জাফলংয়ে বনের রাজা জহিরুলের যত অপকর্ম (ভিডিওসহ)

| আপডেট :  ৭ জুলাই ২০২১, ০৩:১৫ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৭ জুলাই ২০২১, ০৩:১৫ পূর্বাহ্ণ

সিলেট জে’লার সারি রেঞ্জের জাফলং বন বিটের কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম রাজু। চলনে বলনে ও কথাবার্তায় মনে হয় তিনি জাফলং বনের রাজা। বন এলাকায় চলাফেরা করেন নিজস্ব বাহিনী নিয়ে। বনভূমির পাথর উত্তোলন, জায়গা ভাড়া ও অ’বৈধ দ’খলদারদের কাছ থেকে মাসোয়ারা নিতে গড়ে তুলেছেন নিজস্ব সিন্ডিকেট। আর এই সিন্ডিকে’টের মাধ্যমে প্রতিমাসে আয় করেন লক্ষ লক্ষ টাকা।

নারী-পুরুষ নিয়ে প্রায় শতাধিক লোকের সমন্বয়ে গঠিত এই সিন্ডিকে’টের মাধ্যমে জাফলং বন বিটের কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম রাজু এলাকার নিরীহ মানুষের উপর দিয়েছেন শত শত মি’থ্যা মা’মলা। এমন অ’ভিযোগ করেছেন জাফলং এর শান্তিনগর, নলজুরী, মোহাম্ম’দপুর, রহমতপুরের কয়েকশত অধিবাসী।

বন কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম রাজু ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর জাফলং বিট এ যোগদানের পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ভালো সাজতে তামাবিল ও মোহাম্ম’দপুরের কিছু জায়গা উ’দ্ধার করেন। কিছু অ’বৈধ স্থাপনাও উ’চ্ছেদ করেন। এরপর শুরু হয় তার অ’বৈধ ভাড়া বাণিজ্য। তিনি সোনাটিলা মৌজায় প্রায় পনের/বিশ একর জমি প্রতি শতক বার্ষিক পনেরো হাজার টাকা হিসেবে পাথর ব্যবসায়ীদের কাছে ভাড়া প্রদান করেন। মোহাম্ম’দপুরের কাছে তিনি কয়েকটি স্টোন ক্রাশার বসানোর সুযোগ দেন। কানাইজুরি এলাকার গড়ে উঠা স্টোন ক্রাশার থেকে প্রতিমাসে ভাড়া নেন লক্ষাধিক টাকা।

ওই কর্মকর্তা মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বনের জমি ও টিলা থেকে পাথর উত্তোলন, বনের জায়গা দ’খল ও ভাড়া দিয়ে কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে স্থানীয়দের অ’ভিযোগ। তার এসব অ’পকর্মের প্র’তিবাদ করলে তিনি মি’থ্যা মা’মলা দিয়ে প্র’তিবাদকারীদের হ’য়রানি করেন। এসব অ’পকর্ম করতে তিনি ঐ এলাকায় কয়েকজন নারী-পুরুষ নিয়ে একটি নিজস্ব বাহিনী গড়ে তুলেছেন।

নজরুল ও জিয়া নামের স্থানীয় দুই যুবক তার এই সিন্ডিকে’টের প্রধান হিসেবে কাজ করেন। তার এই অ’পকর্ম ঢেকে রাখতে তিনি সাংবাদিক, পুলিশ, গো’য়েন্দা সংস্থার লোকদের ম্যানেজ করতে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করেন এই রকম স্বী’কারোক্তিমূলক একটি ভিডিও ক্লিপ আমাদের হাতে এসেছে। গোয়াইনঘাট উপজে’লার পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের শান্তিনগর, সোনাটিলা, মোহাম্ম’দপুর, রহমতপুর, কানাইজুরী, তামাবিল এলাকায় রয়েছে বন বিভাগের কয়েক হাজার একর জমি। সিলেট-তামাবিল-জাফলং সড়কের দুই পাশে অনেক জমি বেদ’খল হয়ে যায়। বন বিভাগের এসকল জমিতে গড়ে উঠে স্টোন ক্রাশার মেশিন ও পাথর কয়লার ডাম্পিং ইয়ার্ড।

বিট কর্মকর্তা তার বাহিনীর মাধ্যমে কয়েক লক্ষ টাকার বিনিময়ে রাতের আঁধারে বনের গাছে কে’টে তামাবিল রাস্তা থেকে প্রায় পাঁচশ’ গজ ভেতরে পাথর রাখার ডাম্পিং ইয়ার্ড তৈরি করে দেন। কানাইজুরি, নলজুরি এলাকায় বনভ‚মি উজাড় করে টিলা কে’টে পাথর উত্তোলন করে তার নিজস্ব বাহিনী। এসব পাথরের প্রতিগাড়ি ও ট্রলি থেকে তিনি ৫০০ থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত চাঁ’দা আদায় করেন। সংরক্ষিত বন এলাকায় অনেকগুলো বসতি গড়ে উঠেছে।

এদেরকে উ’চ্ছেদ না করে তিনি প্রতিটি স্থাপনা/বাড়ি থেকে নিয়মিত মাসোহারা আদায় করেন বলে অ’ভিযোগ পাওয়া গেছে। কেউ মাসোহারা না দিলে তাকে মি’থ্যা মা’মলার আ’সামি করা হয়। লা’ঠিয়াল বাহিনী দিয়ে তাদের উপর হা’মলা করা হয়। শুধু তাই নয় হা’মলার শি’কার অ’সহায় পরিবারকে দু-একদিন পর গাছ কা’টার মি’থ্যা মা’মলা দেওয়া হয়। বিট কর্মকর্তার ভ’য়ে কেউ মুখ খোলতে সাহস পায় না। জাফলংয়ের বেশিরভাগ মানুষই বন বিভাগের দা’য়েরকৃত ২৫/৩০টি মি’থ্যা মা’মলার আ’সামি হয়ে পা’লিয়ে বেড়াচ্ছেন।

বিট কর্মকর্তা জহিরুল এসব অ’পকর্মের মাধ্যমে কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। তিনি নিজ এলাকায় সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন। কিছুদিন পূর্বে আট লক্ষ টাকা দামে কিনেছেন একটি প্রাইভেট কার। তার এসব অ’পকর্মের বি’রুদ্ধে ত’দন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন এলাকাবাসী। সুত্রঃ জৈন্তা বার্তা