রাজধানীতে আবাসিক হোটেল ব্যবসার আড়ালে রমরমা দেহব্যবসা-নারী পাচার (ভিডিও)

| আপডেট :  ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০১:২৪ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০১:১৬ অপরাহ্ণ

আবাসিক হোটেল ব্যবসার আড়ালে চাকরীপ্রার্থী অসহায় নারীদের জো’র করে আ’টকে রেখে দেহব্যবসা করতে বা’ধ্য করছে মানবপা’চারকারী সিন্ডিকেট। শুধু তাই নয়, চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে অসহায় নারীদের পার্শবর্তী দেশ ভারতেও পাঁচার করছে এ চ’ক্র। এসব ঘটনার সংশ্লিষ্টতায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়মিত অ’ভিযান ও মা’মলা হলেও, আইনকে যেন তোয়াক্কাই করে না প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। নিউজ টোয়েন্টিফোর বিশেষ অনুসন্ধানে উঠে এসেছে এমনই এক ভয়ঙ্কর অ’পরাধের চিত্র।

অভাবের তাড়নায় কাজ খুঁজতে যাত্রাবাড়ি এসেছিলেন স্বামী পরিত্যক্তা শিউলি। সেখানে পরিচয় হয় পা’চারকারী চ’ক্রের এক সদস্যর সঙ্গে। চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে চ’ক্রের সদস্য শিউলিকে বিক্রি করে দেন হোটেল প্রভাতীতে। জো’র করে আ’টকে রেখে কিছুদিন পর সুযোগ বুঝে শিউলিকে পা’চার করে দেয়া হয় ভারতে।

ভারতে পা’চারের শি’কার ভু’ক্তভোগী (দুইটা মেয়ে আছে। স্বামী চলে গেছে। অভাবের কারণে চাকরি খুঁজি। চাকরির লোভ দেখিয়ে …অমুক অমুক আমাদের ভারতে পাঁচার করে। আমরা ৮জন নারী সাতক্ষীরা দিয়ে রাতের আঁধারে বর্ডার পার হই। সেখান থেকে হায়দ্রাবাদে পাঠায়। খা’রাপ কাজ না করলে খুব অ’ত্যাচার করতো, পুলিশে ধরিয়ে দেয়ার ভয় দেখাত। পরে এক লোকের সহযোগীতায় বর্ডার পার হয়ে চলে আসি। এখন ভয়ে আমরা পালিয়ে থাকি। এই এলাকায় আর আসি না।)

যাত্রাবাড়ির সামিউল্লাহ প্লাজার ৪ তলায় অবস্থিত প্রভাতী আবাসিক হোটেল। বাইরে থেকে খুব সাধারণ মানের আবাসিক হোটেল মনে হলেও এই হোটেলকে ঘিরে মানবপা’চারকারীরা তৈরি করেছেন ভয়ঙ্কর এক ফাঁদ। শুধু ভু’ক্তভোগীর অ’ভিযোগেই নয়, বি’ষয়টির সত্যতা যাচাই করতে অনুসন্ধানে মাঠে নামে নিউজ টোয়েন্টিফোর।

ছদ্মবেশী পরিচয়ে দালালের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলে নিউজ টোয়েন্টিফোরের অনুসন্ধানী দল। হোটেলে প্রবেশ করতেই গো’পন ক্যামেরার চোখে ধরা পড়ে অপেক্ষমান বহু খদ্দের ও নারীদের আনাগোনা। খদ্দের বেশে এক নারীকে নিয়ে একটি রুমে প্রবেশ করে প্রতিবেদক। কিছুটা সখ্যতাও জমাতেই বেরিয়ে আসে পা’চারকারী সিন্ডিকে’টের ভয়ঙ্কর ফাঁ’দের গল্প!

এক নারী বলেন, আমি কাজের জন্য আসছিলাম। অফিসিয়াল কাজের কথা বলে নিয়ে আসছে। শিশির আছে, সাজ্জাদ আছে। আরও অনেকেই আছে যাদের নাম জানি না। আমাকে দিয়ে নোং’রা কাজ করায়। আমাকে এক রুমেই আ’টকে রাখা হয়েছে। আমাকে বের হতে দেয় না। আমি মুক্তি চাই। আমি বের হতে চাই। এখানে কতদিন? এইতো ১০-১৫ দিন ধরে ।

নিউজ টোয়েন্টিফোরের অনুসন্ধান বলছে, যাত্রাবাড়ির শহীদ ফারুক সড়কে অবস্থিত প্রভাতী ও পপুলার নামের দুইটি হোটেলের মালিক শিশির চৌধুরী মূলত মানবপা’চারকারী চ’ক্রের প্রধান হোতা। চলতি বছরের মে ও জুন মাসেই মানবপা’চার দ’মন আইনে পা’চারকারী সিন্ডিকে’টের ৬ জনের বি’রুদ্ধে যাত্রাবাড়ি থানায় মোট ৫টি মা’মলা দায়ের করে র‌্যা’ব।

মা’মলায় যুবতীতের জো’র পূর্বক আ’টকে রেখে যৌ’নবৃত্তির কাজে নিয়োজিত করার অ’ভিযোগ আনা হয়। চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে কিভাবে অভাবগ্রস্ত নারীদের টার্গেট করছে এসব চ’ক্র (সিআইডি) তবে এলিট ফোর্স র‌্যা’বে দাবি, অ’ভিযান চালিয়ে ইতিমধ্যে বেশ কিছু চ’ক্রকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। অ’ভিযান অব্যাহত আছে। চ’ক্রের কিছু সদস্যদের গ্রে’প্তার করা হয়েছে।

তবে এসব ঘটনায় ভু’ক্তভোগীদের অ’ভিযোগ, এত এত অ’ভিযান কিংবা মা’মলার পরেও আইনের ধরাছোয়ার বাইরেই থেকে যাচ্ছে মানব পা’চারকারীরা। এই চ’ক্রের কারণে আর কোন নারীর জীবন যেন ধংস্ব না হয়, এমন আশায় দিন গুনছেন ভু’ক্তভোগীররা।