‘পরীমনির অবস্থা অবনতির দিকে’

| আপডেট :  ৩১ আগস্ট ২০২১, ১২:০৭ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৩১ আগস্ট ২০২১, ১২:০৭ অপরাহ্ণ

৫০ হাজার টাকা মুচলেকায় মাদক মামলায় অবশেষে জামিন পেয়েছেন ঢাকাই সিনেমার আলোচিত নায়িকা পরীমনি। মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কায়েশ তার জামিন মঞ্জুর করেন। গত ৪ আগস্ট রাতে ঢাকার বনানীতে পরীমনির বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে র‌্যাব।

পর দিন তার বিরুদ্ধে বনানী থানায় মাদক আইনে এ মামলা করা হয়। জব্দ তালিকায় পরীমনির বাসা থেকে ‘মদ, আইস ও এলএসডির মতো মাদকদ্রব্য’ উদ্ধারের কথা বলা হয়। ওই দিনই পরীমনিকে প্রথম দফায় চার দিন ও ১০ আগস্ট দ্বিতীয় দফায় দুদিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে মামলার তদন্ত সংস্থা সিআইডি। সর্বশেষ গত ১৯ আগস্ট পরীমনির একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। তৃতীয় দফা রিমান্ড শেষে ২১ আগস্ট আদালতে হাজির করা হলে পরীমনিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।

গত ২২ আগস্ট পরীমনির জামিন চেয়ে আবেদন করা হয়। ওই দিন আদালত শুনানির জন্য ১৩ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন। পর দিন আরেক দফা আবেদনে ‘দ্রুত শুনানির’ আবেদন করেন পরীমনির আইনজীবী। এতে সাড়া না পেয়ে তিনি হাইকোর্টে রিট করেন। সেখানে রুল চাওয়ার পাশাপাশি পরীমনির জামিন আবেদনও করা হয়। পরে হাইকোর্টের আদেশে আজ (মঙ্গলবার) পরীমনির জামিন শুনানি করেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত।

দুপুর ২টায় আদালতে পরীমনির পক্ষে জামিন আবেদনের ওপর শুনানি শুরু করেন তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান। তিনি বলেন, আসামি পরীমনিকে সাত দিনের রিমান্ডে অলরেডি (ইতোমধ্যে) নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই রিমান্ডে নেওয়ার পরও কোনো তথ্য উদঘাটন করা যায়নি। রিমান্ডে থাকার কারণে পরীমনির অবস্থা অবনতির দিকে গেছে। তিনি শারীরিকভাবে অনেক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

আইনজীবী শুনানিতে আরও বলেন, পরীমনি কারাগারে থাকার কারণে তার অনেক কাজ (সিনেমা) বন্ধ হয়ে আছে। তিনি অনেক সিনেমার কাজ করেছেন। তিনি কারাগারে থাকার কারণে প্রীতিলতা নামের একটি সিনেমায় কাজ করতে পারছেন না। তিনি একজন নারী, তিনি জামিন পেতে পারেন। এ ছাড়া আসামি যদি নারী, শিশু অথবা বিকলাঙ্গ হয় তাহলে আদালত জামিন দিতে পারেন। দেশে ও বিদেশে তার অনেক ছবির কাজ চলছে। তাকে জামিন দিলে তিনি পলাতক হবেন না।

পরীমনির এই আইনজীবী আদালতকে বলেন, এ মামলার যে ধারা তাতে সর্বোচ্চ সাজা পাঁচ বছর। সেক্ষেত্রে আসামি (পরীমনি) অবশ্যই জামিন পেতে পারেন। আমরা জামিনের আবেদন করছি।

আসামিপক্ষের এই যুক্তির ও বক্তব্যের বিরোধী করে রাষ্ট্রপক্ষ। পাবলিক প্রসিকিউটর আবদুল্লাহ আবু বলেন, পরীমনির বাসায় মাদকসহ অন্যান্য জিনিসপত্র পাওয়া গেছে। বর্তমানে মাদক খুবই ভয়াবহভাবে বাংলাদেশে বিস্তার করেছে। সরকার মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছে। এ অবস্থায় তাকে জামিন দেওয়া ঠিক হবে না।

রাষ্ট্রপক্ষের এই কৌঁসুলি আরও বলেন, অপরাধ নারী কিংবা পুরুষ দেখে না। যে অপরাধ করবে তার শাস্তি হবে। মামলাটি তদন্তের মধ্যে রয়েছে। আমরা চাই আসামির জামিনের আবেদন বাতিল করা হোক। আসামি জামিন পেলে পলাতক হতে পারেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত পরীমনির আবেদন মঞ্জুর করে তাকে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল পর্যন্ত জামিন দেন। সুত্রঃ যুগান্তর