সব
প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও বিমানবালা তামিমা সুলতানা তাম্মীর বিয়ে আইনগতভাবে অবৈধ। আর আদালতেও বিষয়টি প্রমাণ করতে এবং অভিযুক্তদের শাস্তি নিশ্চিত করতে শেষ পর্যন্ত লড়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন মামলার বাদি রাকিব হাসানের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান।
তিনি বলেন, আদালতে আমরা আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানার আবেদন করেছিলাম। আদালত তাদেরকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত সময় দিয়েছেন স্বেচ্ছায় হাজির হওয়ার জন্য। আসামিরা আদালতে হাজির হলে আমরা তাদেরকে গ্রেফতারের দাবি জানাবো।
এক প্রশ্নের জবাবে ইশরাত হাসান বলেন, ক্রিকেটার নাসির হোসেন যদি প্রতারণার শিকার হয়ে থাকেন তাহলে তিনি আইনের আশ্রয় নিতে পারতেন। এখনো তার সুযোগ আছে যে তার সাথে প্রতারণা করা হয়েছে কি না, এ ব্যাপারে তদন্ত চেয়ে আইনের আশ্রয় নিতে পারেন। তাহলে হয়তো মামলার শাস্তি থেকে তিনি রক্ষা পেতে পারেন। কিন্তু তিনি তো বলেছেন, আমি সবকিছু জেনেশুনে তামিমাকে বিয়ে করেছি। এর অর্থ দাঁড়ায়, তামিমা রাকিবের স্ত্রী এবং তালাকের নামে যে জাল-জালিয়াতি করা হয়েছে তা তিনি (নাসির) জানতেন। তামিমা অন্যের স্ত্রী থাকা অবস্থায় বিয়ে করেছেন নাসির। কাজেই আইন অনুযায়ী তারা দুজনেই অপরাধী। দণ্ডবিধির ৪৬৮, ৪৭১, ৪৯৪, ৪৯৭, ৫০০ ও ৩৫ ধারা অনুযায়ী যা শাস্তিযোগ্য।
তিনি আরও বলেন, তামিমার মা সুমি আক্তার তাদেরকে এই অপরাধে সহযোগিতা করায় তিনিও সমানভাবে অপরাধী। তাছাড়া তালাকনামা জালিয়াতির সাথে তিনি সরাসরি সম্পৃক্ত। তিনিও দণ্ডবিধির ওই ধারাগুলো অনুযায়ী সমান শাস্তি পাওয়ার যোগ্য।
আইনজীবী ইশরাত হাসান জানান, তামিমার দাবি অনুযায়ী তার প্রথম স্বামী রাকিব হাসানকে তালাক দেয়ার পরও তার সাথে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে লা-মেরিডিয়ান হোটেলে এক রুমে ছিলেন। সঙ্গত কারণেই তার তালাকের দাবি অসত্য। তদন্ত প্রতিবেদনে রাকিব হাসান ও তামিমার ২০২০ সালে একসাথে থাকার সত্যতা পাওয়া গেছে। যেখানে তামিমা দাবি করেছেন, ২০১৭ সালে তালাক কার্যকর হয়েছে। এটা কী করে সম্ভব? কাজেই তামিমা একজনের স্ত্রী থাকা অবস্থায় বাংলাদেশের প্রচলিত আইন ও ধর্মীয় বিধান উপেক্ষা করে নাসিরকে বিয়ে করতে পারেন না।
তবে তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, তামিমার তালাক জালিয়াতির সাথে সংশ্লিষ্ট কাজী খলিলুর রহমানের সম্পৃক্ততা রয়েছে। আইন অনুযায়ী তিনি এর দায় এড়াতে পারেন না। যদিও মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে তামিমার মা সুমিকে আসামি করা হলেও তালাকের সাথে সংশ্লিষ্ট কাজীকে আসামি করা হয়নি। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান বলেন, তালাকের সাথে সংশ্লিষ্ট কাজী দাবি করেছেন যে এটি তার সহকারী করেছে। কিন্তু এটা ঠিক যে তিনি সরকারের লাইসেন্সপ্রাপ্ত কাজী হিসেবে তার ওপরও এর দায় বর্তায়।
প্রসঙ্গত, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি তামিমা হোসেন তাম্মিকে বিয়ে করেন ক্রিকেটার নাসির হোসেন। এরপরই সামনে আসে তামিমার প্রথম বিয়ের বিষয়টি। পরবর্তীতে তামিমার বিরুদ্ধে মামলা করেন তামিমার প্রথম স্বামী রাকিব হাসান।