৯ সেপ্টেম্বর: আতঙ্কে অনেক মন্ত্রী-এমপি

| আপডেট :  ৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৯:৪৭ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৯:৪৭ পূর্বাহ্ণ

আগামী ৯ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। দীর্ঘ এক বছরের বেশি সময় পর এই কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। যদিও করোনার কারণে সীমিত আকারে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে তারপরও এই কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক আওয়ামী লীগের রাজনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, সরকারের কার্যক্রম, বিভিন্ন মন্ত্রী-এমপির কার্যক্রম, আওয়ামী লীগের অন্তঃকলহ ইত্যাদি বিষয়গুলো এই বৈঠকে ব্যাপকভাবে আলোচিত হবে। উল্লেখ্য যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্কে যাচ্ছেন। তাই তার যাওয়ার আগে এই বৈঠকটি নানাভাবেই গুরুত্বপূর্ণ। করোনার মধ্যেও এই বৈঠক ডাকা হয়েছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য।

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামের একজন সদস্য বলেছেন যে, তৃতীয় মেয়াদে সরকারের মেয়াদ অর্ধেকের বেশি সময় পার হয়েছে। কাজেই কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রম গুলো মূল্যায়ন করা হবে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এ সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছেন। কিন্তু ছোট ছোট কিছু কিছু বিচ্যুতির কারণে দুই-একজন মন্ত্রী এবং আমলার কারণে অনেকগুলো বিষয় নিয়ে অস্বস্তি তৈরি হয়েছে, সেই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে। কোন কোন মন্ত্রী দায়িত্ব পালনে যথাযথ ভূমিকা রাখতে পারছেন না, ব্যর্থ হচ্ছেন সেটিও এই কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে আলোচনা করা হবে।

কার্যনির্বাহী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন যে, বৈঠকে তারা কিছু কিছু মন্ত্রী পরিবর্তনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে সুপারিশ করবেন। এছাড়াও কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে আওয়ামী লীগের এমপিদের কার্যক্রম মূল্যায়ন করা হবে। গত আড়াই বছরে বিভিন্ন এমপির বিরুদ্ধে অনেক ধরনের অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে সংগঠনে কোন্দল সৃষ্টি, দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে মনোনয়ন দেওয়া এবং নানারকম কমিটিতে অনুপ্রবেশকারীদের ঢুকানো নিয়ে দলের মধ্যে তীব্র সমালোচনা হচ্ছে।

আর এই সমস্ত সমালোচনার প্রেক্ষিতেই কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে আলোচনা করা হতে পারে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে। এছাড়াও আওয়ামী লীগের সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অস্থিরতা, মতবিরোধ এবং দলীয় কোন্দল ইত্যাদি এবারের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে ব্যাপকভাবে আলোচিত হবে। আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র যে, বিভিন্ন জেলায় অভ্যন্তরীণ কোন্দল প্রকাশ্যে রূপ নিয়েছে, একপক্ষ অন্যপক্ষের বিরুদ্ধে মুখোমুখি অবস্থান নিচ্ছে।

এটি দলের জন্য কখনোই ইতিবাচক নয়, এই বিষয়টি কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে চুলচেরা বিশ্লেষণ করা হবে। যারা দলের স্বার্থের পরিপন্থী কাজ করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতি সুনির্দিষ্ট কিছু নির্দেশনা দেবেন বলেও ধারণা করা হচ্ছে। একাধিক সূত্র বলছে যে, আওয়ামী লীগ এই কার্যনির্বাহী কমিটির মাধ্যমে দুটি যাত্রা শুরু করবে। প্রথমত, আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হবে এই কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকের মাধ্যমে এবং যে সমস্ত এমপিরা যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করতে পাচ্ছেন না তাদের ব্যাপারে কি ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়া হবে সেটি আলোচিত হবে।

দ্বিতীয়ত, আওয়ামী লীগ একটি আগাম কাউন্সিল অধিবেশনে যেতে পারে এবং সে ব্যাপারে হয়তো আওয়ামী লীগ সভাপতি কোনো দিক-নির্দেশনা দেবে। তাই ৯ সেপ্টেম্বরে কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠককে ঘিরে অনেক মন্ত্রী-এমপি আতঙ্কে আছেন। এই বৈঠকে তাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন।