তিন প্রাণের বিনিময়ে ত্রিভুজ প্রেমের সমাপ্তি

| আপডেট :  ১৪ জুন ২০২১, ০৪:২০ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১৪ জুন ২০২১, ০৪:১৪ পূর্বাহ্ণ

সমাপ্তি ঘটেছে ত্রিভুজ প্রেমের। কোনো সালিশ অথবা মীমাংসায় নয়, তিন প্রা’ণের বিনিময়ে সব কিছুর ইতি টেনেছেন এক পুলিশ কর্মকর্তা। প’রকীয়া সহ্য করতে না পেরে দ্বিতীয় স্ত্রী ও তার পুত্র এবং স্ত্রীর বর্তমান প্রেমিককে প্রকাশ্যে দিবালোকে মাথায় গু’লি করে হ’’ত্যা করেছে ওই পুলিশ কর্মকর্তা।

লোমহর্ষক হ’’ত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে রোববার বেলা ১১টার কুষ্টিয়া শহরের কাস্টমস মোড় এলাকায়। ঘা’তক সৌমেন কুমার খুলনার ফুলতলা থানায় কর্মরত। নি’হতরা হলো- স্ত্রী আসমা খাতুন, তার পুত্র রবিন ও প্রেমিক শাকিল হোসেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নি’হত আসমা এএসআই সৌমেনের দ্বিতীয় স্ত্রী। আর সৌমেন আসমার তৃতীয় স্বামী। ৫ বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। আসমা দ্বিতীয় স্বামী রুবেল হোসেনের শি’শুস’ন্তান রবিনকে নিয়ে কুষ্টিয়া শহরের আড়ুয়াপাড়ায় বাসা ভাড়া নিয়ে সৌমেনের সঙ্গে বসবাস করতেন।

দুই বছর পূর্বে সৌমেন কুষ্টিয়া থেকে খুলনায় বদলি হন। এরই মধ্যে আসমার সঙ্গে বিকাশকর্মী শাকিলের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। বি’ষয়টি জেনে বেশ কয়েকবার শাকিলের কাছ থেকে দূরে থাকার আহবান জানিয়েও কোনো কাজ হয়নি।

রোববার সকালে আসমাকে স’ন্তানসহ সৌমেনের বর্তমান পোস্টিং খুলনার ফুলতলা থানায় নিয়ে যাওয়ার জন্য সকালে আসমার মায়ের বাবর আলী গেটের বাসা থেকে বের হয়। এ সময় আসমা সৌমেনের সঙ্গে খুলনায় যাবে না বলে জানায়। এ নিয়ে আসমা আর সৌমেনের কথাকা’টাকাটি হয়।

একপর্যায়ে সৌমেন বলে শাকিল বললে তুমি যাবা কিনা? তখন মোবাইলে শাকিলকে সৌমেন বলে কোথায় আছ, শাকিল বলে আমি কাস্টমস মোড়ে আসি। সেখানে সৌমেন আসমাকে সঙ্গে নিয়ে হাজির হয়। একপর্যায়ে কথা বলতে বলতে সৌমেন নিজের মাজায় থাকা স’রকারি পি’স্তল দিয়ে গু’লি চা’লায়।

কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি সাব্বিরুল ইসলাম জানান, হ’’ত্যাকাণ্ডে জ’ড়িত স’ন্দেহে আ’টক পুলিশ সদস্য এএসআই সৌমেন কুমার মাগুরার বাসিন্দা এবং বর্তমানে খুলনা ফুলতলা থানায় কর্মরত বলে জানতে পেরেছি। জি’জ্ঞাসাবাদে সৌমেন নি’হত আসমাকে তার স্ত্রী বলে দাবি করেছে।

তিনি বলেন, ধারণা করা হচ্ছে সৌমেনের স্ত্রী আসমার সঙ্গে বিকাশকর্মী শাকিলের কোনো সম্পর্ক বা আর্থিক লেনদেনের ঝামেলা থাকতে পারে। অথবা ডি’ভোর্সি আসমা সৌমেন ও শাকিলের মধ্যে ত্রিমুখী কোনো সম্পর্কের দ্ব’ন্দ্বে এ হ’’ত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। আমরা সব বি’ষয় বিবেচনায় নিয়ে ত’দন্ত করছি।

নি’হত আসমার মা জানান, সৌমেনের সঙ্গে আসমার সম্পর্ক ভালো ছিল না। সৌমেন আসমার ও’পর নি’র্যাতন চালাত। তাই আমার কাছে থাকতো। সকালে খুলনায় যাওয়ার জন্য সৌমেনের সঙ্গে আসমা ছেলেসহ বাসা থেকে বের হয়। কিন্তু কী কারণে আমার মেয়ে ও নাতিকে গু’লি করে হ’’ত্যা করল তা বলতে পারব না।
তিনি বলেন, শাকিল নামের কাউকে আমি চিনি না। তবে আসমা মোবাইলে প্রায়ই একজনের সঙ্গে কথা বলতো।

আসমার ভাই হাসান জানান, আমার বোনের আগে আরও দুইবার বিয়ে হয়েছিল। প্রথম স্বামীর নাম সুজন। তাদের ঘরে ৯ বছরের সুমি নামে একটি মেয়ে আছে। সেই মেয়ে তার বাবার কাছে থাকে। আসমার দ্বিতীয় স্বামী রুবেল। তাদের একমাত্র স’ন্তান রবিন। ৫ বছর আগে সৌমেনের সঙ্গে আসমার বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের পর থেকে আসমার ও’পর নি’র্যাতন করতো। এএসআই সৌমেনের গ্রামের বাড়ি মাগুরা জে’লার শালিখা উপজে’লার কসবা গ্রামে। সেখানে তার প্রথম স্ত্রী ও পরিবার রয়েছে।

এদিকে আসমার প্রেমিক শাকিলের সাঁওতা গ্রামের বাড়িতে গিয়ে জানা গেছে তারা আসমা নামের কাউকে চেনেন না।

এলাকাবাসী জানান, শাকিল ভালো ছেলে হিসেবে সবাই চেনে। তিনি বিকাশের কর্মী হিসেবে কাজ করতেন। রোববার সন্ধ্যায় ম’য়নাত’দন্ত শেষে আসমা এবং রবিনের লা’শ আসমার মা এবং শাকিলের লা’শ তার পরিবারের লোকজন গ্রহণ করে বাড়িতে নিয়ে যান।