সেই উপজেলা চেয়ারম্যানের বিচার চাইলেন তরুণীর বাবা (ভিডিও)

| আপডেট :  ২০ নভেম্বর ২০২১, ০১:০৮ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২০ নভেম্বর ২০২১, ০১:০৮ অপরাহ্ণ

অফিস কক্ষে এক তরুণীর সঙ্গে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদেরের একটি আপত্তিকর কর্মকাণ্ডের ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। দিনে দুপুরে নিজ কার্যালয়ে চেয়ারম্যানের এমন অনৈতিক কার্যকলাপের বিষয়টি ব্যাপক চাঞ্চল্য ও প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। ওই ঘটনার ভিডিও এখন ভাইরাল নেট দুনিয়ায়।

ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর বিপাকে পড়েছে ওই তরুণীর পরিবার। তাদের অভিযোগ, উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছ থেকে শিক্ষাবিষয়ক আর্থিক অনুদানের জন্য গিয়েছিলেন ওই তরুণী। উপজেলা চেয়ারম্যান কাদের তাকে প্রলোভন দেখিয়ে ফাঁদে ফেলে শ্লী’লতাহানী করেছেন। তরুণীর বাবা বলেন, মেয়ের বাবা হিসেবে উপজেলা চেয়ারম্যানের সঠিক বিচার চাই।

সাধারণ মানুষ তো বটেই, দলের নেতাকর্মীরাও আবদুল কাদেরের এমন কর্মকাণ্ডে বিস্মিত, ক্ষুব্ধ। এই জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতা। বিষয়টি নিয়ে আব্দুল কাদেরের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কার্যালয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ভিডিও দেখতে ক্লিক করুণ এখানে

ইউপি মেম্বার হয়েই শত কোটি টাকার মালিক রাসেল
ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) মেম্বার নির্বাচিত হয়ে মাত্র ১০ বছরে বিস্ময়কর উত্থান হয়েছে রাসেল মিয়ার। ঢাকার অদূরে কেরানীগঞ্জের কোন্ডা ইউপির ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার তিনি। দরিদ্র পরিবারের সন্তান রাসেল এখন চলেন বিলাসবহুল গাড়িতে। তার আছে চোখ ধাঁধানো বাগানবাড়ি, যেখানে নিয়মিত বসান মদ ও জুয়ার আসর। ১৮টি ব্যাংক হিসাবে অন্তত ১০ কোটি টাকা জমা থাকার তথ্যও মিলেছে। মালিক হয়েছেন ৬টি ইটভাটা ও ২টি ডকইয়ার্ডের। দুুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) জমা পড়া অভিযোগে তার বিরুদ্ধে এসব তথ্য উত্থাপন করা হয়েছে। ১৩ ও ৩১ অক্টোবর দুদকে রাসেলের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি অভিযোগের চিঠি জমা দিয়েছেন মোকাররম হোসেন নামে এক ব্যক্তি।

সেখানে রাসেলের দুর্নীতি, জবরদখল ও অনিয়মের মাধ্যমে শতকোটি টাকার সম্পদ অর্জনের বিবরণ তুলে ধরে অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে রাসেল মিয়া বলেন, ‘একটি মহল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। দুদকে দেওয়া অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’

অভিযোগে বলা হয়, রাসেল মিয়া ছিলেন দরিদ্র পরিবারের সন্তান। কিন্তু ২০১১ সালে এলাকার ইউপি সদস্য হওয়ার পর ভূমি জবরদখল ও জাল-জালিয়াতির কারবার শুরু করেন। আর এর মাধ্যমে বনে যান শতকোটি টাকার মালিক। সাধারণ মানুষের জমি দখল, চাঁদাবাজি, অন্যের জমি থেকে জোর করে মাটি কেটে বিক্রি করা তার পেশা। আয়ের বৈধ তেমন কোনো উৎস না থাকলেও গত ১১ বছরে রাসেল বিপুল স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন। তার ভাই হাবিবুর রহমান রানা ও মোস্তাক আহম্মদ রাজুকে সঙ্গে নিয়ে ভাই ভাই ব্রিকস নামে নিজ এলাকায় ৬টি ইটভাটা দিয়েছেন।

আরও আছে ভাই ভাই ডকইয়ার্ড ও রাসেল ট্রেডার্স নামে দুটি ডকইয়ার্ড। এর বাইরে প্রায় ৫০টি দলিলে অন্তত ১ হাজার শতাংশ জমি নিজ নামে রেজিস্ট্রেশন করেছেন। এসব জমির রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ খরচ করেছেন অন্তত ১০ কোটি টাকা। পূবালী ব্যাংকের ধর্মগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জ শাখাসহ বিভিন্ন ব্যাংকের ১৮টি হিসাবে বাবা, ভাই ও রাসেলের নিজ নামে গচ্ছিত রয়েছে ১০ কোটি টাকা। বিপুল অঙ্কের টাকা পাচার করেছেন মালয়েশিয়া ও দুবাইয়ে। সেখানে সেকেন্ড হোম গড়ার খবরও চাউর রয়েছে এলাকায় লোকমুখে।

রাসেলের আয়কর বিবরণীতে সম্পদ ও আয়ের তথ্য গোপন করা হয়েছে উল্লেখ করে অভিযোগে বলা হয়, জমি ক্রয়ে মৌজার সরকারি মূল্য হিসাবে রাসেলের নামে রেজিস্ট্রেশন হওয়া জমির দাম প্রায় ৩০ কোটি টাকা। বিভিন্ন ব্যবসা ও অন্যান্য সম্পদসহ রাসেল শতকোটি টাকার মালিক হলেও সর্বশেষ জমা দেওয়া আয়কর রিটার্নে মাত্র ৩৫ লাখ ৪৫ হাজার টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের মালিক বলে উল্লেখ করা হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) খোঁজ নিলে জানা যায়, ২০২০-২১ করবর্ষে রাসেল মিয়া কর অঞ্চল-৪-এর ৮৪ নম্বর সার্কেলে আয়কর রিটার্ন দাখিল করেন।