যে কারণে বিলীন হবার পথে হেফাজত

| আপডেট :  ২৫ মে ২০২১, ০৩:২২ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২৫ মে ২০২১, ০৩:২২ অপরাহ্ণ

একের পর এক কেন্দ্রীয় নেতারা গ্রে’প্তার হচ্ছেন। কেন্দ্রীয় কমিটি বিলোপ হয়েছে। নাম সর্বস্ব একটা আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হয়েছে। আহ্বায়ক কমিটির কার্যক্রম নেই। প্রথম দিকে নেতৃবৃন্দের গ্রে’প্তারের প্র’তিবাদ করেছিল কেন্দ্রীয় নেতারা এখন তাও বন্ধ হয়ে গেছে। হেফাজতের মূল নেতা, আমীর জুনায়েদ বাবুনগরী আতংকে দিন কা’টাচ্ছেন। অন্যান্য নেতারাও যে যার মতো গ্রে’প্তার এড়াতে ব্যস্ত।

হেফাজতের কোন কার্যক্রম নেই। হেফাজতের নেতারাই বলছেন, দল নয়, নিজেদের বাঁচাতেই ব্যস্ত তারা। আনুষ্ঠানিক ভাবে বিলীন না হলেও, হেফাজতের বিলীন হওয়াটা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। প্রশ্ন উঠেছে কেন এমন হলো? দু’মাস আগে যে হেফাজত স’রকারের প্রধান মাথাব্য’থার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল, এখন কেন তার এই হাল? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে পাওয়া গেছে একাধিক কারণ:

১. জনসমর্থনহীন মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন: হেফাজতের এই দশার মূল কারণ হিসেবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জনসমর্থনের অভাব। হেফাজতের সঙ্গে সাধারণ জনগণের কোন সম্পর্কই ছিলো না। মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের শক্তিতে ভর করে হেফাজত একধরনের ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে চেয়েছিল। এই কারণে হেফাজতের নেতাদের গ্রে’প্তারের পর জনগণ তাদের পাশে দাঁড়ায়নি। জনসমর্থনহীন সংগঠন যে শুধু ক্যাডার নিয়ে টিকে থাকতে পারে না, হেফাজত তার প্রমাণ।

২. হেফাজতের ভু’ল কৌশল: ২০১৩ সালের পর হেফাজতের সঙ্গে স’রকারের একটি সমঝোতা হয়েছিল। হেফাজতের অনেক দাবী এবং আবদার স’রকার মেনে নিয়েছিল। হেফাজত এটাকে স’রকারের দুর্বলতা মনে করেছিল। আরো চা’প দিয়ে আরো দাবী আদা’য়ের যে কৌশল, সেই কৌশল ভু’ল ছিলো। স’রকারকে চা’প দিতে গিয়ে নিজেই চা’পে পরে গেছে।

৩. নেতাদের অ’নৈতিক জীবনযাপন: হেফাজতের এই পরিণতির জন্য অনেকেই মনে করেন নেতাদের অ’নৈতিক জীবনযাপন দায়ী। বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক, আর্থিক অনিয়ম, দু’র্নীতি ইত্যাদি তথ্যগুলো যখন বেরুতে থাকে, তখন সাধারণ মানুষের মধ্যে হেফাজত সম্পর্কে নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হয়। তথাকথিত আলেম’দের এ ধরনের জীবনযাপন জনমনে ঘৃণা সৃষ্টি করে। ফলে জনগণ হেফাজতের নেতাদের গ্রে’প্তারকে স্বাগত জানায়।

৪. বিভক্তি: হেফাজত বিলীন হবার প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে বিভক্তি। আহম’দ শফীর মৃ’ত্যুর পরই কার্যত: বিভক্ত হয়ে পরেছিল হেফাজত। জুনায়েদ বাবুনগরীর কর্তৃত্ববা’দী মনোভাব নিয়ে সংগঠনটির মধ্যে অসন্তোষ ছিলো। তাই দলটির দু:সময়ে যে যার মতো করে সুযোগ নিয়েছে। ঐক্যবদ্ধ হতে পারেনি। ফলে, সংগঠন বিলীন হয়ে গেছে।

৫. স’রকারের কৌশল: হেফাজতের ব্যাপারে স’রকারের কৌশল ছিলো পরিণত এবং বিচক্ষণ। স’রকার আচমকা অ’ভিযান করে সবাইকে গ্রে’প্তারের বদলে ধরে ধরে সুনির্দিষ্ট অ’ভিযোগের ভিত্তিতে গ্রে’প্তার করেছে হেফাজত নেতাদের। ফলে হেফাজতও সংগঠিত হতে পারেনি। সূত্রঃ বাংলা ইনসাইডার