হঠাৎ আলোচনায় সাবের হোসেন চৌধুরী

| আপডেট :  ১৩ জুন ২০২১, ১১:১৫ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১৩ জুন ২০২১, ১১:১৫ পূর্বাহ্ণ

আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সাবের হোসেন চৌধুরী একটি ধূমকেতুর মত। আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক স’চিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তিনি নিজের অবস্থান ধরে রাখতে পারেননি। নক্ষ’ত্রের পতনের মত এখন তিনি রাজনীতির অঙ্গনে অপ্রান্ত। মাঝে মাঝে তিনি বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনায় আসেন।

এবার তিনি আলোচনায় এসেছেন সং’সদের কার্যক্রম নিয়ে। গতকাল এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন যে, সং’সদ সদস্যদের কাজ শুধু হ্যাঁ না বলা। তিনি বাজেটে সং’সদ সদস্যদের কোন ভূমিকা ছিল না বলেও উল্লেখ করেন এবং সাবেক অর্থমন্ত্রী সঙ্গে বর্তমান অর্থমন্ত্রী তুলনা করেন। তার এই বক্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। হঠাৎ করে সাবের হোসেন চৌধুরী কেন এই ধরনের বক্তব্য দিলেন তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলাপ-আলোচনা চলছে।

১৯৯৬ সালের নির্বাচনের আগে আকস্মিকভাবে সাবের হোসেন চৌধুরী আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে আসেন। এর আগে তিনি কখনোই আওয়ামী লীগ করেননি। সেই সময় ঢাকার একটি আসনে তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয় আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী মোজাফফর হোসেন পল্টুকে বাদ দিয়ে। নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি এক নতুন সংস্করণ চালু করেন এবং নতুন ধারার নির্বাচনী প্রচারণা করে তিনি বিজয়ী হন।

এই নির্বাচনে বিজয়ের পরপরই সাবের হোসেন চৌধুরী বাংলাদেশ ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের (বিসিসিবি) সভাপতি এবং উপমন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পান। ২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিপর্যয়ের পর সাবের হোসেন চৌধুরী আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিতে পরিণত হন। একাধারে তারে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক স’চিব হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু ওয়ান-ইলেভেনের সময় ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক এবং প্রশ্ন উত্থাপিত হয়। বিশেষ করে মাইনাস ফর্মুলার ব্যাপারে তাঁর ভূমিকা ছিল বলে আওয়ামী লীগের কেউ কেউ মনে করেন।

যদিও এ ব্যাপারে কোন তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কিন্তু সাবের হোসেন চৌধুরীর সঙ্গে ওয়ান-ইলেভেনের সময় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার একটা দূরত্ব তৈরি হয়। এই দূরত্বের সূত্র ধরেই পরবর্তীতে ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে রাজনৈতিক অঙ্গনে একরকম নির্বাসিত হয়ে যান সাবের হোসেন চৌধুরী। তবে অন্যান্য সংস্কারপন্থীরা মনোনয়ন না পেলেও সাবের হোসেন চৌধুরীর ক্ষেত্রে তেমন হয়নি। কিন্তু এই দূরত্বের ধারা অব্যাহত রেখেছিল। ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়ে ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের সভাপতি পদে সাবের হোসেন চৌধুরীকে মনোনীত করা হয় এবং সাবের হোসেন চৌধুরী সেখানে বিজয়ী হন। এটি ছিল গত ১২ বছরে সাবের হোসেন চৌধুরীর একমাত্র প্রাপ্তি।

কিন্তু রাজনৈতিক বি’ষয় থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নেন। বিশেষ করে বাংলাদেশ ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের (বিসিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের সঙ্গে তার দূরত্ব এবং বি’রোধ সর্বজনবিদিত। দলের অনেক ইস্যু নিয়েই তিনি কথা বলেন যা সুশীল সমাজের কাছে গ্রহণযোগ্য এবং আওয়ামী লীগে অপ্রান্ত সাবের হোসেন চৌধুরী হঠাৎ করে বাজেট নিয়ে এই ধরনের কথাবার্তা রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন

বিতর্ক তৈরা করা হচ্ছে। অনেকে মনে করছেন যে, সাবের হোসেন চৌধুরী কি তাহলে সুশীল সমাজকে নিয়ে যে রাজনৈতিক মেরুকরণ হচ্ছে সেই মেরুকরণের অংশ। আবার কেউ কেউ মনে করছেন এসব কিছুই নয়, নিজের হতাশা থেকেই সাবের হোসেন চৌধুরী এরকম মন্তব্য করেছেন।