মা’য়ের প’র’কীয়া প্রে’মিকের সঙ্গে স’ম্প’র্ক ছিল মে’য়ের

| আপডেট :  ২০ জুন ২০২১, ১০:১২ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২০ জুন ২০২১, ১০:০৪ পূর্বাহ্ণ

রাজধানীর কদমতলীতে বড় মে’য়ে মেহ’জাবিন ই’স’লা’ম মুনের হাতে মা, বাবা ও বোনের খু’ন হওয়ার ঘটনায় নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসছে। গতকাল শনিবার সকালে জুরাইনের মুরাদপুরে একটি ভবনের দ্বিতীয় তলা থেকে মাসুদ রানা (৫০), তার স্ত্রী’ মৌসুমী ই’স’লা’ম (৪০) ও মে’য়ে জান্নাতুলের (২০) ম’রদেহ উ’দ্ধা’র করা হয়। অ’চেতন অবস্থায় মে’য়ের জামাই শফিকুল ই’স’লা’ম ও নাতনি তৃপ্তিকে উ’দ্ধা’র করে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়।এ ঘটনায় ওই পরিবারের বড় বোন মেহ’জাবিন ই’স’লা’ম মুনকে গ্রে’প্তা’র করা হয়েছে। তাকে জি’জ্ঞাসাবাদ করছে পু’লিশ।

বিভিন্ন সূত্রের দাবি, মৌসুমীর স্বামী মাসুদ রানা প্রায় ২৫ বছর মধ্যপ্রাচ্যে ছিলেন। তিন মাস আগে তিনি দেশে ফেরেন। স্বামী প্রবাসে থাকার সময়ে মৌসুমী অ’নৈ’তিক স’ম্প’র্কে জড়িয়ে পড়েন। কয়েকজন যৌ’নকর্মীকে দিয়ে তিনি দীর্ঘদিন অসামাজিক কার্যকলাপ চা’লিয়েছেন। এমনকি নিজের দুই মে’য়েকেও দিয়ে দেহ ব্যবসা করাতে তিনি। এক সময় তার কথিত প্রে’মিকের সঙ্গে মেহ’জাবিনের বিশেষ স’ম্প’র্ক গড়ে ওঠে। তাদের অন্তরঙ্গ অবস্থার একটি ভিডিওচিত্র পরিবারের কেউ ধারণ করে রেখেছিলেন।

বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার ব্যক্তিগত স’চিব আমিনের সঙ্গে মেহ’জাবিনের প্রে’মের স’ম্প’র্ক ছিল বলে জানা গেছে। এতে আ’প’ত্তি ছিল পরিবারের। মৌসুমী এ ব্যাপারে জানার পর মে’য়েকে একরকম জো’র করেই শফিকুলের সঙ্গে বিয়ে দেন।

ইয়াসমিনের খালা ইয়াসমিন বলেন, পাঁচ বছর আগে পারিবারিকভাবেই শফিকুল ও মুনের বিয়ে হয়। এর কিছুদিন পরই মেহ’জাবিনের আগের স’ম্প’র্ক নিয়ে দাম্পত্য ক’লহের সৃষ্টি হয়। বিয়ের ছয় মাসের মা’থায় আমিনকে হ’ত্যা করেন শফিকুল। এর আগে তিনি শাশুড়ি মৌসুমী ও খালা’শাশুড়ি শিউলিকে দিয়ে আমিনকে ডেকে নেন। এ কারণে হ’ত্যা মা’ম’লায় ওই দুজন ও মেহ’জাবিনকে আ’সা’মি করা হয়। তিনি বলেন, এ মা’ম’লায় গ্রে’প্তা’র হয়ে ছয় মাস কা’রাগারে থাকার পর জা’মিন পান শফিকুল।

পরে মেহ’জাবিনের ছোট বোন জান্নাতুলের ও’পর নজর পড়ে তার। তিনি নানাভাবে উ’ত্ত্য’ক্ত করতে থাকেন। বি’ষয়টি নিয়ে একপর্যায়ে জামাতার বি’রু’দ্ধে মা’ম’লা করেন মৌসুমী। আবার তার বি’রু’দ্ধে পাল্টা মা’ম’লা করেন জামাতা।ইয়াসমিন বলেন, শফিকের সঙ্গে আমা’র বোন পেরে উঠতে না পেরে তার ছোট মে’য়ে জান্নাতুল ই’স’লা’মকে (শফিকের শালিকে) কা’রাগারে দিয়ে দেন। শফিক তদবির করে ৫ মাস পর তাকে কা’রাগার থেকে বের করে নিয়ে এসে আবার তার সঙ্গে অ’নৈ’তিক কাজ করেন।

‘এ নিয়ে আমা’র ভাগ্নি ও বোনের সঙ্গে শফিকের ক’লহ লেগেই থাকত। ৪ বছর আগে সফিক আমা’র বোনকে (তার শাশুড়ি) হ’ত্যার উদ্দেশ্যে গায়ে আ’গু’ন জ্বা’লিয়ে দেয়। চিকিৎসা করতেও বা’ধা দেয়। দরজা-জানালা বন্ধ করে আমা’র বোন ও ভাগ্নিকে প্রায়ই মা’রধর করত। এ বি’ষয়ে কদমতলী থা’নায় অ’ভিযোগ জানিয়ে কোনো ফল না পেয়ে কোর্টে মা’ম’লাও করা হয়েছে।’ইয়াসমিনের অ’ভিযোগ, পরিক’ল্পি’তভাবেই শফিকুল এই হ’ত্যাকা’ণ্ড ঘটিয়েছেন। তিনি একজন ঠান্ডা মা’থার খু’নি।

এ ঘটনায় তিনি স্ত্রী’কে জি’ম্মি করে হ’ত্যায় সহায়তা করতে বা’ধ্য করেছেন। নইলে তাদের শি’শুস’ন্তান তৃপ্তিকে মে’রে ফেলার হু’মকি দিয়েছেন। একা তিনজনকে হ’ত্যা করা সম্ভব নয় বলেই তিনি স্ত্রী’কে কাজে লাগিয়েছেন। তাকে বোঝানো হয়েছে, চলমান অশান্তি নিরসনে এটাই কার্যকর পন্থা। আর ঘটনার পর তিনি মুনকে বুঝিয়েছেন, তুমি পু’লিশে ফোন করে হ’ত্যার দায় স্বীকার করো। কয়েকদিন পর আমি তোমা’র জা’মিনের ব্যবস্থা করব।

ঘা’ত’কের চাচাতো বোন পরিচয় দেওয়া শিলা যুগান্তরকে বলেন, গত দুদিন আগে স্বামী-স’ন্তানকে নিয়ে মায়ের বাড়িতে বেড়াতে আসে মেহ’জাবিন। এসেই তার ছোট বোন জান্নাতুলের সঙ্গে তার স্বামীর প’র’কীয়া রয়েছে বলে বাবা-মাকে অ’ভিযোগ করে।এ নিয়ে অনেক কথা কা’টাকাটি হয়। তার জেরেই হয়তো এ হ’ত্যাকা’ণ্ড ঘটিয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতা’লে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শফিকুল দাবি করেন, তার স্ত্রী’ মুন অনেকদিন ধরেই উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন করে আসছিলেন।

এ নিয়ে তাদের মধ্যে ক’লহ হতো। মা-বাবার সঙ্গেও স’ম্প’র্ক ভালো ছিল না তার স্ত্রী’র। শুক্রবার তাকে ও মে’য়েকে নিয়ে বাবার বাড়িতে যান মুন। সেখানে রাতে তিনি সবাইকে নানারকম খাবার খেতে দেন। ওই খাবারে সম্ভবত কিছু মেশানো ছিল, কারণ খাওয়ার কিছুক্ষণ পরই তিনি অ’চেতন হয়ে পড়েন। এরপর কী ঘটেছে কিছুই তার জানা নেই।

ডিএমপির ওয়ারি বিভাগের উপকমিশনার শাহ ইফতেখার আহমেদ বলেন, ‘মেহ’জাবিনের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছি, বাবা না থাকায় তার মা তাকে এবং তার ছোট বোনকে (নি’হ’ত জান্নাতুল) দিয়ে দেহ ব্যবসা করাত। এসব নিয়ে প্র’তিবাদও করেছিল সে, কিন্তু কোনো ফল হয়নি।‘তার বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর ছোট বোনকে দিয়ে ব্যবসা চলছিল। এর মধ্যে তার স্বামী ছোট বোনের সঙ্গে স’ম্প’র্ক গড়ে তোলে।’এছাড়া মেহ’জাবিনের বাবা মাসুদ রানা ওমানে আরেকটি বিয়ে করেছেন।

এসব মিলিয়ে দীর্ঘদিনের জমে থাকা ক্ষো’ভ থেকে পরিবারের সবাইকে হ’ত্যার পরিকল্পনা করেন বলে মেহ’জাবিন পু’লিশকে জানিয়েছেন।তবে মেহ’জাবিনের একার পক্ষে এই ঘটনা ঘটানো কতটুকু সম্ভব, এ নিয়ে পু’লিশের মধ্যে স’ন্দেহ দেখা দিয়েছে।কদমতলী থা’নার ওসি জামাল উদ্দিন মীর বলেন, ‘মেহ’জাবিনের স্বামীকেও আম’রা স’ন্দেহের বাইরে রাখছি না। তাকেও জি’জ্ঞাসাবাদ করা হবে। সম্পত্তির বি’ষয়ও এখানে রয়েছে। ত’দ’ন্তে এসব আসবে।’