আমরা ক্ষেপলে সরকারের চেয়ার থাকে না; আপনি তো দুই পয়সার উপজেলা চেয়ারম্যান

| আপডেট :  ১৬ নভেম্বর ২০২০, ০৪:৩৩ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১৬ নভেম্বর ২০২০, ০৪:৩৩ পূর্বাহ্ণ

লালমনিরহাটে উপজেলা চেয়ারম্যান এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পরষ্পরের বিরুদ্ধে দুর্নীতি এবং হুমকি প্রদানের অভিযোগ করেছেন। এদের মধ্যে আদিতমারী উপজেলা চেয়ারম্যান ফারুক ইমরুল কায়েস ইউএনওর বিরুদ্ধে তার অভিযোগসমূহ তুলে ধরতে রবিবার বিকেলে স্টেশন এলাকার তার নিজ বাসভবনে একটি সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে ফারুক দাবি করেন উপজেলা পরিষদের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মনসুর উদ্দিন তাকে হুমকি দিয়ে বলেছেন, “উপজেলা কি বাপ-দাদার পৈত্রিক সম্পত্তি মনে করেন মিয়া? এখানে ঘাস খেয়ে আসিনি। পাঁচ বছরের জন্য চেয়ারম্যান হয়ে ভাব দেখান নাকি? একবার আমরা ক্ষেপলে সরকারের চেয়ার থাকে না আপনি তো দুই পয়সার উপজেলা চেয়ারম্যান।” এছাড়া ইউএনও তাকে মোবাইল কোর্টের ভয় দেখিয়েছেন বলেও দাবি করেন ফারুক।

সংবাদ সম্মেলনে ফারুক বলেন, মনসুর উদ্দিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে যোগদানের পর উপজেলাকে দুর্নীতির আখড়া বানিয়েছেন। সকল কাজেই উৎকোচ আদায় করেন তিনি। হাট-বাজারের ইজারার ২০ শতাংশ টাকা ইউনিয়ন পরিষদের উন্নয়নমূলক কাজে ব্যয় করার নিয়ম থাকলেও সেই টাকা তহবিলে রেখে পরে মোট টাকার ১০ শতাংশ টাকা কমিশন নিয়ে ছাড় করেন তিনি। এছাড়া, প্রত্যেকটি উন্নয়ন কাজে নিজের পছন্দসই ঠিকাদার নিয়োগ ও কোন কোন কাজের ঠিকাদারি নিজেই করেন। তার অনিয়ম দুর্নীতিতে ঠিকাদার, ইউপি চেয়ারম্যান, অধ:স্তন কর্মকর্তারা অতিষ্ট হয়ে উঠেছেন। কিন্তু ভয়ে কেউ-ই মুখ খোলার সাহস পাচ্ছেন না।

তবে এসকল অভিযোগ অস্বীকার করে চেয়ারম্যান ফারুকের বিরুদ্ধে হুমকি প্রদানের অভিযোগ করেছেন ইউএনও মনসুর আহমেদ। গত বৃহস্পতিবার অশোভন-অপেশাদার, উচ্ছৃঙ্খল আচরণ ও মারপিটের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ তুলে উপজেলা চেয়ারম্যান ফারুক ইমরুল কায়েসের বিরুদ্ধে অধঃস্তন ১৮ কর্মকর্তার পক্ষে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ইউএনও মনসুর উদ্দিন। অভিযোগে ইউএনও উল্লেখ করেন, মাসিক সমন্বয় সভায় ভিজিডি ও মাতৃত্ব ভাতার তালিকায় নিজের অংশ দাবি করেন উপজেলা চেয়ারম্যান। যা বিধি সম্মত না হওয়ায় ইউএনও নাকোচ করে দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সভা অসমাপ্ত রেখে চলে যান চেয়ারম্যান। এরপর চেয়ারম্যান ইউএনও অফিসের সিসিটিভি ক্যামেরা লোক দিয়ে খুলতে গেলে তার ছবি তোলেন ইউএনও। একইসঙ্গে ক্যামেরা খুলে ফেলার কারণ জানতে চান। এসময় চেয়ারম্যান ইউএনওকে অশ্রাব্য ভাষায় গালমন্দ করে
বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

এদিকে., গত বৃহস্পতিবার অশোভন-অপেশাদার, উচ্ছৃঙ্খল আচরণ ও মারপিটের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ তুলে উপজেলা চেয়ারম্যান ফারুক ইমরুল কায়েসের বিরুদ্ধে অধঃস্তন ১৮ কর্মকর্তার পক্ষে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন ইউএনও মনসুর উদ্দিন।

অভিযোগে উল্লেখ করেন, মাসিক সমন্বয় সভায় ভিজিডি ও মাতৃত্ব ভাতার তালিকায় নিজের অংশ দাবি করেছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান। কিন্তু এটি বিধি সম্মত না হওয়ায় ইউএনও নাকোচ করে দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সভা অসমাপ্ত রেখে চলে যান চেয়ারম্যান এবং যাওয়ার সময়ে চেয়ারম্যান ইউএনও অফিসের সিসিটিভি ক্যামেরা লোক দিয়ে খুলতে গেলে তার ছবি তোলেন ইউএনও এবং একইসাথে ক্যামেরা খুলে ফেলার কারণ জানতে চান। এসময় চেয়ারম্যান ইউএনওকে অশ্রাব্য ভাষায় গালমন্দ করেন।

এছাড়া, উপজেলা চেয়ারম্যান ফারুক ইমরুল কায়েস ইউএনওকে হত্যার হুমকি দিয়েছে অভিযোগ তুলে আজ (সোমবার) একটি সাধারণ ডায়েরীও করেছেন ইউএনও মনসুর উদ্দিন। পাশাপাশি পরিষদের সরকারী চেক বইয়ের ১৯টি পাতা ছিড়ে ফেলার অভিযোগ এনে ইউএনওর সুপারিশে সাঁট-মুদ্রাক্ষরিক কাম-কম্পিউটার অপারেটর হাবিবুর রহমানের একটি আবেদন থানায় সাধারণ ডায়েরিভূক্ত করা হয়েছে।

তবে ইউএনওর সকল অভিযোগ অস্বীকার করে চেয়ারম্যান ফারুক বলেন, ইউএনও এর দুর্নীতির প্রতিবাদ করাতেই ইউএনও তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে অন্যান্য দপ্তর প্রধানদের উষ্কে দিয়ে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট, কাল্পনিক অভিযোগ দিয়েছে করছে।

প্রসঙ্গত, লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর এর নির্দেশে বর্তমানে দুপক্ষেরই অভিযোগ তদন্ত করছে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক রফিকুল ইসলাম।