৩৮তম বিসিএসে প্রথম স্থান অধিকারী রুহুন আমিনের অনুপ্রেরণামূলক অসাধারণ লেখা

| আপডেট :  ৪ ডিসেম্বর ২০২০, ০২:১৮ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৪ ডিসেম্বর ২০২০, ০২:১৮ অপরাহ্ণ

৩৮তম বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে প্রথম স্থান অধিকারী জনাব মোঃ রুহুন আমিন শরিফের অনুপ্রেরণামূলক অসাধারণ একটি লেখা- আল্লাহর উপর ভরসা রাখুন। নিয়মিত প্রস্তুতি নিন। নিরাশ হবেন না। আমার প্রথম সরকারি চাকুরি বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে। চাকুরিটা ছিল চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকতা ও টিউশন করা থেকে হাঁফ ছেড়ে বাঁচার উপায়। এনটিআরসিএ-এর নিবন্ধন পাস

করা থাকলেও স্থায়ী ক্যারিয়ার এখানে তৈরির কোন ইচ্ছা ছিল না। তাই ব্যাংকের পোস্টিং দুর্গম দ্বীপে হলেও ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে যোগদান করেছিলাম। বাস্তব কর্ম অভিজ্ঞতা ছিল ভালো মন্দের মিশেল। বিসিএসের ফল প্রকাশ হলো। কাঙ্ক্ষিত প্রশাসন ক্যাডার পেলেই যেখানে পূর্ণ সন্তোষ সেখানে মহান আল্লাহর রহমতে মেধাতালিকায় প্রথম হয়ে গেলাম।

যা চাইলাম পেলাম তার চেয়ে বেশ বেশ বেশি। এর কয়েকদিন পরেই রূপালি ব্যাংক লিমিটেডে সিনিয়র অফিসার হিসেবে সুপারিশপ্রাপ্ত হলাম। বিসিএস রেজাল্ট না হলে এই ফলটি তীব্র স্বস্তি দিতে অতুলনীয় হত। অথচ অনুভবে তেমন আবেদনই তৈরি হলো না। সম্প্রতি কর্মসংস্থান ব্যাংকে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছি। স্বভাবই এই চাকুরিতেও যোগ দিচ্ছি না। ব্যাংকার্স সিলেকশন

কমিটির ওয়েবসাইট এক সময় দিনে কয়েকবার ব্রাউজ করতাম। এবার ফল জানলাম প্রকাশের ঠিক একমাস পর। এর মাঝে জনতা ও রূপালি ব্যাংকের লিখিত পরীক্ষার ফল ও ভাইভা সময়সূচী প্রকাশ হলো। ভাইভা দেয়ার যৌক্তিকতা বা ইচ্ছা ছিল না। তবে ঘটনা হলো, আমার জন্য ভাইভার নির্ধারিত তারিখ নভেম্বর মাসের ১৫ ছিল, আমি নোটিশটি দেখলাম কিনা নভেম্বরের

২৬ তারিখ। যোগদানের সময় উচ্চ উপযোগ থাকা কৃষি ব্যাংকের চাকুরিটাও গত ৩১ অক্টোবর হাসিমুখে ছেড়ে চলে এসেছি। আল্লাহ চাইলে কত অল্প সময়ের ব্যবধানে চাহিদা ও প্রয়োজনীয়তা বদলে যায়! আমাদের জীবনের গতিধারাই এমন। এক সময় যা খুব গুরুত্বপূর্ণ সময়ের আবর্তে তা পুরো গুরুত্বহীন হয়ে উঠে। ক্ষেত্র বিশেষে ঘটে বিপরীত কিছুও। আমরা যা পাওয়ার জন্য

আকাঙ্ক্ষিত, সৃষ্টিকর্তা হয়ত তারচেয়ে আরো বড় কিছু দেয়ার পরিকল্পনা করে রেখেছেন। কখনও হয়ত নির্ধারিত রয়েছে অপ্রত্যাশিত হতাশা। পৃথিবীতে মানুষের অর্জনগুলো পরিশ্রমেরই সুস্পষ্ট ফল। কাকতালীয়ভাবে যা ঘটে তা চিরন্তন দৃষ্টান্ত নয়। তাই অধ্যবসায়, ধৈর্য ও সাধনার মাধ্যমেই সাফল্যকে চাইতে হবে। হতাশা, অবসাদ ও আবেগজনিত দুর্বলতায় ভালো কিছুই

জুটবে না। জীবন গড়তে আত্মবিশ্বাস ও অবিরাম প্রচেষ্টার বিকল্প নেই। সফলতার কোন সংক্ষিপ্ত পথ নেই। বিশ্বাস রাখুন, আল্লাহ পরিশ্রমীদের কখনই চূড়ান্তভাবে হতাশ করেন না। তিনি যখন দেন তখন এত বেশি দেন যে প্রাপ্তি প্রত্যাশাকে ছাড়িয়ে যায়।