অভিনেত্রী ফাতিমা সানার সঙ্গে সম্পর্কেই পনেরো বছরের সংসার ভাঙল আমিরের !

| আপডেট :  ৩ জুলাই ২০২১, ১০:৫১ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৩ জুলাই ২০২১, ১০:৪৬ পূর্বাহ্ণ

শনিবার সকাল সকালই যেন বোমা ফাটালেন বলিউডের মিস্টার পারফেকশনিস্ট আমির খান। স্ত্রী কিরণ রাওকে সাথে নিয়ে এক যৌথ বিবৃতিতে আমির জানিয়ে দিলেন তারা ১৫ বছরে দাম্পত্যে ইতি টানতে চলেছেন। শুধু তাই নয়, এই বিবৃতিতেই আমির ও কিরণ জানিয়ে দিলেন তাদের এই সিদ্ধান্ত একেবারেই আচমকা নয়, বরং বহু আলোচনার পরেই ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত নিলেন তারা।

আমির ও কিরণের বিবাহবিচ্ছেদের খবর পাওয়ার পর স্বভাবতই বলিউডে শুরু হয়েছে জোর জল্পনা। ঠিক কী কারণে ১৫ বছর পর কিরণ ও আমির এই সিদ্ধান্ত নিলেন তা নিয়েও নানা খবর ঘুরছে বলি পাড়ায়। তবে এসবের মাঝে নিন্দুকদের নজর গিয়ে ঠেকেছে আমিরের ‘দঙ্গল’ ছবি থেকে বলিউডে পা রাখা অভিনেত্রী ফতিমা সানা শেখের দিকে! অনেকে মনে করছেন ফাতিমার প্রতি আমিরের দুর্বলতাই নাকি এই ডিভোর্সে অনুঘটক রূপে কাজ করেছে। খবর- সংবাদ প্রতিদিন।

অভিনেত্রী ফাতিমা সানা শেখের সাথে আমিরের সম্পর্কের কথা গুঞ্জনপাড়ায় নতুন নয়। ২০১৬ সালে মুক্তি পায় আমিরের দঙ্গল ছবি। এই ছবিতে সুন্দরী ফাতিমা সানা শেখকে সুযোগ দেন আমির। শোনা যায়, ফাতিমার অডিশন দেখে আমিরই সবুজ সংকেত দেখিয়েছিলেন। তারপর থেকেই আমির-ফাতিমাকে নিয়ে গুঞ্জন শুরু। বলিউডের নানা পার্টিতে আমিরের সাথে দেখা যেত ফাতিমাকে।

আমিরের হাতে হাত দিয়ে মুম্বইয়ের বহু জায়গাতেই ঘুরে বেড়াতে দেখা গিয়েছে ফাতিমা ও আমিরকে। এ খবর কিরণ রাওয়ের কানেও গিয়ে পৌঁছায়। তবে এই গুঞ্জন আরো বেড়ে যায়, আমিরের কথাতে আদিত্য চোপড়ার ‘ঠগস অফ হিন্দুস্তান’ ছবিতে ফাতিমার সুযোগ পাওয়ার পর থেকে। শোনা যায়, বহু প্রযোজক ও পরিচালককেও নাকি আমির নিজে ফোন করে ফাতিমাকে সুযোগ দেয়ার কথা বলেন। নিন্দুকেরা মনে করছেন ফাতিমার প্রতি আমিরের এই প্রেমই ধীরে ধীরে কিরণ রাওয়ের সংসারে আগুন লাগায়। আর যার ফল এই বিবাহবিচ্ছেদ।

আমির এ ব্যাপারে কখনই মুখ খুলতে চাননি। তবে এক সাক্ষাৎকারে আমির প্রসঙ্গে ফাতিমা বলেছিলেন, আমিরকে আমার ভালো লাগে। আর সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমাদের মধ্যে কোনো প্রেমের সম্পর্ক নেই। বরং আমিরকে আমি মেন্টর মনে করি। এই গুঞ্জন একেবারেই ঠিক নয়।

কিরণ রাওয়ের সাথে ডিভোর্সের ঘোষণার সাথে সাথে অনেকেই আমিরের পুরনো প্রেম নিয়ে মাতামাতি করছেন। তুলে আনছেন আমিরের প্রথম স্ত্রী রিনা দত্তের কথাও। কিরণ রাওয়ের সাথে প্রেমে পড়েই রিনার সাথে সম্পর্ক ভেঙেছিলেন আমির। সেই একই ফমুর্লা মেনে এবার কিরণ রাওয়ের ক্ষেত্রে কি ফাতিমার প্রেমকেই বেছে নিলেন আমির? প্রশ্ন উড়ছে বলিপাড়ায়।

পনেরো বছরের সংসারের ইতি টানলেন আমির-কিরণ
বলিউড অভিনেতা আমির খান ও কিরণ রাওয়ের বিচ্ছেদ হয়েছে। আজ আনুষ্ঠানিক এক বিবৃতিতে খবরটি নিশ্চিত করেছেন আমির খান ও কিরণ রাও। ১৫ বছরের সংসারে তাঁদের একটি ছেলে আছে।

বিবৃতিতে দুজন জানিয়েছেন, ‘১৫ বছরের সুন্দর একটি সফর। ছিল আনন্দ আর সুখ। বিশ্বাস, শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার ওপর গড়ে উঠেছে আমাদের সম্পর্ক। এখন আমরা নতুন একটি অধ্যায় শুরু করতে চাই। আমরা আর স্বামী–স্ত্রী নই। কিন্তু মা–বাবা হিসেবে দায়িত্ব পালন করব।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘বেশ আগেই আমরা বিচ্ছেদের কার্যক্রম শুরু করি। এখন আমরা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এটি বাস্তবায়নের চিন্তা করছি। আমরা আলাদা থাকব। কিন্তু আমাদের মধ্যে সম্পর্ক থাকবে। আমরা আমাদের সন্তান আজাদের জন্য একনিষ্ঠ মা–বাবা হিসেবেই থাকব, যাঁরা ওকে পালন করবেন, দেখে রাখবেন। আমরা একসঙ্গে চলচ্চিত্র, পানি ফাউন্ডেশন এবং অন্যান্য কাজগুলোও করব।’

তাঁরা আরও জানিয়েছেন, ‘আমাদের পরিবার ও বন্ধুদের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা। যাঁরা এ সময় ক্রমাগত সহযোগিতা করেছেন এবং আমাদের সম্পর্কের এই পরিণতি বুঝতে পেরেছেন।

তাঁদেরও ধন্যবাদ, যাঁদের ছাড়া এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া আমাদের জন্য কঠিন হতো। আমরা আমাদের শুভাকাঙ্ক্ষীদের অনুরোধ করছি, আমাদের জন্য প্রার্থনা করার জন্য। বিচ্ছেদকে শেষ পরিণতি নয় বরং একটা নতুন যাত্রা হিসেবে দেখুন।’
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন আমির খান ও কিরণ রাও।

২০০০ সালে ‘লগান’ সিনেমার সেটে আমির খান ও কিরণ রাওয়ের সম্পর্ক শুরু। ওই ছবির সহকারী পরিচালক ছিলেন কিরণ। ২০০৫ সালের ২৮ ডিসেম্বর তাঁরা বিয়ে করেন। ২০১১ সালে তাঁদের ঘরে আসে আজাদ রাও খান।

আমির খানের প্রথম স্ত্রী রিনা দত্ত। ১৬ বছর সংসারের পরে ২০০২ সালে তাঁদের বিচ্ছেদ হয়। তাঁদের ঘরে আছে ইরা ও জুনাইদ নামের দুই সন্তান।