ঋণ পরিশোধ না করলে মহানবী (সা.)-এর কঠোর হুঁশিয়ারি

| আপডেট :  ১২ নভেম্বর ২০২১, ০৮:৪০ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১২ নভেম্বর ২০২১, ০৮:৪০ অপরাহ্ণ

জাগতিক প্রয়োজনে মানুষ মানুষের কাছ থেকে ঋণ গ্রহণ করে থাকে। প্রয়োজন পূরণ হলে তা পরিশোধ করা হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রেও দুটি শ্রেণি আছে। এক শ্রেণির মানুষ ঋণ গ্রহণ করে পরিশোধের মানসিকতা নিয়ে। আরেক শ্রেণির মানুষ ঋণ গ্রহণ করে পরিশোধ না করার মানসিকতা নিয়ে। অন্যদিকে বিপদগ্রস্ত হয়ে কেউ ঋণ করে। আবার কেউ প্রাচুর্যশীল হওয়ার জন্য ঋণ করে। আবার কেউ প্রতিবেশী বা অন্য কোনো পরিচিতজনের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে গাড়ি, বাড়ি ও আসবাব ক্রয়ের জন্য ঋণ করে।

ঋণ গ্রহণ যেন আজকাল অত্যন্ত সাধারণ ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। ঋণ পরিশোধ না করার পরিণতি সম্পর্কে আমরা যেন মোটেই ওয়াকিফহাল না। অথচ ইসলামে ঋণ গ্রহণ ও পরিশোধের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছে। নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি পরিশোধের নিয়তে মানুষের সম্পদ গ্রহণ করে, আল্লাহ তাআলা তার পক্ষ থেকে তা পরিশোধ করে দেন। আর যে তা বিনষ্ট করার নিয়তে গ্রহণ করে থাকে, আল্লাহ তাকে বিনষ্ট করে দেন।’ (বুখারি, হাদিস : ২৯১০)

রাসুল (সা.) বলেন, ‘ঋণ পরিশোধ করা ছাড়া মৃত্যুবরণ করলে হাশরের মাঠে নিজের নেকি থেকে ঋণের দাবি পূরণ করতে হবে।’ (বুখারি, হাদিস : ২৪৪৯) নবী করিম (সা.) বলেন, ‘মুমিনের আত্মা ঝুলন্ত অবস্থায় রাখা হয় তার ঋণের কারণে, যতক্ষণ না তার পক্ষ থেকে ঋণ পরিশোধ করা হয়।’ (তিরমিজি, হাদিস : ১০৭৮)

অন্যত্র তিনি বলেন, ‘সুবহানাল্লাহ! ঋণ প্রসঙ্গে কী কঠোর বাণীই না আল্লাহ অবতীর্ণ করেছেন। যার হাতে আমার জীবন তাঁর শপথ, ঋণগ্রস্ত অবস্থায় কেউ যদি আল্লাহর পথে শহীদ হয়, তারপর জীবিত হয়, তারপর শহীদ হয়, তারপর জীবিত হয়, তারপর আবার শহীদ হয়, তবু ঋণ পরিশোধ না করা পর্যন্ত সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না।’ (নাসাঈ, হাদিস : ৪৬৮৪)

সুতরাং আমাদের উচিত আখিরাতে মুক্তির স্বার্থে ঋণ পরিশোধের জন্য সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাওয়া এবং মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করা। ঋণমুক্তির দোয়া হচ্ছে, ‘আল্লা-হুম্মাকফিনি বিহালা-লিকা আন হারা-মিকা ওয়া আগনিনি বিফাদলিকা আম্মান সিওয়া-ক।’ অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আপনি আমাকে হারাম ছাড়া হালাল দ্বারা যথেষ্ট করুন এবং আপনার অনুগ্রহ দ্বারা আমাকে অন্যদের থেকে মুখাপেক্ষীহীন করুন!’

রাসুল (সা.) বলেন, ‘এই দোয়ার ফলে পাহাড় পরিমাণ ঋণ থাকলেও আল্লাহ তার ঋণমুক্তির ব্যবস্থা করে দেবেন।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৩৫৬৩) তাই কোনোভাবেই ঋণ পরিশোধ সম্ভব না হলে ঋণদাতার কাছ থেকে ক্ষমা করিয়ে নিতে হবে অথবা দায়িত্বশীল ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, সংস্থা বা সংগঠনের শরণাপন্ন হয়ে ঋণ মওকুফ বা পরিশোধের ব্যবস্থা করতে হবে। কোনোভাবেই ঋণ এড়িয়ে যাওয়া যাবে না।