একই সাথে ২ বোনকে বিয়ে করে সংসার করছে যুবক। এখন তার নজর আরেক বোনের দিকে!

| আপডেট :  ২৫ আগস্ট ২০২১, ০৬:২৯ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২৫ আগস্ট ২০২১, ০৬:২৯ পূর্বাহ্ণ

না এটা কোনো সিনেমার গল্প নয়। বাস্তবেই এমন ঘটনা ঘটল মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার বরাইদ ইউনিয়নের আগ সাভার এলাকায়। যেখানে একই সাথে দুই বোনকে বিয়ে করে সংসার করছেন এক যুবক। এখন তার নজর আরেক বোনের দিকে! ওই যুবকের নাম মোঃ ইয়াছিন। বয়স ৩২। পেশায় একজন মোবাইল মেকানিক।

এলাকাবাসী ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, এগারো বছর আগে উপজেলার আগ সাভার এলাকার মৃত চৈতা মাষ্টারের বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ছেলে জুয়েলের সাথে একই এলাকার হজি মিয়ার বড় মেয়ে জোসনা বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর জুয়েলের মেঝো চাচা মৃত ছুরো পীরের ছেলে ইয়াছিন মিয়ার সাথে জোসনা বেগমের পরকীয়া সম্পর্ক হয়। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হওয়ার পর আপত্তিকর অবস্থায় ধরা পড়ায় ইয়াছিন জোসনাকে বিয়ে করে। দীর্ঘ তিন বছর স্ত্রী জোসনা বেগমের সাথে সংসার করার পর শ্যালিকা সেলিনা আক্তারের সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে ইয়াছিন। তার সাথেও ঘর বাঁধে ইয়াছিন। এভাবে দুই বোনকে নিয়ে ইয়াছিনের দীর্ঘ ১০ বছরের সংসার।

সম্প্রতি এলাকাবাসীর মাঝে বিষয়টি নজরে আসলে তোপের মুখে পড়ে গতকাল মঙ্গলবার প্রথম স্ত্রী জোসনা বেগমকে তালাক দেয় ইয়াছিন। তবে এবার ইয়াছিনের কু-দৃষ্টি আবারো পড়েছে জোসনার মেঝো বোনের দিকে।
প্রথম স্ত্রী জোসনা বেগম বলেন, ১০ বছর আগে ইয়াছিনের সাথে আমার বিয়ে হয়। এরপর ইয়াছিন আমাকে তালাক না দিয়ে আমার ছোট বোন সেলিনাকে বিয়ে করে। ছোট বোনের সুখের কথা ভেবে কোনো প্রতিবাদ করি নাই।

দ্বিতীয় স্ত্রী সেলিনা আক্তার বলেন, বড় বোন জোসনার সন্তান না হওয়ায় সাত বছর আগে ইয়াছিন আমাকে বিয়ে করে। আমরা দু’বোন মিলেমিশে সংসার করছি। আমাদের কারো কোনো আপত্তি নেই। তবে আমাদের এখন পর্যন্ত কোনো সন্তান হয়নি।

এ ব্যাপারে ইয়াছিন মিয়া অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সন্তান না হওয়ায় আমরা আলোচনার মাধ্যমে শ্যালিকাকে বিয়ে করেছি। শ্যালিকাকে বিয়ের আগে প্রথম স্ত্রীকে তালাক দেয়া উচিৎ ছিল। এটা আমার অন্যায় হয়েছে। ভুল বুঝতে পেরে গত মঙ্গলবার প্রথম স্ত্রী জোসনা বেগমকে তালাক দিয়েছি।

স্থানীয় সাভার বাজার পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি মোঃ রেজাউল করিম বলেন, ইয়াছিন যা করেছে তা অন্যায় হয়েছে। আমরা বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছি।
মানিকগঞ্জ জেলা জজকোর্টের আইনজীবি অ্যাড. জাহিদুর রহমান তালুকদার বাবু বলেন, একজনকে তালাক না দিয়ে একসাথে আপন দুই বোনের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার সুযোগ নেই। ইসলামী শরীয়াহ ও বাংলাদেশের প্রচলিত আইন এ ধরণের বিবাহকে পারমিট করেনা।

দড়গ্রাম ইসলামীয়া সিনিয়র মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আবুল হোসেন বলেন, যোগ্যতা থাকলে ও ন্যায় বিচার করতে পারলে ইসলামে একজন স্বামী একসাথে চারটি স্ত্রী রাখতে পারবে। একসাথে আপন দুই বোনের সাথে সংসার করতে পারবে না। এটা হারাম। পবিত্র কোরআনে

এটাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। স্থানীয় বরাইদ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. হারুন-অর-রশিদ বলেন, আমি শুনেছি ইয়াছিন তার স্ত্রীকে তালাক না দিয়ে শ্যালিকাকে বিয়ে করে একসাথে দীর্ঘদিন সংসার করছেন।