কুলি থেকে ‘ব্রেকফাস্ট কিং’, মুস্তাফার বছরে আয় ৩০০ কোটি

| আপডেট :  ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১১:০৯ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১১:০৯ অপরাহ্ণ

স্কুল থেকে ফেরার পথে বাবার সঙ্গে কুলির কাজ করতো মুস্তাফা। স্কুলব্যাগ নামিয়ে পিঠে তুলে নিতেন ভারী কাঠের বাক্স। কিন্তু সন্ধ্যায় পড়তে বসলেই ঘুম চলে আসতো। ষষ্ঠ শ্রেণিতে রীতিমত ফেল করেছিলেন এই সফল উদ্যোক্তা। সেই মুস্তফার কোম্পানি এখন বছরে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা আয় করে। ‘ব্রেকফাস্ট কিং’ নামেও বেশ পরিচিতি তার।

মুস্তাফা প্রতিষ্ঠা করেছেন একটি খাবারের কোম্পানি। তার কোম্পানি ভারতীয়দের খাবার ইডলি-দোসার প্রস্তুত করে। শুরুতে নিজ এলাকায় দিনে ৫০ প্যাকেট উপকরণ বিক্রি করতেন। এখন প্রতি দিন সারাদেশে কয়েক হাজার প্যাকেট সরবরাহ করে তারা।

তবে মুস্তাফার এই সাফল্য সহজে আসেনি। কঠোর পরিশ্রম, সঠিক সুযোগ আর প্রবল ইচ্ছাশক্তি তাকে এই অবস্থানে পৌঁছাতে সাহায্য করেছে বলে মনে করেন তিনি। আজ বহু মানুষের খাবার সরবরাহ করে মুস্তাফার কোম্পানি। অথচ এমনও অনেক দিন গেছে এক বেলা খাবার জুটত না মুস্তাফার। অভুক্ত অবস্থায়ই রাতে ঘুমিয়েছেন পরিবারের সবাই।

ষষ্ঠ শ্রেণীতে ফেল করার পর মুস্তাফা পরিশ্রম আরও বাড়িয়ে দেয়। কঠোর পরিশ্রমেই সাফল্য প্রথম সাফল্য ধরা দেয় তার হাতে। পাঁচ বছর পর ক্লাস টেনের বোর্ড পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেন মুস্তাফা। আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায় তার। পড়াশোনার আরও মনোযোগ দেন। পড়াশোনার পাশাপাশি তখনও চলছিল রুটি-রুজির লড়াই। টানাপড়েনের মধ্যেই দ্বাদশ পেরিয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সুযোগ পান। চাকরি পান বহুজাতিক কোম্পানিতে।

বহুজাতিক কোম্পানির চাকরি, উচ্চ বেতন নিয়ে নিশ্চিন্তে জীবন কাটাতে পারতেন মুস্তাফা। কিন্তু সন্তুষ্ট হতে পারছিলেন না তিনি। চাকরি ছেড়ে নিজ দেশ ভারতে ফেরেন। ২০০৫ সালে সাড়ে পাঁচশো বর্গফুট একটি অফিসে শুরু হয় তার ব্যবসার কাজ। ১০ বছরের মধ্যে বছরে ১০০ কোটি আয় করতে শুরু করে মুস্তাফার ‘আইডি ফ্রেশ ফুড’।

যা পরের বছরই বেড়ে দাঁড়ায় ১৮২ কোটিতে। এখনও পর্যন্ত বার্ষিক আয় নিম্নমুখী হয়নি তার কোম্পানির। গত বছরে ২৯৪ কোটি টাকা আয় করেছে যা আগের বছরের ২৩৮ কোটির থেকে ২৩.৫ শতাংশ বেশি। তার এই সাফল্যের খবর ছড়িয়ে পড়েছে ভারতের বাহিরেও। জাতিসংঘে বক্তব্য রাখতে আমন্ত্রণ জানানো

হয়েছিল মুস্তাফাকে। তবে মুস্তাফা সবাইকে নিয়ে উন্নতির পথে যাওয়ায় বিশ্বাসী। দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে চেয়েছিলেন। কর্ম সংস্থান করতে চেয়েছিলেন। মুস্তাফার সংস্থার এখন কাজ করেন গ্রামীণ ভারতের হাজারেরও বেশি তরুণ। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।