সাংবাদিক রফিকের ‘মানবিকতার স্পর্শ’ দরিদ্র পরিবারে ফিরল জীবনের গতি

| আপডেট :  ১ জুলাই ২০২১, ০৮:২৭ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১ জুলাই ২০২১, ০৮:২৭ পূর্বাহ্ণ

সুমন ভট্টাচার্য, ময়মনসিংহ: দারিদ্রতা, সংকট আর বিপদে পড়লে মানুষ চেনা যায়। কথাটি বহু ব্যবহারে জীর্ণ হয়েছে ঠিকই, কিন্তু শব্দ কয়টির অভিঘাত বড় তীব্র, আবেদন ও চিরকালীন। সম্প্রতি ময়মনসিংহের ত্রিশালের গন্ডখলা গ্রামের বাসিন্দা ৬ বছর বয়সী শিশু দুরারোগ্য ব্যাধী অর্থাৎ বিরল রোগাক্রান্ত সালমান ও তার পরিবারের পাশে দাড়িয়ে নজির গড়ে চলেছেন বাংলাদেশ অনলাইন সংবাদপত্র সম্পাদক পরিষদ (বনেক) সভাপতি ও দৈনিক আমাদের কণ্ঠের বিশেষ প্রতিনিধি খায়রুল আলম রফিক । শিশুটি বিরল রোগাক্রান্ত। এরই মাঝে ভয়াবহ করোনাকাল । সুতরাং এই আকালের সম্ভাব্য পরিণাম সহজে অনুমেয়।

সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিকের মত মানুষরা এখনও মনুষ্যত্বের অসীম সম্ভাবনার কথা বলে। ঘোর দুর্দিনেও আশার প্রদীপটিকে জ্বালিয়ে রাখে। শিশু সালমানের রোগ যন্ত্রণা কিছুটা জুড়িয়ে দিয়ে ক্ষান্ত হয়নি সাংবাদিক রফিক । শিশুর আকুতি শুনে অসহায় পরিবারটিকে ঘর নির্মাণ করে দিয়ে মানবিক চেষ্টার প্রলেপও লাগিয়ে দিয়েছেন। বিরল রোগাক্রান্ত শিশু সালমানের শরীরের দুর্গন্ধে কাছে আসছিলনা কেউ। তার পিতা ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এরপর ঢাকায় চিকিৎসার্থে ঘুরতে ঘুরতে যথাযথ চিকিৎসা করাতে না পেয়ে ব্যর্থ একপর্যায়ে ভারাক্রান্ত হয়ে পড়েন। হঠাৎই বিষয়টি নজড়ে আসে সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিকের। তিনি শিশুটির করুণ অবস্থা দেখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও লাইভে সংবাদ প্রকাশ করেন। লাইভে সকলের কাছে সহযোগীতা কামণা করেন।

ত্রিশালের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোস্তাফিজুর রহমানের তত্ত্বাবধানে সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিক শিশুটিকে নিয়ে গিয়ে রাজধানী ঢাকাস্থ শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সস্টিটিউটে ভর্তি করেন। সেখানে দীর্ঘ ২ মাস চিকিৎসকদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও সুচিকিৎসা এবং দুটি অপারেশন করানোর ব্যবস্থা করেন রফিক । দীর্ঘ ৩ মাস চিকিৎসার পর এবার শিশুটির মাথায় ক্যান্সার দেখা দিয়েছে । চিকিৎসকরা উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন । এরই মাঝে শিশুটি তার দরিদ্র পরিবারের মাথা গোজার ঠাই হিসাবে একটি ঘর নির্মাণ ও পরিবারের জীবন কিছুটা মসৃণ করে তোলার আবেদন নিবেদন করে। শিশুটির সকল ইচ্ছা পূর্ণ করার মানসিকতা এবং সেবার ব্রত নিয়ে দৃঢ় থাকেন রফিক । সকলের সহযোগীতায় শিশুর সেই ইচ্ছাও পূর্ণ করতে চলেছেন তিনি ।

জানা গেছে বিরল রোগাক্রান্ত সালমানের পিতা পেশায় বাবুর্চি । অর্থাৎ সামান্য আয়ের মানুষ । ৪ মাস পূর্বে শিশুটির করুণ অবস্থা সাংবাদিক রফিকের দৃষ্টি কাড়ে । সাংবাদিক রফিকের আহবানে দেশ বিদেশের ১০ থেকে ১৫ জন সাহায্যার্থে এগিয়ে আসেন । কেও বিকাশের মাধ্যমে আবার কেউ নগদ টাকা পৌঁছে দিচ্ছে পরিবারের হাতে । সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিক জানান, আমার ডাকে সাড়া দিয়ে ইতিমধ্যে শিশুটির চিকিৎসা ও তার পরিবারের ঘর নির্মাণ কাজে অনেকেই এগিয়ে এসেছেন অনেকেই আসছেন ।

তন্মধ্যে সহযোগীতায় এগিয়ে এসেছেন। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আহমার উজ্জামান পিপিএম( সেবা), জেলা গোয়েন্দা সংস্থা ডিবির ওসি শাহ কামাল আকন্দ, ত্রিশাল থানার ওসি মাঈন উদ্দিন, ভালুকার মডেল থানার ওসি মাহমুদুল ইসলাম, ত্রিশাল পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব আনিছুজ্জামান আনিছ, জেলা আওয়ামীলীগ নেতা নবী নেওয়াজ সরকার, মুক্তাগাছা থানার ওসি মোহাম্মদ দুলাল আকন্দ , কলমাকান্দা থানার ওসি আব্দুল আহাদ খান, নেত্রকোনা যুবলীগের নেতা আজহারুল ইসলাম অরুন,ত্রিশাল আওয়ামীলীগ নেতা ইকবাল হোসেন, মোমেনশাহী ডিএস কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ড.মো: ইদ্রিস খান,উপজেলা যুবলীগ সভাপতি জুয়েল সরকার,ছাত্রলীগ সভাপতি হাসান মাহমুদ, ডাক্তার এম এ আজিজ, সমাজসেবক শ্যামল সাংবাদিক কামাল হোসেন,সেচ্ছাসেবকলীগ নেতা ইব্রাহীম খলিল নয়ন, ডাক্তার আব্দুল্লাহ,ময়মনসিংহ ডিবির এসআই আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।

খায়রুল আলম রফিক বলেন, ইসলাম ধর্ম অন্যের বিপদে এগিয়ে আসাকে বেশ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে এটাকে সওয়াবের কাজ বলে ঘোষণা করেছে। মনেপ্রাণে কামনা করি ও দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি অন্যের বিপদে এগিয়ে আসতে আসার বিকল্প নেই। কারণ মানুষ মানুষের জন্য।