দেখে কাউকে চেনার উপায় নেই, রূপগঞ্জের বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে লাশের গন্ধে

| আপডেট :  ৯ জুলাই ২০২১, ১২:২৮ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৯ জুলাই ২০২১, ১২:২৪ অপরাহ্ণ

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কারখানার ভেতর থেকে এক এক করে মরদেহ বের করে আনা হচ্ছে। আগুন লাগার ২৪ ঘণ্টা পার হলেও এখনও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত ৫২ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আর হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত ব্যক্তির লাশ দেখে চেনার উপায় নেই। ডিএনএ পরীক্ষার ভিত্তিতে স্বজনদের কাছে তা হস্তান্তরের কথা জানিয়েছে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ।

আজ শুক্রবার (৯ জুলাই) দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গের সামনে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুবাস চন্দ্র সাহা সাংবাদিকদের বলেন, এখন পর্যন্ত যাঁদের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে, তাঁদের শরীর এতটাই পোড়া যে লাশ দেখে চেনার উপায় নেই। ঢাকা মেডিকেলের মর্গে লাশগুলো রাখা হবে। স্বজনদের ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে লাশ হস্তান্তর করা হবে।

এর আগে ৭০ থেকে ৮০ জন শ্রমিক এখনও ওই ভবনের ভেতরে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন অন্যান্য শ্রমিক ও নিখোঁজের স্বজনরা। শ্রমিকদের স্বজন ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, ছয়তলা ভবনটির মধ্যে চতুর্থতলার শ্রমিকরা কেউ বের হতে পারেননি। সিকিউরিটি ইনচার্জ চারতলার কেচি গেটটি বন্ধ করে রাখায় কোনো শ্রমিকই বের হতে পারেননি। সেখানে ৭০ থেকে ৮০ জন শ্রমিক কাজ করতেন।

তারা জানান, চতুর্থতলার শ্রমিকদের ইনচার্জ মাহবুব, সুফিয়া, তাকিয়া, আমেনা, রাহিমা, রিপন, কম্পা রানী, নাজমুল, মাহমুদ, ওমরিতা, তাছলিমাসহ প্রায় ৭০ থেকে ৮০ জন শ্রমিক নিখোঁজ রয়েছেন। নিখোঁজ শ্রমিকদের স্বজনরা কারখানার সামনে এসে ভিড় করছেন। তাদের আহাজারিতে কারখানার চারপাশ ভারী হয়ে উঠেছে। স্বজনরা অভিযোগ করে জানান, কারখানা কর্তৃপক্ষের অবহেলায় কারখানায় অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। আগুন লাগার পরও কারখানা কর্তৃপক্ষ কেচি গেটের তালা না খোলায় শ্রমিকরা বের হতে পারেননি।

কাঞ্চন ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ শাহ আলম বলেন, মধ্যরাতে আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলেও সকাল ৬টার দিকে আবার কারখানার চারতলায় আগুন বাড়তে থাকে। আগুন নিয়ন্ত্রণের আগ পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না। এর আগে বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) বিকেল ৫টার দিকে উপজেলার কর্ণগোপ এলাকায় অবস্থিত ওই কারখানায় আগুন লাগে।

আগুন লাগার পরেও গেট খোলেনি কর্তৃপক্ষ: নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাসেম ফুড কারখানায় বৃহস্পতিবার বিকালে লাগা আগুন একনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। এদিকে কারখানার আগুন নেভাতে দেরির অভিযোগ করে একটি ভবনে ভাঙচুর করেছেন বিক্ষুব্ধ লোকজন। আগুনে পুড়ে যাওয়া ভবনের পাশের ভবনটিতে শুক্রবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে তারা ভাঙচুর চালান। ওই সময় ওই ভবনের কাছে সড়কে প্রাইভেট কার, মোটরসাইকেলসহ ১০ থেকে ১২টি গাড়িও ভাঙচুর করেন তারা। লাঠি হাতে থাকা বিক্ষুব্ধ লোকজন ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবোরধ করতে চাইলে পুলিশ তাদের বাধা দেন। ওই সময় পুলিশের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে।