কার্যালয় খোলার দুইদিন আগে মুখ খুললেন ইভ্যালির এমডি

| আপডেট :  ২১ আগস্ট ২০২১, ০১:০৮ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২১ আগস্ট ২০২১, ১২:৫৩ অপরাহ্ণ

গত জুলাইয়ে নতুন ই কমার্স নীতিমালা প্রকাশের এক সপ্তাহ আগেই গত ২৭ জুন ঢাকার ধানমণ্ডির ইভ্যালির কার্যালয় বন্ধ করে কার্যক্রম সীমিত করে প্রতিষ্ঠানটি৷ মোহাম্মদ রাসেল বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) রাতে ফেসবুক লাইভে এসে আগামী রোববার তাদের কার্যালয় চালু করার ঘোষণা দেন৷ তবে পাওনাদারদের এক সঙ্গে কার্যালয়ে এসে বিশৃঙ্খলা না করার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি৷

রাসেল বলেন, “অনেকে বলছেন ক্রেতারা দলবেঁধে আসবেন, কিছু একটা হবে৷ অনেকে ওই দিন লাইভ করতে যাচ্ছেন৷ এভাবে জোর করে যেহেতু বেনিফিট আসছে না, আপনারা চেষ্টা করুন, অ্যাপয়েন্টমেন্টের বাইরে না আসার৷”

তিনি আরো বলেন, “রোববার থেকে অন্তত ১৫টা দিন অ্যাপয়েণ্টমেন্ট ছাড়া আসবেন না, গ্রুপ করে আইসেন না৷ কারণ আপনারা আসবেন পজিটিভ সেন্সে, এইটাকে ক্যাপিটালাইজ করে একটা অ্যাক্সিডেন্ট হবে৷ আপনাদের ছোট্ট কিছু ভুলের জন্য সবগুলো ব্যাপার এলোমেলো হয়ে যাবে৷ ব্যাড ইনটেনশনের লোক যখন চান্স নিতে আসবে না, তখন আপনারা আইসেন৷ মিডিয়া ইজ ফ্যান্টাসটিক৷ কিন্তু মিডিয়াকর্মী সবাই একরকম নয়৷ কেউ কেউ হয়ত শুধু নেগেটিভ জিনিসগুলো হাইলাইট করবেন৷”

এতদিন অফিস না খোলার ব্যাখ্যায় রাসেল বলেন, “কারণ আমরাও বুঝতে পারছিলাম না যে এই লকডাউনটা আবার দেবে কিনা। আমাদের ল্যাপটপ, কম্পিউটার মেগাস্কেলের অনেক কিছু নিয়ে বাসায় একটা সেটাপ করে ফেলেছে। ইমিডিয়েটলি অপেক্ষা করে দেখলাম যে আবার লকডাউন দেয় কি না।”

অগ্রিম টাকা নিয়েও মাসের পর মাস গ্রাহকের পণ্য বুঝিয়ে না দেওয়া এবং বাজারমূল্যের চেয়ে অর্ধেক বা তার চেয়েও কম দামে পণ্য বিক্রির ঘোষণা দিয়ে বেচাকেনার স্বাভাবিক ভারসাম্যে বিঘ্ন ঘটানোর জন্য সমালোচিত হচ্ছিল ইভ্যালি।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের এক তদন্তে ইভ্যালির প্রায় সাড়ে তিনশ কোটি টাকার দায়ভার সৃষ্টি হওয়ার বিষয়টি আলোচনায় আসার পর শুরু হয় তুমুল আলোচনা। তাদের ব্যবসা নীতি নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রশ্ন তোলে। এর মধ্যে ইভ্যালি অফিস বন্ধের পর রাসেলকেও ফোন করে পাচ্ছিলেন না সাংবাদিকরা। তার বিদেশ যাওয়ায়ও নিষেধাজ্ঞা আসে।

বৃহস্পতিবার লাইভে নানা প্রশ্নের উত্তর দেন রাসেল। রাসেল বলেন, “অনেকে ভাবতেছে যে ইভ্যালি এভয়েড করতে চাচ্ছে কি না। আমি নিজেকে হাইড করতে চাই না। অনেকে সন্দেহ পোষণ করেন যে আমরা দেশ ছাড়ি কি না। আমার মাথায় কখনোই আসেনি এটা।

“বাংলাদেশ ব্যাংকও দেখেছে যে আমার কোনো অ্যাসেট নেই। তাহলে আমি কী নিয়ে পালাব? নিয়ে যাওয়ার মতো কিছু আমি করি নাই। অনেকে আমার গাড়ি নিয়ে কথা বলে। এই গাড়ি কিন্তু কোম্পানির নামে এবং যে কোনো সময় বিক্রি করে দেওয়ার মতো। ট্রাভেল ব্যানও আমার হয়ে আছে।”

অস্বাভাবিক মূল্যছাড় দিতে গিয়ে প্রায় সাড়ে তিনশ কোটি টাকার দায়ভার সৃষ্টি হলেও ব্যাপারটিকে এখনও অস্বাভাবিকভাবে দেখেন না বলে দাবি করেন সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা রাসেল।

তিনি বলেন, “৩০০ কোটি টাকার উপরে একটা গ্যাপ দেখতে পায় বাংলাদেশ ব্যাংক। বিষয়টি আমরা অস্বাভাবিকভাবে দেখিনি। কারণ কোনো বিনিয়োগই নিজস্ব বিনিয়োগ থাকে না। কেউ ব্যাংক থেকে নেন, কেউ অন্যদের থেকে নেন।

“কোম্পানিগুলো সাপ্লায়ারের, ডিলারের আগাম টাকা জমা দেওয়া আছে। গ্রামীণফোনে আমাদের আগাম টাকা জমা দেওয়া আছে। তাই লাইবালিটিটাকে অস্বাভাবিকভাবে দেখিনি।”

এখনও মাসে ১০০ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি হচ্ছে দাবি করে রাসেল বলেন, এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের দুটি পথ খোলা আছে। হয়ত তহবিল সংগ্রহ করতে হবে, নয়ত বিক্রিটা নিয়মিত রাখতে হবে। “আমরা ইক্যুইটি সেল করে ফান্ড রেইজ করব। যমুনা গ্রুপের সঙ্গে আমাদের চুক্তি স্বাক্ষর হয়। বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে সময় লাগবে।”