আন্তর্জাতিক না’রী পা’চা’র চ’ক্রের স’দস্য নদীকে নিয়ে চা’ঞ্চল্যকর তথ্য দিল পু’লিশ

| আপডেট :  ২৩ জুন ২০২১, ০৬:০৭ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২৩ জুন ২০২১, ০৬:০৭ পূর্বাহ্ণ

পুলিশের হাতে গ্রে’ফ’তার আন্তর্জাতিক না’রী পা’চা’র চ’ক্রের অন্যতম স’দস্য নদী আক্তারের (২৮) স্বামী রাজীব হোসেন শীর্ষ স’ন্ত্রা’সী ছিলেন। ব’ ন্দুকযু’দ্ ধে তিনি নি’হত হওয়ার পর নদী পা’চা’র চ”ক্রে জ’ড়িয়ে পড়েন। পুলিশের হাতে গ্রে’ফ’তার আন্তর্জাতিক না’রী পা’চার চ’ক্রের অন্যতম সদস্য নদী আক্তার (২৮) একেক সময় একেক নাম ব্যবহার করত।

কখনো ইতি, কখনো জয়া আক্তার, কখনো জান্নাত, আবার কখনো নূরজাহান বা অন্য নাম। এসব নামে ২০১৫ সাল থেকে ভারত, মালয়েশিয়া ও দুবাইয়ে না’রী পা’চার করে আসছিল সে। মঙ্গলবার নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার মো. শহিদুল্লাহ এ তথ্য জানান। সোমবার নড়াইল ও যশোর সী’মান্তে অ’ভিযান চা’লিয়ে নদী আক্তার ইতিসহ মানব পা’চা’র চ’ক্রের ৭ স’দস্যকে গ্রে’ফ’তার করে হাতিরঝিল থানা পুলিশ।

তারা হলো- আল আমিন হোসেন, সাইফুল ইসলাম, আমিরুল ইসলাম, পলক মন্ডল, তরিকুল ইসলাম ও বিনাশ শিকদার। মো. শহিদুল্লাহ বলেন, ভিন্ন নামে তিন দেশে না’রী পা’চা’রের সমন্বয়ক হিসাবে কাজ করত নদী। পুলিশ তার ১০টি ছদ্মনাম পেয়েছে।

তিনি জানান, ২০০৫ সালে শীর্ষ স’ন্ত্রা’সী রাজীব হোসেনের সঙ্গে নদীর বিয়ে হয়। ওই বছরই ব’ ন্দুকযু’ দ্ধে রাজীব নি’হ’ত হয়। এরপর নদী পা’চা র চ’ক্রে জ’ড়িয়ে পড়ে। চ”ক্রে সে নদী পরিচয় দিলেও ভারতীয় আধার কার্ডে তার নাম জয়া আক্তার জান্নাত। বাংলাদেশি পাসপোর্টে তার নাম নূরজাহান। সাতক্ষীরা সী’মান্তে তার নাম জলি, যশোর সী’মান্তে প্রীতি নামে পরিচিত।

ডিসি বলেন, পা’চা’রের উদ্দেশ্যে আনা মে’য়েদের যশোর সী’মান্তের বিভিন্ন বাড়িতে রেখে সুযোগমতো ভারতে পা’চা’র করত চ’ক্র’টি। পা’চার করা প্রত্যেক না’রীর বিপরীতে স্থানীয় এক ইউপি সদস্য এক হাজার টাকা করে নিত। পা’চা’রকালে কোনো না’রী বি’জিবির কাছে আ’ট’ক হলে সেই ইউপি সদস্য আত্মীয় পরিচয় দিয়ে ছা’ড়িয়ে নিয়ে আসত।

আর গ্রে’ফ’তার হওয়া আল আমিন হোসেন ২০২০ সালে ঈদুল আজহার চারদিন পর না’রী পা’চা’র করতে গিয়ে বি’এসএফের গু’ লিতে আ’হ’ত হয়। তিনি বলেন, পা ‘চারের উদ্দেশ্যে আনা মে’য়েদের তার বাড়িতে রেখে সুযোগমতো ভারতে পাঠানো হতো। সে মা’দ’ক ব্যবসায়ও জ’ড়িত। তার নামে যশোরের শার্শা থানায় দুটি মা’দ’ক মা’ম’লা রয়েছে।

আর সাইফুল ইসলামের শার্শার পাঁচভু’লট বাজারে মোবাইল রিচার্জ ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ব্যবসা রয়েছে। মা’নব পা’চা’রে জ’ড়িত ইস্রাফিল হোসেন খোকন, আব্দুল হাই, সবুজ, আল আমিন ও একজন ইউপি সদস্য তার (সাইফুল) মাধ্যমে মা’নব পা’চা’র থেকে অর্জিত অর্থ বিকাশে লেনদেন করত। পুলিশের উপস্থিতি টের পেলে সে মানব পা’চা’রে জ’ড়ি’ত ব্’যক্তিদের স’তর্ক করে দেয়।

পুলিশের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, বিকাশ ট্রানজেকশনে ব্যবহৃত মোবাইলটি জ’ব্দ করা হয়েছে। গ্রে’ফ’তার পলক মন্ডল যশোরের মনিরামপুর ঢাকুরিয়া স্কুল থেকে এসএসসি পাস করে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশপরগনা জে’লার গাহঘাটা থানার নলকড়া গ্রামে নানা বাড়িতে যায়। সেখানে পঞ্চগ্রাম স্কুলে ক্লাস সেভেনে ভর্তি হয়ে মাধ্যমিক শেষ করে। পরে বিএমএস ডিগ্রি নিয়ে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা শুরু করে। বেনাপোলের ইস্রাফিল হোসেন খোকন, ভারতে অবস্থানকারী বকুল ওরফে খোকন, তাসলিমা ওরফে বিউটি ও চ’ক্রের অন্য সদস্যদের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে।

‘আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা নিতে আসা গ্রাম্য দরিদ্র মে’য়েদের ব্যাঙ্গালুরুতে তাসলিমা ওরফে বিউটি নামে একজনের কাছে পাঠানোর মাধ্যমে না’রী পা’চা’রের হাতেখড়ি পলক মন্ডলের। পরে বাংলাদেশ থেকে পা’চা’র করা মে’য়েদের আধার কার্ড প্রস্তুত করে দেওয়ার পাশাপাশি নিরাপদ ‘সেফ হোমে’ অবস্থান এবং ব্যাঙ্গালুরে নির্ধারিত স্থানে পাঠানোর দায়িত্ব নেয়।

এছাড়াও সে ভারতীয় আধার কার্ড ও ভারতের নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রদত্ত আইডি কার্ডধারী। সে উত্তর প্রদেশের গোরাক্ষপুর জে’লার বড়ালগঞ্জ থানার নেওয়াদা গ্রামেও থেকেছে। তার কাছ থেকে ভারতীয় আধার কার্ড, সেদেশের নির্বাচন কমিশনের দেওয়া আইডি কার্ড, ভারতীয় আয়কর বিভাগের দেওয়া আইডি কার্ড, ভারতীয় সিম কার্ড ও একজন ভি’ক’টিমের আধার কার্ড জ’ব্দ করা হয়েছে।’

ডিসি শহীদুল্লাহ বলেন, গ্রে’ফ’তার হওয়া বিনাশ সিকদার নড়াইলে দশম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে। সে বেনাপোলে বাসা ভাড়া নিয়ে পাসপোর্ট ফরম পূরণের কাজ করত। তার স্ত্রী সোনালী সিকদার ভারতীয় নাগরিক। বেনাপোলে পাসপোর্ট ফরম পূরণের কাজ করতে গিয়ে ইস্রাফিল হোসেন খোকন, আব্দুল হাই সবুজ ও মা’নব পা’চারে জ’ড়িত আরও কয়েকজনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়।

পরিচয়ের সূত্র ধরে সে মা’নব পা”চারের জ’ড়িয়ে পড়ে। যশোর ও নড়াইল থেকে ভারতে উচ্চ বেতনে চাকরি প্র’লোভন দেখিয়ে আনা না’রীদের খোকন, আল আমিন, তরিকুল, আমিরুল ও আরও কয়েকজনের মাধ্যমে সীমান্ত পার করে ভারতীয় দালালদের কাছে পৌঁছে দেয়। তার কাছ থেকে বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট ও দুটি মোবাইল জ’ব্দ করা হয়েছে।

গ্রে’ফতারকৃতরা ভারতীয় পরিচয়পত্র কীভাবে তৈরি করছে এমন প্রশ্নের জবাবে ডিসি বলেন, এগুলো তৈরিতে ভারতীয় লোকেরা সহয়তা করেছে। নদীর সঙ্গে টিকটক হৃদয়ের ঘনিষ্ঠতা জানতে চাইলে তিনি বলেন, নদী, হৃদয় বাবুসহ আরও দু-একজনের নাম আগে উল্লেখ করেছিলাম। তাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।

সাতক্ষীরা ও যশোরে মানব পা’চারের সঙ্গে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ততার বি’ষয়ে ডিসি বলেন, প্রাথমিক জি’জ্ঞাসাবাদে জানতে পেরেছি স্থানীয় কিছু জনপ্রতিনিধি না’রী পা’চারে জ’ড়িত। তবে ত’দন্তের শেষ পর্যায়ে বলতে পারব কারা কারা পা’চারে সহযোগিতা করেছেন। যাদের বি’রুদ্ধে মা’নব পা’চারের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাবে তাদের বি’রু’দ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।