ঘুষ ছাড়া মেলে না প্রধানমন্ত্রীর উপহার, প্রতিবাদে অফিস ঘেরাও

| আপডেট :  ৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৪:৪০ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৪:৪০ পূর্বাহ্ণ

মুজিববর্ষ উপলক্ষে আশ্রয়হীন মানুষদের ঘর উপহার দেয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে ঘুষ ছাড়া মিলছে না সেই ঘরও। আর এর প্রতিবাদে এক ভূমি উপ-সহকারীকে অবরুদ্ধ করেছে স্থানীয় জনতা। তার বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ আনা হয়েছে।

ঘটনাটি ঘটেছে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে। অবরুদ্ধ করার প্রায় ২৪ ঘন্টা পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেখানে গিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে পাওনা টাকা ফেরত দেওয়ার শর্তে ওই ভূমি উপ-সহকারীকে উদ্ধার করেন।

অভিযুক্ত মো. আলাল উদ্দীন হাতিভাঙ্গা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গত ৩ বছর থেকে ভারপ্রাপ্ত ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তার দায়িত্বে রয়েছেন। মুজিব শতবর্ষে ইতিমধ্যে ওই ইউনিয়নে প্রথম পর্যায়ে ৪টি ও ২য় পর্যায়ে ৩০ প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর বরাদ্দ ছিলো। ৩য় পর্যায়ে ওই ইউনিয়নে কোনো ঘর না থাকলেও মো. আলাল উদ্দীন স্থানীয় আমখাওয়া, সরকারপাড়াসহ অন্যান্য গ্রাম থেকে শতাধিক লোকের কাছ থেকে জনপ্রতি ১০ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা করে ঘুষ বাণিজ্য করেন। দীর্ঘ দিন যাবত ঘর দেই দিচ্ছি বলে সময় পাড় করলে এলাকাবাসীদের মধ্যে সন্দেহ কাজ করে।

ইতিমধ্যে মো. আলাল উদ্দীনের অন্যত্র বদলীর মৌখিক সিদ্ধান্ত হয়ে যায়। সে খবর এলাকাবাসাীদের মধ্যে জানাজানি হলে তারা টাকা ফেরতের জন্যে হাতিভাঙ্গা ভূমি অফিসে আসে। গত বুধবার সন্ধ্যা থেকে একজন দুজন করে শতাধিক লোক অফিসে আসলে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা কৌশলে তাদের সরিয়ে অফিসের দরজা জানালা বন্ধ করে ভেতরে অবস্থান নেন।

এদিকে বাইরে বিক্ষোভকারীরা ওই ভূমি অফিসারকে না পেয়ে সেই দিন সারারাত ও গতকাল বুধবার বিকাল পর্যন্ত অফিসের সামনে অবস্থান অবরোধ করেন। তাদের কথা তারা টাকা না নিয়ে বাড়ী ফিরবেন না। পরে গতকাল বিকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম আব্দুল্লাহ বিন রশিদ ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় অভিযোগকারীদের সাথে আলাপ আলোচনা করে অভিযুক্ত ওই ভূমি কর্মকর্তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে আনেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই ভারপ্রাপ্ত ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মো. আলাল উদ্দীন শুধু ঘর দেওয়ার কথা বলে টাকা নেননি। তিনি অনেক মানুষের কাছে খারিজ করা ও ভুমিহীন বন্দোবস্তের কথা বলে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এ অবস্থায় সে অন্য অফিসে বদলী হয়ে গেলে সাধারণ মানুষদেরকে তার কাছে পাওনা টাকা থেকে বঞ্চিত হতে হবে।

ভূক্তভোগী সরকারপাড়া গ্রামের মো. জনাব আলীর ছেলে মো. সোনাহার বলেন, বাড়ীতে আমার থাকার ঘর নেই। ঘর উঠানোর জন্যে খাম তৈরী করেছি। সে সময় ওই ভারপ্রাপ্ত ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মো. আলাল উদ্দীন ঘর দেওয়ার কথা বলে আমার কাছে ১০ হাজার টাকা নেন। আমি তৈরীকৃত খাম বিক্রি করে টাকা দেই।

এ বিষয়ে পজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম আব্দুল্লাহ বিন রশিদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর দেওয়ার কথা বলে যদি কোনো কর্মকর্তা কর্মচারী কারো কাছ থেকে টাকা নিয়ে থাকে বা প্রতারণা করে থাকে তাকে ক্ষমা করা হবে না। তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।