বিউটি পার্লারে চাকরির প্র’লোভনে দুই বোন ও খালার জীবনে লো’মহর্ষক ঘটনা

| আপডেট :  ২১ জুন ২০২১, ০৪:২১ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২১ জুন ২০২১, ০৩:৪৭ পূর্বাহ্ণ

টার্গেট বাংলাদেশি অ’সহায় না’রী। চাকরির প্র’লোভন দিয়ে সীমান্ত পার করে নিয়ে যাওয়া হয় এক অন্ধকার জগতে। ভারতের ব্যাঙ্গালুরুতে। প’তিতাবৃত্তিতে রাজি না হলে নেমে আসে অ’মানবিক নি’র্যা’তন। দল বেঁ’ধে ধ”ণ। মা’রধর। না খাইয়ে দিনের পর দিন যৌ’ন নি’র্যাতন চা’লিয়ে বা’ধ্য করা হয় যৌ’নকর্মী হতে। এমন লো’মহর্ষক ঘটনা ঘটছে প্রায়ই।

এ বি’ষয়ে গত শনিবার ডিএমপি’র হাতিরঝিল থানায় মা’মলা করেছেন নি’র্যাতনের শি’কার এক ত’রুণী। প্রথমে তার বড় বোনকে ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর কৌশলে নিয়ে যাওয়া হয় ছোট বোন ও তাদের খালাকে। খালা, ভাগ্নিকে একই কায়দায় যৌ’ন নি’র্যাতন করা হয় ভারতে। শেষ পর্যন্ত ছোট বোন পা’লিয়ে দেশে ফিরলেও এখনো ফেরা হয়নি তার বড় বোন ও খালার। তারা কোথায় আছেন তাও জানেন না। এ বি’ষয়ে মা’মলা দা’য়েরের পর ত’দন্তে নেমেছে পুলিশ।

জানা গেছে, অভাবের কারণে মাধ্যমিক স্কুলের গণ্ডি পার হতে পারেননি বড় বোনটি। টাইলস মিস্ত্রি পিতার উপার্জনে চলছিলো ছয় সদস্যের সংসার। হন্যে হয়ে একটা চাকরি খুঁজছিলেন যাত্রাবাড়ী এলাকার এ বাসিন্দা। লেখাপড়ার দৌড় কম থাকায় তা জুটছিলো না। কিন্তু আশার আলো দেখান ভারতে থাকা নদী নামে এক নারী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নদীর সঙ্গে পরিচয়। নদী তাকে আশ্বস্ত করেন। স্বপ্ন দেখান। নদী জানান, তিনি ভারতের ব্যাঙ্গালুরুতে বিউটি পার্লারে চাকরি করেন। প্রতি মাসে বেতন ৩০ হাজার টাকা। নদী তাকে সেখানে চাকরির প্রস্তাব দেন। প্রথম মাসে বেতন কম, তারপর বাড়বে। বড় বোন রাজি। কিন্তু ভিন দেশে মেয়েকে পাঠাতে তার মা রাজি হচ্ছিলেন না।

ঘটনার শুরু গত বছরের নভেম্বরে। নদী জানান, ব্যাঙ্গালুরুতে পার্লারে পাঁচ মেয়েকে নিয়োগ দেবে। ভারতে যেতে চাইলে দ্রুত জানাতে হবে। কিন্তু পাসপোর্ট নেই। নদী জানান, পাসপোর্ট ভিসার ঝামেলা নেই। এপার-ওপারে তাদের লোক আছে। যশোর সীমান্ত দিয়ে তাকে ভারতে পাঠানোর ব্যবস্থা করবে তারা। বেনাপোলের ইসরাফিল হোসেন খোকন নামে এক ব্যক্তির ফোন নম্বর দিয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন নদী। নদীর কথানুসারে ঢাকা থেকে বাসযোগে ২০শে নভেম্বর যশোরের শার্শায় যান।

সেখান থেকে এই চ’ক্রের তরিকুল নামে একজন ইজিবাইকে করে পৌঁছে দেয় আল-আমিন নামে একজনের বাসায়। পরদিন রাত ৯টার দিকে সীমান্ত পার করে ওপারে নিয়ে যায় ইসরাফিল হোসেন খোকন, তরিকুল, আব্দুল হাই সবুজ ও সাইফুল। পরদিন ২২শে নভেম্বর দুপুরে কথা হয় তার ছোট বোনের সঙ্গে। জানান, তিনি তখন ব্যাঙ্গালুরুতে তাসলিমা বিউটি নামের যশোরের এক নারীর বাসায়। দু’দিন পর পার্লারের কাজে যোগ দিবেন।

তিন-চার দিন পর নদীর নম্বরে কল দিয়ে তা বন্ধ পান ছোট বোন। পরে কথা হয় তাসলিমার সঙ্গে। তাসলিমা জানান, তার বড় বোন কাজে যোগ দিয়েছেন। ১০-১২ দিন পরও একই অবস্থা। যোগাযোগ হচ্ছে না বড় বোনের সঙ্গে। তাসলিমা জানান, সে অ’সুস্থ। হাসপাতালে ভর্তি। ডাক্তার কথা বলতে নিষেধ করেছেন। নদী তখন দেশে। নদী নিজেই ছুটে যান তাদের যাত্রাবাড়ী কাজলার বাসায়। নদীর টার্গেট তখন ছোট বোন।

নদী জানান, অ’সুস্থ বোনকে দেখাশোনা করার জন্য পরিবারে কেউ সেখানে গেলে ভালো হয়। মা যেতে চান। নদী আগ্রহ না দেখিয়ে জানান, তিনি বয়স্ক মানুষ। নিজেই অ’সুস্থ। তার চেয়ে ছোট বোনকে পাঠালে ভালো হয়। দুই বোন সেখানে চাকরি করলে ভালোই হয়।

নদীর প্রস্তাবে রাজি হন তাদের মা। তার ছোট খালা সঙ্গে যাবে। নদী একবাক্যে রাজি। ১৬ই ডিসেম্বর কল্যাণপুরে খালা-ভাগ্নিকে যশোরগামী বাসে তুলে দেয় নদী। সেখানে ঘটে লো’মহর্ষক নি’র্যাতনের ঘটনা।