পরীমনির বাসা যেন ম’দের বার, প্রতিদিনই বসে আসর

| আপডেট :  ১৭ জুন ২০২১, ০৩:৩৩ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১৭ জুন ২০২১, ০৩:১৮ অপরাহ্ণ

বনানী ১৯/এ সড়কের ১২ নম্বর বাড়ির পাঁচ তলাতে ঢুকলে যে কেউ প্রথম দফায় চ’মকে উঠবেন। সারি সারি বিশ্বের নামিদামি ব্র্যান্ডের ম’দের বোতল সাজানো দেখে মনে হবে পশ্চিমা দেশগুলোর কোন বিলাসবহুল বারে ঢুকে পড়েছেন আপনি। তবে পাঁচতলার এ ফ্ল্যাটে ঢুকে আপনি বার বা যাই মনে করেন না কেন আসলে এটাতে থাকেন দেশের জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা পরীমনি। নামিদামি ম’দের বোতলে ঘেরা ও বারের আদলে সাজানো এটি পরীমনিরই বাসা। এই বাসাতেই নিয়মিত ম’দের আসর বসান পরীমনি। রাতভর চালান পার্টি ও গান বাজনা। পরীমনির বাসার এমনই চিত্র উঠে এসেছে এ প্রতিবেদকের অনুসন্ধানে।

গত ১৩ জুন রাতে ধ’;র্ষ’;ণ ও হ’ত্যা চেষ্টার অ’ভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেন হালের জনপ্রিয় এ নায়িকা। পরীমনির নিজ বাসাতেই আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলন কাভা’র করতে যান বিভিন্ন গণমাধ্যমের একাধিক সাংবাদিক। এদের মধ্যে অনেকই আবার বিনোদন বিটের বাইরের লোক। এমনই কয়েকজন সংবাদিক পরীমনির বাসাতে ঢুকে শুরম্নতেই দ্বিধা-দ্বন্ধে পড়ে যান। পরীমনির বাসার ঠিকানা ভু’ল করে কি কোন বারে ঢুকে পড়েছেন কিনা এই চিন্তা পেয়ে বসে তাদের। কারণ, ড্রইং রুমে ঢুকতেই হাতের বাম পাশে দেখা যাবে গ্লাসে ঘেরা বিশাল এক রুম। স্বচ্ছ কাচে ঘেরা এই রুমে সাজানো সারি সারি বিদেশী ব্র্যান্ডের ম’দের বোতল। সুন্দর ডেকোরেশনের নানা সাইজের রেকে সারি সারি বোতল দাঁড়িয়ে আছে।

আবার কিছু বোতল কাত করে শুইয়ে রাখা হয়েছে। ছোট ছোট টেবিলের ও’পরও রাখা আছে বোতল। চকচকে-ঝকঝকে এসব ম’দের বোতলের গুনে শেষ করার মত নয়।

গ্লাসে ঘেরা এই বিশাল রুম জুড়ে ম’দের বোতল আর ম’দ খাওয়ার আয়োজনের প্রয়োজনীয় উপকরণ স্থানে স্থানে গোছানো আছে। বিভিন্ন সাইজের আর ডিজাইনের গ্লাস দেখলে যে কেউ বিমহিত হয়ে যাবেন। তৃষ্ণা বাড়বে পানীয় প্রিয়দের। পরীমনির বাসায় গেলে যারা কখনোই ম’দ খাননি তারাও চাকচিক্য, আভিজাত্য আর নামিদামি ব্রান্ডে বিমোহিত হয়ে এক চুমুক খেতে চাইবেন।

এদিকে, ঢাকা বোট ক্লাবে পরীমনিক কা’ণ্ডের পর বেশ কিছু বি’ষয় খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে পু’লিশ। নিয়ম ভে’ঙে কয়েকটি সোশ্যাল ক্লাবে মধ্যরাতে পরীমনির যাতায়াত এবং ম’দ্যপানের খোঁজখবর করছে পু’লিশ। এরইমধ্যে বনানী থা’না পু’লিশ গুলশানের একটি অ’ভিজাত ক্লাবের বার বয়ের বক্তব্য জানতে যোগাযোগ করেছে।

এ ছাড়া আরও কয়েকটি অ’ভিজাত ক্লাবের কর্মক’র্তারা পু’লিশকে জানিয়েছেন, মধ্যরাতে নিয়ম ভে’ঙে পরীমনির জন্য বার খোলা রাখতে হয়। তারা পু’লিশকে বলছেন, ম’দের আসর বসানোর গল্পও। বোট ক্লাবকা’ণ্ডের আগের রাতে গুলশান অল কমিউনিটি ক্লাবে ঢোকেন পরীমনি। মধ্যরাতে সেখানে তিনি ভা’ঙচুরও করেন। এটি ত’দ’ন্তে গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় গুলশান থা’না পু’লিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

পু’লিশের একাধিক কর্মক’র্তা জানান, ৮ জুন বুধবার রাতে বোট ক্লাবে পরীমনিকা’ণ্ডের ত’দ’ন্তে নেমে কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে সা’প বের হচ্ছে। তার ব্যাপারে জানাতে ঢাকার একাধিক সোশ্যাল ক্লাবের কর্মক’র্তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মক’র্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন।

তারা পু’লিশ ও গো’য়েন্দাদের জানিয়েছেন, পরীমনি তার কস্টিউম ডিজাইনার জিমিসহ কয়েকজন তরুণ-ত’রুণী নিয়ে প্রায়রাতেই অ’ভিজাত ক্লাব ও তারকা হোটেলে ঘুরে বেড়াতেন। তাদের সঙ্গে নিয়ে ম’দ পান করতেন মধ্যরাত পর্যন্ত। এক্ষেত্রে প্রায় রাতেই তার কারণে ক্লাবের আইন ভাঙা হতো। বিশেষ করে হাফপ্যান্ট পরে তার সঙ্গী হওয়া জিমি ড্রেসকোডের তোয়াক্কা করতেন না কখনোই। এক ক্লাবে সময় কাটিয়ে তিনি যেতেন আরেক ক্লাবে।

গুলশান পু’লিশের একাধিক কর্মক’র্তা জানান, গত ৩ জুন রাত ১২টার পর পরীমনি, তার সাবেক স্বামী তামিম হাসান ও দুটি বেস’রকারি টেলিভিশনের দুজন কর্মক’র্তা পরিচয়ধারীকে নিয়ে গুলশানের একটি অ’ভিজাত ক্লাবে যান। তখন তারা ম’দ্যপ ছিলেন। ক্লাবে ঢুকে পরীমনি ও অন্যরা বার ব্যবহার করতে চান। বার বয় জালাল এতে অসম্মতি জানালে পরী মনি তার গালে চড় মা’রেন। ক্লাব কর্মক’র্তারা বেসামাল আচারণের প্র’তিবাদ করলে তিনি নিজেই পু’লিশে কল করেন। গুলশান থা’না পু’লিশের দুটি পিকআপ ভ্যান সেখানে যায়। পরে তারা বুঝিয়ে পরীমনিকে বাসায় পাঠান। এ খবর পু’লিশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। সীমানা ঘেষা এলাকা হওয়ায় গতকাল বুধবার বনানী থা’না পু’লিশ ওই ক্লাবের কর্মক’র্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বার বয় জালালের কাছ থেকে সেই রাতের ঘটনা জানতে চায়। ক্লাবটির সদস্য (প্রশাসন) এজন্য পু’লিশের কাছে সময় চেয়েছেন বলে জানা গেছে।

এদিকে একাধিক ক্লাব কর্মক’র্তা জানিয়েছেন, সব ক্লাবের ড্রেসকোড এবং নিয়ম রয়েছে। রাত ১১টার পর ক্লাব ও বারে সার্ভিস বন্ধ রাখার নিয়ম। পরীমনি যতোবার যে ক্লাবে অ’তিথি হয়ে গেছেন সেখানেই এর ব্যত্যয় ঘটেছে। বনানীর একজন ব্যবসায়ী জানান, পরীমনি কথায় কথায় পু’লিশের উচ্চপদস্থ কর্মক’র্তার নাম ব্যবহার করেন। সেলিব্রেটি হওয়ায় পু’লিশও তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলে মজা পায়। গায়ে দামি পারফিউম মেখে বিলাসবহুল গাড়িতে ঘুরে বেড়ানো পরীর মুখে ম’দের গন্ধ থাকলেও কেউ তাকে আ’ট’কাতে সাহস করেন না। গাড়ির বহর নিয়ে ছুটে চলা পরীমনি দলবল নিয়ে ক্লাবের বারে ঢুকে দামি ব্রান্ডের বিদেশি ম’দের বোতল হাতিয়ে নেন বলে অ’ভিযোগ পাচ্ছে পু’লিশ। তার সঙ্গের লোকজন বারের বিল পরিশোধ করেন বলে জানা গেছে।

ঢাকা মহানগর গো’য়েন্দা পু’লিশের উত্তর জোনের একজন পদস্থ কর্মক’র্তা জানিয়েছেন, দেশের সব অ’ভিজাত ক্লাবের সদস্যদের সঙ্গে পরীর ঘনিষ্টতা রয়েছে। তাদের রেফারেন্সে তিনি সেখানে যাতায়াত করেন। তারকা হোটেলের বারেও তার যাতায়াতের তথ্য পেয়েছে পু’লিশ।