মাঠে নামবে হেফাজত!

| আপডেট :  ১৯ জুলাই ২০২১, ০৪:৫৪ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১৯ জুলাই ২০২১, ০৪:৫৪ অপরাহ্ণ

কওমি মাদ্রাসাসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া, হেফাজতের আটক নেতাকর্মীদের মুক্তি এবং হেফাজতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম হয়রানি বন্ধসহ কয়েকটি দাবি-দাওয়া নিয়ে ঈদের পর নতুন করে আন্দোলনে যাচ্ছে হেফাজত। হেফাজতের একটি দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, তারা সরকারের সাথে একটি সমঝোতার চেষ্টা করেছিল কিন্তু সেই সমঝোতায় সরকার আগ্রহ দেখায়নি।

এ জন্য রাজপথে নামার কোনো বিকল্প দেখছে না। ঈদের পর থেকে কঠোর লকডাউন শুরু হচ্ছে। এতে হেফাজতের নেতারা মনে করছেন যে, এই লকডাউনের মধ্যেই তারা সঙ্ঘবদ্ধ হবেন এবং লকডাউনের পরে তারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিশেষ করে কওমি মাদ্রাসা খুলে দেওয়া এবং নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে আন্দোলন করবেন।

হেফাজতের নেতারা বলছেন যে, ২৬ শে মার্চের পর মামুনুল হকসহ হেফাজতের একাধিক নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই সমস্ত গ্রেপ্তারকৃতদের নিয়ে হেফাজত দুটি ভাগে ভাগ করছেন। প্রথমভাগে হলো যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ উত্থাপন করেছে। হেফাজতের নেতারা বলছেন তাদের নিয়ে হেফাজতের কোনো বক্তব্য নেই।

যেমন মামুনুল হক নারী কেলেঙ্কারী, অর্থ আত্মসাৎসহ নানা সুনির্দিষ্ট অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন। এছাড়াও হেফাজতের আরো কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। এগুলো নিয়ে হেফাজত কোনো আন্দোলন করতে চায় না। কিছুদিন আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে বৈঠকেও হেফাজতের নেতারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বিষয়টি জানিয়েছেন বলে জানা গেছে।

যাদেরকে রাজনৈতিক কারণে বা বিনা কারণে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের মুক্তি দাবি করা হয়েছে। অবশ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জুনায়েদ বাবুনগরীর নেতৃত্বে আসা হেফাজতের নেতাদের পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছেন যে রাজনৈতিক কারণে কাউকেই গ্রেফতার করা হয়নি। যাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে।

আর এই কারণেই এখন প্রশ্ন উঠেছে যে, হেফাজতের যাদেরকে আটক করা হয়েছে তাদের মুক্তির ব্যাপারে সরকার কি করবে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, কাউকেই বিনা কারণে আটক করা হয়নি এবং আইন সকলের জন্য সমান এবং আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও জুনায়েদ বাবুনগরীসহ হেফাজতের নেতাদের এ ব্যাপারে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন।

সরকার সাথে দরকষাকষি করতে না পারার পর হেফাজতের নেতারা নিজেদের মধ্যে বৈঠক এবং শলাপরামর্শ করেছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে এবং এই শলাপরামর্শের মাধ্যমে হেফাজতের উগ্রবাদী অংশ সরকারবিরোধী আন্দোলনের দিকে মনোযোগ দিচ্ছে।

তবে এ নিয়ে হেফাজতের মধ্যেও এখন দোদুল্যমানতা রয়েছে। হেফাজতের বড় অংশই মনে করছে যে, এই মুহূর্তে সরকারের সাথে আন্দোলনে গিয়ে সফল হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। বরং উপরন্তু আরো কিছু নেতা গ্রেপ্তার হতে পারেন। বিশেষ করে যাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের প্রায় প্রত্যেকেই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন এবং স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জুনায়েদ বাবুনগরীসহ আরো বেশ কিছু নেতার নাম উল্লেখ করেছেন।

এছাড়াও হেফাজতের আমীর জুনায়েদ বাবুনগরীর বিরুদ্ধে সাবেক আমীর আহমদ শফী হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগও রয়েছে। এই কারণেই জুনায়েদ বাবুনগরী এখন আন্দোলনের ব্যাপারে ততটা উৎসাহী নন। বরং তিনি সরকারের সাথে কোনো রকমভাবে একটি সমঝোতা করা যায় নাকি এই চেষ্টা করছেন। তবে হেফাজতের মধ্যে একটি উগ্রবাদী অংশ আছে যারা আহমদ শফীর মৃত্যুর পর ক্ষমতাবান হয়েছেন।

এরা সরকারের বিরুদ্ধে একটি বড় ধরনের আন্দোলন করার পক্ষপাতি। তবে অনেকেই মনে করছেন এই আন্দোলনের পেছনে অন্য কোনো গোষ্ঠীর মদদ থাকতে পারে। সূত্রঃ বাংলা ইনসাইডার