সন্তানকে ডাক্তার দেখাতে হাসপাতালে গিয়ে থানাহাজতে বাবা

| আপডেট :  ১৩ জুন ২০২১, ০২:১৯ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১৩ জুন ২০২১, ০২:১৯ অপরাহ্ণ

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শি’শুস’ন্তানের চিকিৎসা করাতে গিয়েছিলেন একটি ও’ষুধ কোম্পানির এলাকা ব্যবস্থাপক ওমর সিদ্দিক (৩৩)। সেখানে অন্য এক সহকর্মীর সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার সময় বাগ্‌বি’তণ্ডায় জড়ান আনসার সদস্যদের সঙ্গে। পরে তাঁকে পাঠানো হয় নগরের রাজপাড়া থানায়।

আজ রোববার সকালে হাসপাতালের বহির্বিভাগে এ ঘটনা ঘটে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, ও’ষুধ কোম্পানির কর্মীরা আনসার সদস্যদের গা’য়ে হা’ত তু’লেছেন। তাই তাঁদের পুলিশে দেওয়া হয়েছে। আর থা’নাহাজতে থাকা অবস্থায় ওমর সিদ্দিক বলেছেন, আনসার সদস্যরা আগে তাঁদের গায়ে হা’ত তোলেন। তিনিসহ তাঁর আরও দুই সহকর্মী সেলিম রেজা (৩৩) ও সোহেল রানাকে (৩০) আ’টক করা হয়েছে।

ওমর সিদ্দিকের বাড়ি চারঘাট উপজে’লার বরকতপুর গ্রামে। অন্য দুজনের বাড়ি ডাকরা গ্রামে। ওম’রের স’ন্তানের বয়স সাড়ে তিন বছর। অন্য সহকর্মীদের সঙ্গে তাঁকে হা’জতে নেওয়ার সময় তাঁর স’ন্তানকে এক স্বজনের মাধ্যমে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

ওমর সিদ্দিক বলেন, তাঁর বাচ্চার কানে চর্মরো’গের স’মস্যা। সকালে বাচ্চাকে নিয়ে তিনি হাসপাতালের বহির্বিভাগের এক চিকিৎসককে দেখান। তাঁর সহকর্মী সোহেল রানাও হাসপাতালের ৩৪ নম্বর কাউন্টারে ডাক্তার দেখাতে এসেছিলেন। ছেলের চিকিৎসা নেওয়ার পর তিনি সোহেল রানার সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলেন। এরই মধ্যে আনসার সদস্যরা তাঁকে ওই দিকে যেতে বা’ধা দেন। এ নিয়ে তাঁরা বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন।

একপর্যায়ে একজন আনসার সদস্য তাঁর গালে একটি চড় মা’রেন। তখন কোলে থাকা বাচ্চাটি মাটিতে পড়ে যায়। সহকর্মী সেলিম রেজা তখন বাচ্চাটিকে মাটি থেকে টেনে তোলার পাশাপাশি চড় মা’রার প্র’তিবাদ করলে তাঁকেও হে’নস্তা করেন আনসার সদস্যরা। পরে তাঁদের হাসপাতালের পরিচালকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। পরিচালক তাঁদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার পরামর্শ দেন।

রাজপাড়া থানায় গিয়ে দেখা যায়, ছেলে কোলে নিয়ে ওমর সিদ্দিক দাঁড়িয়ে আছেন। হাতে তিনটি ও’ষুধের বোতল। পাশে তাঁর দুই সহকর্মী। সোহেল রানাও হাসপাতালের একটি টিকিট দেখান।

সোহেল রানা বলেন, কয়েক দিন আগে টিকিট কে’টেছিলেন। কিন্তু ডাক্তার দেখানোর সুযোগ পাননি। তাই আজ রোববার তিনি ওই টিকিটে ৩৪ নম্বর কাউন্টারে ডাক্তার দেখাতে গিয়েছিলেন।

রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে থেকে এজাহার পেলে সে অনুযায়ী তাঁরা আইনি ব্যবস্থা নেবেন।

ঘটনাটির বি’ষয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্তব্যরত আনসার বাহিনীর প্লাটুন কমান্ডার মধু মিয়া কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, ও’ষুধ কোম্পানির কর্মীরা হাসপাতালে এসে রো’গীর ব্যবস্থাপত্রের ছবি তুলে নেন। অনেক রো’গীর গো’পনীয় চিকিৎসার ব্যাপার থাকে। এভাবে ব্যবস্থাপত্রের ছবি তোলা ঠিক নয়। এ জন্য তিনি আনসার সদস্যদের বি’ষয়টির দিকে নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। তাঁরা তাঁদের দায়িত্ব পালন করছিলেন। এ নিয়েই ও’ষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের সঙ্গে তাঁদের বাগ্‌বিতণ্ডা শুরু হয়।

শামীম ইয়াজদানী বলেন, আনসার সদস্যরা তাঁকে বলছেন, কোম্পানির কর্মীরা তাঁদের গায়ে হাত তুলেছেন। গায়ের জামা ছিঁড়ে দিয়েছেন। কোম্পানির কর্মীরা পাল্টা অ’ভিযোগ করেছেন। তাই বি’ষয়টি দেখার জন্য পুলিশকে জানানো হয়। সূত্রঃ প্রথম আলো