কবর থেকে মরদেহ তুলে দাহ করা হলো শ্মশানে

| আপডেট :  ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১০:৩৮ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১০:৩৮ পূর্বাহ্ণ

মৃত্যুর তিন দিন পর এক ব্যক্তির মরদেহ কবর থেকে তুলে শ্মশানে দাহ করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে শেরপুরে। মৃত ওই ব্যক্তির নাম শান্ত চক্রবর্তী (৪৫)।

মরদেহটি শেরপুরের শেরী মহাশ্মশানে সৎকার করা হয়েছে। জানা গেছে, শান্ত চক্রবর্তী শেরপুর পৌর শহরের গৃর্দানারায়নপুর মহল্লার সমর চক্রবর্তীর ছেলে। গত ৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর শান্ত নিখোঁজ হন। পরে ৮ সেপ্টেম্বর সদর থানায় তার স্ত্রী রূপা চক্রবর্তী জিডি করেন। ওইদিন বিকেলে স্বজনরা ফেসবুকের মাধ্যমে জানতে পারেন- পার্শ্ববর্তী জেলা জামালপুর রেল ষ্টেশনের পাশ থেকে গুরুতর আহত শান্তকে উদ্ধার করে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করলে সে মারা যায়। পরে রেলওয়ে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করলে জানতে পারেন- অজ্ঞাত পরিচয় হিসেবে শান্ত’র মরদেহ স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে দাফন করা হয়েছে।

এরপর শান্ত চক্রবর্তীর ছেলে স্বরূপ চক্রবর্তীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে শনিবার (১১ সেপ্টেম্বর) শান্তর মরদেহ কবর থেকে তোলা হয়। এ সময় জামালপুরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। পরে একইদিন দুপুরে শেরপুরের পৌর শহরের শেরী মহাশ্মশানে মরদেহের সৎকার করা হয়।

মৃত শান্ত চক্রবর্তীর একমাত্র ছেলে কলেজছাত্র স্বরূপ চক্রবর্তী সোহম বলেন- দীর্ঘদিন ধরে তার বাবা জামালপুর শহরের রেলগেইট এলাকার লিলি মোটরস-এ ম্যানেজার পদে চাকরি করতেন। প্রায় ছয় মাস আগে ওই প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর তিনি শেরপুরেই থাকতেন। তিনি অভিযোগ করেন- ‌‘মরদেহ শনাক্তের জন্য অপেক্ষা না করে বা মরদেহ সংরক্ষণের ব্যবস্থা না করে বেওয়ারিশ হিসেবে দ্রুত দাফন করা হলো কেন? তার প্রশ্ন- আইনে আছে-অজ্ঞাত অথবা দুর্ঘটনায় মারা গেলে মরদেহ পুলিশ সুরত হাল করবে। তারপর ময়নাতদন্ত হবে। শুধু তাই নয়- শান্ত চক্রবর্তী একজন ব্রাহ্মণ। তার গলায় পৈতে আছে এবং তার খৎনা করানোও ছিল না। পুলিশ, চিকিৎসক, আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের একজন সদস্যের চোখেও কি এসব কিছু ধরা পড়েনি? দাফন-কাফনের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা গোসলের সময় অবশ্যই তা দেখার কথা। কিভাবে তাহলে তাকে দাফন করা হলো?’ বাবার মৃত্যুকে রহস্যজনক মৃত্যু বলে তিনি ঘটনার অধিকতর তদন্ত দাবি করেন এবং রেলওয়ে পুলিশের আচরণও রহস্যজনক বলে উল্লেখ করেন।

জামালপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সরকার আব্দুল্লাহ আল মামুন বাবু সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, আইনি প্রক্রিয়া শেষে ৩ দিন পর হিন্দু ব্যক্তির মরদেহ কবর থেকে তোলা হলো। এখানে ডিএনএ পরীক্ষার দরকার ছিল। তাই এটির কাজ সমাপ্ত করে শনিবার একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে লাশ তুলে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।