করোনার মিথ্যা রিপোর্ট দিয়ে ফেসে গেলো গুলশানের প্রাভা হেলথ

| আপডেট :  ১৫ জুলাই ২০২১, ০২:৫১ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১৫ জুলাই ২০২১, ০২:৫১ অপরাহ্ণ

করোনার মিথ্যা রিপোর্ট প্রদানের দায়ে ফেসে যাচ্ছে গুলশানের প্রাভা হেলথ। এই প্রতিষ্ঠানটি দেশে করোনা সংক্রমণ শুরুর পর থেকেই বেসরকারি পর্যায় থেকে করোনা পরীক্ষা করে আসছিল। গত ১০ জুলাই এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে করোনার মিথ্যা রিপোর্ট প্রদানের অভিযোগ করা হয়।

অভিযোগ যাচাই করতে স্বাস্থ্য অধিদফতর হাসপাতাল-১ এর উপ-পরিচালক ডা. মো: জাহিদুল ইসলামকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা করেছে। প্রাভার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদের ছেলে মাহফুজ শফিক। গতকাল বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদফতরে বিস্তারিত জানানোর জন্য মাহফুজ শফিককে ডাকা হয়।

মাহফুজ শফিক স্বাস্থ্য অধিদফতরে অভিযোগে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার জন্য কোভিড টেস্টের সনদ নিতে সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যরিস্টার শফিক আহমেদের পুত্রবধু ও দুই নাতনি প্রাভা হেলথ নামের একটি প্রতিষ্ঠানে নমুনা দিয়েছিলেন। তারা করোনা পজেটিভ উল্লেখ করে প্রাভা থেকে মেইল পাঠালে বাতিল হয় যাত্রা, নষ্ট হয় ফ্লাইটের টিকিট। পরের দিন আইইডিসিআরে পুনরায় দেয়া নমুনার রিপোর্টে তারা তিনজনসহ পরিবারের পাঁচ সদস্যই করোনা নেগেটিভ বলে জানানো হয়।

মাহফুজ শফিক বলেন, গত ৯ জুলাই ভোর ৪টা ২৫ মিনিটে কাতার এয়ারওয়েজের ফ্লাইটে তার স্ত্রী ফারজানা রহমান, বড় মেয়ে বায়ান শফিক এবং ছোট মেয়ে জেইন শফিকের যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার কথা ছিলো। বিদেশগামী যাত্রীদের করোনা টেস্ট বাধ্যতামূলক হওয়ায় গত ৭ জুলাই বিকেল ৫টার দিকে প্রাভা হেলথ নামের প্রতিষ্ঠানে ওদের তিনজনের নমুনা জমা দেয়া হয়।

ওই দিন রাত ১২টার দিকে আমার স্ত্রীর ফোনে ম্যাসেজ দিয়ে জানানো হয়, ‘তিনি করোনা পজেটিভ’। কিছুক্ষণের মধ্যে পৃথক ম্যাসেজে দুই মেয়েও করোনা পজেটিভ বলে জানানো হয়। ওদের কোনো ধরণের উপসর্গ না থাকায় আমার সন্দেহ হয়। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা জানান, ওই প্রতিষ্ঠানের মেশিন একদম নতুন এবং অত্যাধুনিক, ভুলের কোনো অবকাশ নেই।

মাহফুজ শফিক আরো বলেন, আমি যেহেতু ওদের সঙ্গে থাকি তাই আমিও আক্রান্ত হলাম কি না এই চিন্তা করে ওই দিন রাত দেড়টার দিকে গ্রীন লাইফ হাসপাতালে নমুনা দিয়ে আসি। আমার রিপোর্ট নেগেটিভ আসলে প্রাভার রিপোর্ট নিয়ে আমি তাদের অভিযোগ করি। কিন্তু প্রতিষ্ঠান থেকে আমাকে বলা হয়, তারা পরবর্তীতে যোগাযোগ করবেন।

অভিযোগে মাহফুঝ শফিক আরো বলেন, আমার বাবা ব্যরিস্টার শফিক আহমেদের বয়স ৮৫ বছর, মা ডাকসুর সাবেক ভিপি প্রফেসর মাহফুজা খানমের বয়স ৭৬ বছর। তাদের নিয়ে বেশি শঙ্কিত হয়ে পড়ি। এ জন্য ৮ জুলাই আইইডিসিআরে ফোন করলে তারা বাড়ি থেকে পরিবারের সকল সদস্যসহ মোট ২০ জনের নমুনা নিয়ে যায়।

৯ জুলাই রাত ১২টায় তারা ই-মেইল করে জানান যে, ‘আমাদের সবার রিপোর্ট নেগেটিভ’। প্রাভার ও্ই ভুল রিপোর্টে গত ২২ ঘন্টায় আমাদের পরিবারের উপর দিয়ে ঝড় বয়ে গেছে। নষ্ট হয়েছে তিনজনের ফ্লাইটের টিকিট, ভন্ডুল হয়ে গেছে সমস্ত সিডিউল।’

উল্লেখ্য সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে ১০০ টাকার বিনিময়ে করোনা টেস্ট করাতে পারলেও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে করোনা টেস্ট করাতে লাগে সাড়ে ৩ হাজার টাকা। আবার বাড়ি এসে নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে গেলে আরো বেশি টাকা নিয়ে থাকে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো। ক্ষেত্র বিশেষে ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা নিয়ে থাকে এরা। তবে সরকারিভাবে চলতি জুলাই মাসে করোনা পরীক্ষা বিনামূল্যে করা যাচ্ছে। সূত্রঃ নয়া দিগন্ত