনি প্র’তারণার শি’কার হয়েছেন।

ডি’বি জানায়, আবির পুরোনো একটি গাড়ি ব্যবহার করতেন। সেই গাড়িতে ‘পুলিশ’ স্টিকার লাগানো থাকত। সব সময় নিজের সঙ্গে পি’স্তলের মতো দেখতে একধরনের লাইটার রাখতেন তিনি। এ ছাড়া পুলিশের আচরণ, শরীরী ভাষা, কিছু আইনকানুন জানা—এসবও আয়ত্ত করেছেন।

রাজধানীর কাফরুলের পূর্ব শেওড়াপাড়ায় ১৫ হাজার টাকায় একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকতেন আবির। সেখানকার স্থানীয় লোকজন তাঁকে এএসপি হিসেবে জানতেন। যে ফ্ল্যাটে তিনি থাকতেন, সেখানে কিছুদিন পরপর স্ত্রী পরিচয়ে ত’রুণীদের নিয়ে আসতেন। একপর্যায়ে বি’ষয়টি নিয়ে স’ন্দেহ তৈরি হলে আশপাশের লোকজন তা ডি’বিকে জানান।

আবিরের প্র’তারণার শি’কার তিন ত’রুণীর বি’ষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য পেয়েছে ডি’বি। ওই তিন ত’রুণীর পরিবারের কাছ থেকে প্রায় ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। এর মধ্যে চট্টগ্রামের এক ত’রুণীর কাছ থেকে ৫ লাখ, কক্সবাজারের এক ত’রুণীর কাছ থেকে ৩ লাখ ও বরিশালের এক ত’রুণীর কাছ থেকে ২ লাখ টাকা নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে চট্টগ্রামের ত’রুণী খুলশী থানায় প্র’তারণার অ’ভিযোগ এনে গত মঙ্গলবার আবিরের বি’রুদ্ধে মা’মলা করেছেন।

ডি’বি আবিরের কাছ থেকে বিভিন্ন ব্যাংকের ৯টি এটিএম কার্ড ও এএসপি নামধারী ৩০টি ভিজিটিং কার্ড উ’দ্ধার করেছে। ডি’বির ওয়ারী বিভাগের সহকারী কমিশনার মাহফুজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, জি’জ্ঞাসাবাদে আবির বলেছেন, ত’রুণীদের ফাঁ’দে ফেলার পাশাপাশি মা’দক কারবারিদের ধরে এনে মা’মলার ভয় দেখাতেন তিনি। তাদের কাছ থেকেও টাকা আদায় করতেন।

জমি ও ফ্ল্যাটের বি’রোধ মেটানোর নাম করে কয়েকজনের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। আর এএসপি পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন দোকান থেকে বাকিতে পণ্য কিনতেন। বিভিন্ন আইনের বই পড়ে তিনি এ বি’ষয়ে পারদর্শিতা অর্জন করেন। তাঁর কাছ থেকে উ’দ্ধার হওয়া পি’স্তলসদৃশ লাইটার দেখতে আসল পি’স্তলের মতো। ওই পি’স্তল সঙ্গে নিয়ে তিনি চলাফেরা করতেন, মানুষকে ভ’য় দেখাতেন। সূত্রঃ প্রথম আলো