‘রাখে আল্লাহ মারে কে’ খ্যাত অভিনেতা রাজীবের চলে যাওয়ার ১৭বছর

| আপডেট :  ১৪ নভেম্বর ২০২১, ১১:১৮ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১৪ নভেম্বর ২০২১, ১১:১৮ পূর্বাহ্ণ

শক্তিমান অভিনেতা তিনি। সিনেমার পর্দায় নেতিবাচক চরিত্রেই বেশি দেখা গেছে। তার বাঘের মতো সংলাপ পর্দায় কাঁপন ধরাতো। তার ভয়ঙ্কর সব অঙ্গভঙ্গির ভয় দেখিয়ে বাচ্চাদের ঘুম পাড়িয়েছেন এ দেশের বহু মা। সিনেমায় কুটবুদ্ধি, প্রতিপক্ষকে শক্তিশালী মোকাবিলায় ঘায়েল করতে জুড়ি ছিলো না তার। অভিনয়ে যেমন ছিলেন দুর্দান্ত, তেমনি তার বাচনভঙ্গি, এক্সপ্রেশনও ছিলো যে কোনো অভিনেতার জন্য ঈর্ষনীয়।

বলছি ওয়াসীমুল বারী রাজীবের কথা। যিনি খলনায়ক চরিত্রকে দর্শকের কাছে ভিন্ন এক উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। আজ এই অভিনেতার ১৭তম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০০৪ সালের এইদিনে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে অসংখ্য ভক্তকে কাঁদিয়ে মৃত্যুবরণ করেন রাজিব। তবে অভিনেতা হিসেবে তিনি এখনো মানুষের হৃদয়ে রয়েছেন। ১৯৮১ সালে ‘রাখে আল্লাহ মারে কে’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে রাজীব রূপালি পর্দায় পা রাখেন। এরপর কাজী হায়াতের ‘খোকন সোনা’ সিনেমার মাধ্যমে তারকাখ্যাতি পান।

রাজীব দুই শতাধিক বাংলা চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। তার উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে- উছিলা, মিয়া ভাই, সত্য মিথ্যা, বীরাঙ্গনা সখিনা, হুমকি, মা মাটি দেশ, প্রেম প্রতিজ্ঞা, দাঙ্গা, ত্রাস, দুর্নীতিবাজ, প্রেম দিওয়ানা, টাকার অহংকার, মৃত্যুদণ্ড, বন্ধন, চাঁদাবাজ, মীরজাফর, মিথ্যার রাজা, বেনাম বাদশা, আখেরি রাস্তা, বিদ্রোহী কন্যা, ক্ষমা, জবরদখল, প্রিয় তুমি, বিক্ষোভ, খলনায়ক, দেশদ্রোহী, লুটতরাজ, ভণ্ড, হাঙর নদী গ্রেনেড, ভাত দে, সত্যের মৃত্যু নেই, স্বপ্নের পৃথিবী, মগের মুল্লুক ও স্বপ্নের বাসর প্রভৃতি।

শ্রেষ্ট পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে চারবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। ছবিগুলো হলো- হীরামতি (১৯৮৮), দাঙ্গা (১৯৯১), বিদ্রোহ চারিদিকে (২০০০) ও সাহসী মানুষ চাই (২০০৩)। রাজীব চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সংস্থা ও সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের নাম ফ্রেন্ডস মুভিজ। বিএফডিসির ব্যবস্থাপক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। এ ছাড়া জাতীয়তাবাদী চলচ্চিত্র পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। সিনেমায় অভিনয় শুরুর আগে তিতাস গ্যাস কোম্পানিতে চাকরি করতেন রাজীব।

প্রসঙ্গত, অভিনেতা রাজীব; মৃত্যুর ১৭ বছর পেরিয়েও এতটুকু ম্লান হননি শ্রদ্ধা ও স্মরণের জায়গায়। মিডিয়ার গ্ল্যামার আর কর্পোরেট বাণিজ্যে তার চাহিদা না থাকলেও তিনি থেকে যাবেন ঢাকাই সিনেমার কয়েক প্রজন্মের দর্শকের মনে, চলচ্চিত্রের সবখানে। মাত্র ৫২ বছরেই জীবন প্রদীপ নিভে যাওয়া এই কিংবদন্তির প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি।