ইমাম নিয়োগেও অনিয়ম ; এমপিওভুক্ত শিক্ষককে মডেল মসজিদের ইমাম নিয়োগ!

| আপডেট :  ১ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৫:২৬ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৫:২৬ পূর্বাহ্ণ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরের মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ‘পেশ ইমাম’ নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ এনে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মো. শফিকুল ইসলাম নামে এক চাকরিপ্রার্থী মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার যুগ্ম জেলা জজ ১ম আদালতের এ মামলা দায়ের করেন।

মামলায় নিয়োগ পাওয়া মো. মেজবাহ উদ্দিনকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। বাকি আসামিরা হলেন, বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ফিল্ড অফিসার, সহকারি কমিশনার (ভূমি), সহকারি মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, আউলিয়ানগর সিনিয়র মাদরাসার অধ্যক্ষ, উপজেলা নির্বাহী অফিসার কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা। তাঁরা নিয়োগ প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ তালিকায় ছয় নম্বরে থাকা মো. মিছবাহ উদ্দিনকে নিয়োগ দেয়া হয়। নিয়োগের জন্য যেসব অভিজ্ঞতা প্রয়োজন সেগুলো মেছবাহ উদ্দিনের নেই। পাশাপাশি তিনি মহেশপুর উচ্চ বিদ্যালয় নামে একটি এমপিওভুক্ত স্কুলের শিক্ষক। এমপিও নীতিমালা ২০২১ অনুসারে তিনি মডেল মসজিদে নিয়োগ পেতে পারেন না।

নথিপত্র ঘেঁটে দেখা যায়, মডেল মসজিদে পেশ ইমামসহ চারজনের নিয়োগ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। পেশ ইমাম পদে ৪০ জনের আবেদন জমা পড়ে। এর মধ্যে ১৮ জন লিখিত পরীক্ষায় অংশ। ২৩ জুন লিখিত পরীক্ষা শেষে সাতজন উত্তীর্ণ হওয়ার কথা জানিয়ে নোটিশ দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) কে এম ইয়াসির আরাফত। পরে তালিকার সাত নম্বরে থাকা মিছবাহ উদ্দিনকে গত ১২ আগস্ট এক আদেশে নিয়োগ দেয়া হয়।

শফিকুল ইসলামের দায়ের করা মামলার আইনজীবী মো. তানবীর ভূঁইয়া মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জানান, আদালতের বিচারক মো. সারোয়ার আলম মামলাটি আমলে নিয়েছেন। সম্পূর্ণ নিয়ম বহির্ভূতভাবে এ নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আশা করি মামলার বাদী ন্যায় বিচার পাবেন।

বাদী মো. শফিকুল ইসলাম অভিযোগ করেন, নিয়োগ হওয়া মিছবাহ্ উদ্দিন জামায়াত শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। বর্তমানে তিনি আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারী। ২৩ জুন প্রকাশিত লিখিত পরীক্ষার উর্ত্তীণের তালিকায় তার নাম ছয় নম্বরে থাকলেও গত ১২ আগস্ট তাঁকে নিয়োগ দেয়া হয়। নিয়োগের বিপরীতে চাওয়া সব ধরণের নিয়োগের যোগ্যতাও ওই ব্যক্তির নেই। স্কুল চলাকালীন সময়ে তাঁর পক্ষে মসজিদের কার্যক্রম পরিচালনাও সম্ভব নয়। ফলে আইন ও নীতিগত কারণে নিয়োগটি অবৈধ।

মামলার আসামি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ফিল্ড অফিসার মো. নূরুল ইসলাম কালের মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মোবাইল ফোনে কণ্ঠকে জানান, এমপিওভুক্ত শিক্ষককে নিয়োগ দেয়া যাবে কি-না সে বিষয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে কোনো নির্দেশনা ছিলো না। মামলার কপি না পাওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে কিছু বলতে পারবো না। তিনি এ বিষয়ে নিয়োগ সংশ্লিষ্ট অন্যান্যদের সঙ্গে কথা বলতে বলেন।

এ বিষয়ে বিজয়নগরের ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারি কমিশনার (ভূমি) রাবেয়া আফসারের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। সন্ধ্যা সোয়া ছয়টায় মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি একটি অনুষ্ঠানে থাকায় কথা বলা যায়নি। পৌনে সাতটার দিকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। সূত্রঃ কালের কন্ঠ