বাবা বললেন হতে হবে বিসিএস ক্যাডার, ৪ দিন পরই মেয়ের মৃত্যু

| আপডেট :  ৬ জুন ২০২১, ০৫:৪১ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৬ জুন ২০২১, ০৫:৪১ অপরাহ্ণ

বাবার স্বপ্ন ছিল তার মেয়ে ইসরাত জাহান তুষ্টি বিসিএস ক্যাডার হবে। সন্তান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়ায় সেই স্বপ্নে লেগেছিল জোর হাওয়া। দিন চারেক আগে মেয়ে হল ছেড়ে ভাড়া বাসায় উঠলে তাকে ফোনে নিজের স্বপ্ন পূরণ করার কথাই জানিয়েছিলেন বাবা। কিন্তু নিয়তির নির্মম পরিহাসে চারদিনের মাথায় মারা গেছে তুষ্টি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্রী ইসরাত জাহান তুষ্টির আকস্মিক মৃত্যুতে তার গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনাতে শোকের মাতম চলছে। একমাত্র মেয়েকে হারিয়ে পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। কেউই মেনে নিতে পারছে না তার মৃত্যু। মেধাবী এই শিক্ষার্থীকে হারিয়ে শোকে স্তব্ধ এলাকাবাসী। তুষ্টিকে শেষ বারের মতো এক নজর দেখতে বাড়িতে ভিড় করছে এলাকাবাসী।

মৃত ইসরাত জাহান তুষ্টি নেত্রকোনা জেলার আটপাড়া উপজেলার সুখারী ইউনিয়নের নীলকন্ঠপুর গ্রামের মো. আলতাব উদ্দিনের একমাত্র কন্যা। তারা তিন ভাই, এক বোন। ভাইবোনের মধ্যে তুষ্টি ছিলো দ্বিতীয়।

জানা গেছে, আটপাড়া উপজেলার ধর্মরায় রামধনু উচ্চ বিদ্যালয় থেকে তুষ্টি প্রথম বিভাগে (জিপিএ-৫) পেয়ে এসএসসি পাশ করেন। এরপর মদন উপজেলার জোবাইদা রহমান মহিলা কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে তিনি এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তার বড় ভাই মাসুদ মিয়া সৌদি আরবে থাকেন। ছোট ভাই তুর্জয় মিয়া অষ্টম শ্রেণিতে পড়েন। আরেক ভাই মাহির বয়স ছয় বছর। মা হেনা আক্তার গৃহিণী। বাবা আলতাব হোসেন ধান চালের ব্যবসা করেন।

তুষ্টির বাবা মো. আলতাব উদ্দিন জানান, ৪ দিন আগে হল ছেড়ে তার মেয়ে ভাড়া বাসায় উঠে। তার সঙ্গে নেত্রকোনার আরো কয়েকজন মেয়ে ছিল। সে সময় তার সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথাও হয়েছিল। তিনি তখন মেয়েকে বলেন, বাবার মুখ উজ্জ্বল করার জন্য সে যেন বিসিএস ক্যাডার হয়। কিন্তু তার সেই আশা আর পূর্ণ হলো না। কিন্তু সকালে তুষ্টির বান্ধবীর কাছ থেকে মেয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে বাকরুদ্ধ তিনি।

তুষ্টির চাচা প্রভাষক ঈমাম হোসেন জানান, তার এই মৃত্যুতে কোন অভিযোগ না থাকলেও তদন্ত রিপোর্ট আসার পরে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। তুষ্টির শ্বাসকষ্টের সমস্যা ছিল বলেও জানান তিনি।