এক গ্রাম থেকেই ১৫ কোটি টাকা হাতিয়েছে ই-অরেঞ্জ

| আপডেট :  ৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০২:৫০ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০২:৫০ পূর্বাহ্ণ

বাংলা একাত্তর ডেস্কঃ দিনের পর দিন বেড়েই চলছে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্য। এখন শহরে ছোয়া লেগেছে এন্ড্রোয়েট মোবাইল ও ইন্টারনেটের, অনেকে ইন্টারনেট ব্যবহার করে আয় করছে বিদেশি মুদ্রা, তেমনি অনেক অসাদু মানুষ এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। বাংলাদেশ ইভ্যালি, ই-অরেঞ্জসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের প্রতারণায় গ্রাহকদের মধ্যে ই-কমার্স নিয়ে চরম আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে। বড় প্রতিষ্ঠান ছাড়াও ফেসবুককেন্দ্রিক শত শত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতিদিনই প্রতারণা করে যাচ্ছে।

অনলাইন ই-কমার্স জগতে বিনিয়োগ করে একই গ্রামের দুই শতাধিক গ্রাহক সর্বস্বান্ত হয়েছেন। ঘটনাটি হচ্ছে টাঙ্গাইলের সখীপুরের। এই গ্রামের মানুষকে দ্বিগুণ মুনাফা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রায় ১৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এই কোম্পানিটি।

উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের ইছাদিঘী গ্রামে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া যায়। এ ঘটনায় ওই গ্রামের ১০০ জন গ্রাহক ই-অরেঞ্জের বিরুদ্ধে ঢাকার গুলশান থানায় ও ভোক্তা অধিদপ্তরে অভিযোগ করেছেন। ওই গ্রামের কৃষক, দিনমজুর, ভ্যান চালক, প্রবাসী, প্রবাসীর স্ত্রী, চায়ের দোকানদারসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার কমপক্ষে দুই শত গ্রাহক ই-অরেঞ্জে বিনিয়োগ করেছেন। এদের প্রকৃত বিনিয়োগকৃত মূলধন প্রায় ১৫ কোটি টাকা। সে হিসেবে ই-অরেঞ্জের কাছে প্রায় ৩০ কোটি টাকার পণ্য পাওনা রয়েছেন তাদের।

ইছাদিঘী গ্রামের মোহাম্মদ আলী আজাদের ছেলে নাসিদুল ইসলাম প্রথমবার ই-অরেঞ্জে ৯১ হাজার টাকা করে ৬টি মোটরসাইকেল অর্ডার করেন। প্রতিটি মোটরসাইকেল ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা করে বিক্রি ভাউচারের মাধ্যমে ৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা উত্তোলন করেন। কিন্তু এবার তার ধরা ১৮ লাখ টাকা।

পাঁচ বছর আগে জাহানারা বেগমের স্বামী মারা গেছেন। কলাবাগানে শ্রমিকের কাজ করে তার সংসার চলে। দ্বিগুণ লাভের আশায় তিনিও সঞ্চয় করা ২ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। এভাবে ওই এক গ্রামেই দুই শতাধিক গ্রাহক ই-অরেঞ্জে বিনিয়োগ করে প্রায় ১৫ কোটি টাকা প্রতারিত হয়েছেন।

এ ব্যাপারে ওই গ্রামের বাসিন্দা গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আবুল কালাম আজাদ গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, আমাদের গ্রাম থেকে আনুমানিক হিসেবেই দুই শতাধিক মানুষ প্রায় ১৫ কোটি টাকা ওই প্রতিষ্ঠানে জমা দিয়েছেন।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী নাসিদুল জানিয়েছেন, আমরা যে অনলাইন গেটওয়ে (এসএসএল কমার্স) ব্যবহার করে টাকা জমা দিয়েছি। ই-অরেঞ্জ কর্তৃপক্ষ আমাদের জানিয়েছেন, পণ্য ডেলিভারি না দিতে পেরে রিফান্ড করার অর্ডার দিলে আমরা জুন মাসের টাকাগুলো গ্রাহকদের ফেরত দেওয়া যাবে।

এ নিয়ে সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে সাইদুল হক ভূঁইয়া গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সখীপুরের এত লোক প্রতারিত হয়েছে তা জানা ছিল না। প্রতারিত হওয়া ব্যক্তিরা এখনো থানায় লিখিত অভিযোগ করেন নি । অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।