সব
দেশীয় পণ্য উৎপাদনের কথা বলা মিনিস্টার মাইওয়ানের আদতে ফ্রিজ তৈরির কোনো যন্ত্রপাতিই নেই। এমনকি তারা এসব যন্ত্রপাতি কখনো আমদানিই করেনি বলে জানিয়েছে এনবিআরের তদন্ত কমিটি। বিমার দাবিতে করা সম্পদের তথ্যের সাথে আগুনে পুড়ে যাওয়া ভবনের ছয় তলার গোডাউনের ভিডিও ফুটেজের রয়েছে অসংগতি।
২০১৯ সালের ১৩ই সেপ্টেম্বর সকাল ৬টায় গাজীপুরের ধীরাশ্রমে মিনিস্টার মাইওয়ানের কারখানার ৬তলার গোডাউনে আগুন লাগে। আগুনের কারণে ক্ষতিপূরণ বাবদ ১শ’ কোটি টাকা বিমা দাবি করে প্রতিষ্ঠানটি। সেই দাবি মেটাতে গিয়ে তদন্ত মেলে মিনিস্টার মাইওয়ানের প্রতারণার তথ্য।
আগুনের কয়েক মাস আগে, মিনিস্টারের কারখানায় অভিযান চালায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মূসক ও শুল্ক গোয়েন্দরা। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, ফ্রীজ ও রেফ্রিজারেট উৎপাদনের জন্য দরকারি ১৪ ধরনের ভারী যন্ত্রপাতির একটিও পাওয়া যায়নি ওই কারখানায়। এমনকী এসব যন্ত্র কখনও আমদানিই করেনি কোম্পানিটি। তাই দেশীয় পণ্য উৎপাদনের কথা বলে শুল্কমুক্ত সুবিধা নেয়ায় ৭ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়।
এছাড়াও বিমার দাবিতে পুড়ে যাওয়া ফ্লোরের যে সম্পদ বিবরণী দেয়া হয়েছে তারও কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি। ফ্রিজের কারখানার গোডাউনে পাওয়া যায় গ্যাসের চুলা ও টেবিল ফ্যানের স্তুপ। বিমা কোম্পানির পক্ষ থেকে দফায় দফায় রেজিস্টার বইসহ প্রয়োজনীয় কাগজ চাওয়া হলেও তা নির্ধারিত সময়ে দেয়নি মিনিস্টার মাইওয়ান।
সাধারণ বিমার সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলছেন, বিমা করার সময় যেসব পণ্যের ঘোষণা দেয়া হয়নি তার ক্ষতিপূরণ দাবি করা বেআইনি। সাধারণ বীমা কর্পোরেশনের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক রেজাউল করিম বলেন,’যদি বেআইনি কিছু করা হয় তবে সেক্ষেত্রে তো ক্লেম পে এবল অবশ্যই না। এটি ভায়োলেশন অব কন্ডিশন অবশ্যই না।
এদিকে বিশ্লেষকরা বলেছেন, প্রতিষ্ঠানটির বিমাকারীদেরকেও জবাবদিহিতার আওতায় আনা উচিত। বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ সাবেক সদস্য নুরুল ইসলাম মোল্লা বলেন, ‘যে এজেন্ট বিমা করাচ্ছেন তার দায়িত্ব সম্পূর্ণ তথ্য বুঝে নেয়া। কারণ এটাই যে কাল বিমা দাবি হবে না! সেটা তো বলা যায় না।’ সূত্রঃ ডিবিসি নিউজ