ভালুকায় আলোচিত সুমি হ’’ত্যা : গাড়ীর মালিক শরীফুল ও ড্রাইভার রায়হান এখন কোথায়!

| আপডেট :  ২৪ মে ২০২১, ০৮:৩২ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২৪ মে ২০২১, ০৮:২৬ পূর্বাহ্ণ

বিশেষ প্রতিনিধি: গাজীপুরের শ্রীপুর উপজে’লায় একটি গার্মেন্টেসে অপারেটর হিসাবে চাকুরি করতেন মো: নুর হোসেনের ১৮ বছর বয়সী মেয়ে লিপি আক্তার সুমি । গত বছরের ১৫ মার্চ রাত সোয়া ১০টার দিকে কর্মস্থল থেকে ফেরার পথে নিখোঁজ হন । অনেক খোঁজাখোজির পর তাকে না পেয়ে শ্রীপুর থানায় এবি’ষয়ে একটি জি’ডি করেন নূর হোসেন । জি’ডি নং- ১০০৭ । তাং- ১৮ /৩/২০ ।

এদিকে ময়মনসিংহের ভালুকা উপজে’লার আমতলী এসএমসি ওরস্যালাইন কোম্পানীর পূর্বপাশে বিলাইজোড়া ব্রিজের নীচ থেকে গত বছরের ১৯ মার্চ অ’জ্ঞাত ১৮ বছর বয়সী এক নারীর অর্ধ গলিত লা’শ উ’দ্ধার করে ভালুকা মডেল থানা পুলিশ । অ’জ্ঞাত হিসাবে পুলিশের উ’দ্ধারকৃত লা’শের কাপড় চোপড় দেখে লা’শের পরিচয় শনাক্ত করেন মেয়ের বাবা ।

এঘটনায় নূর হোসেন বা’দী হয়ে অ’জ্ঞাতদের আ’সামি করে ভালুকা মডেল থানায় একটি মা’মলা করেন । মা’মলা নং ৩২ । তাং ২০/ ০৩/ ২০২০ । থানা পুলিশ বা’দীর সামনে লা’শের সু’রতহাল করে রিপোর্ট ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগে পাঠায় । বা’দীর অ’ভিযোগ গ’লায় ওড়না পেঁ’চিয়ে দু’র্বৃত্তরা তার মেয়েকে হ’’ত্যা করে গু’মের উদ্দেশ্যে ঘটনাস্থলে লা’শ ফে’লে রেখে যায় । তৎপ্রেক্ষিতে ভালুকা মডেল থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) ইকবাল হোসেন ঘটনায় জ’ড়িত অ’ভিযোগে একই বছরের ২২ মে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ভালুকার জামিরদিয়া এলাকা থেকে রাকিবুল ইসলাম রাকিব (১৯) ও হৃদয় মিয়া (১৮) নামের দুই জনকে আ’টক করে । আ’টককৃতদের জি’জ্ঞাসাবাদে ১৬৪ ধারায় জ’বানব’ন্দিতে আরো কয়েকজনের নাম বলে । হৃদয়ের পরিবারের অ’ভিযোগ, তার ছেলেকে অ’মানুষিক নি’র্যাতন করে জো’রপূর্বক স্বীকার করানো হয় এবং আ’টককৃতদের মুখ থেকে স্থানীয় নিরীহ আরো কয়েক ব্যক্তির নাম বলাতে বা’ধ্য করা হয় ।

অনুসন্ধানে জানা যায়, যে গাড়ি দিয়ে মেয়েটিকে অ’পহরণ করা হয়, গাড়ির মালিক শরিফুল ইসলাম মুন্সি । পাবনা জে’লার বাসিন্দা শরিফুল ভালুকার মাষ্টারবাড়িতে বসবাস করে ব্যবসা পরিচালনা করেন । তার গাড়ির ড্রাইভার, রায়হান মিয়া । এই শরিফুল ও রায়হানকেও এসআই ইকবাল হোসেন একই সময় রাকিব ও হৃদয়ের সাথে আ’টক করেন । কিন্তু অ’জ্ঞাত কারণে আ’টকের ২দিন পর তাদেরকে ছেড়ে দেন । রাকিব ও হৃদয়কে দিয়ে রাব্বি নামের এক ব্যক্তিকে গাড়ি চালক সাজিয়ে ঘটনায় দায়ী হিসাবে নাম বলাতে বা’ধ্য করেন । পরবর্তীতে এসআই ইকবাল হোসেন তিনি রাব্বী ও জয়নাল আবেদীন ও মামুন নামের আরো ৩জনকে আ’টক করে ।

আ’টককৃতদের বাড়ি নেত্রকোনা জে’লায় । তারা গার্মেন্টস কর্মী । আশিকুর রহমান নামের আরো একজনকে এই মা’মলায় জড়নো হয় বলে অ’ভিযোগ । আশিকুর প’লাতক রয়েছে । জয়নাল আবেদীন, রাব্বী ও মামুন দীর্ঘ এক বছর যাবৎ কেন্দ্রীয় কা’রাগারে । হৃদয় জা’মিনে আছে । অনুসন্ধানে জানা যায়, আ’সামিদের পরিবার অ’সহায় ও হত দরিদ্র । তাদের পিতা ও ভাইয়েরা কেউ রিকশা ভ্যান চালক, কেউ মুড়ি বিক্রেতা আবার কেউ দিনমজুর । এই ঘটনায় দায়ীরা দিব্যি প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও চোখে পড়ে না পুলিশের । নিরীহ এই ব্যক্তিরা ন্যায় বিচার পাবে কিনা সংশয় প্রকাশ করেছেন পরিবারের লোকজন । আর প্রকৃত ঘটনায় জ’ড়িতদের আইনের আওতায় আসবে কিনা এনিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তারা ।
আ’সামিদের সিআইডির ফরেনসিক বিভাগ থেকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করানো হয়েছে । আ’সামিদের সংশ্লিষ্টতার আলামত পায়নি চিকিৎসকরা । এমর্মে সিআইডি আ’দালতে প্রতিবেদনও দাখিল করেছে ।

মা’মলার ত’দন্তকারী এসআই ইকবাল হোসেন বলেন, সুমির লা’শ ৩দিনে পচে গলে যাওয়ায় ফরেনসিক আলামত সংগ্রহ করা হয়নি বা পাওয়া যায়নি । ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসক সুমিকে ধ”ণের পর হ’’ত্যা করা হয়েছে মর্মে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে । গাড়ির মালিক ও চালককে গ্রে’ফতারের পর কেন ছেড়ে দেয়া হয়েছে জানতে চাইলে এসআই ইকবাল বলেন, আমি কাকে আ’টক করব কাকে ছেড়ে দিব এটা আপনাকে (প্রতিবেদক) জবাব দেব না । এটা অনেক জটিল বি’ষয় । ছেড়ে দেয়ার ঘটনায় থানায় জি’ডি করেছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, জি’ডি করিনি । এতসব ঘটনা রেখে এই মা’মলা নিয়ে কেন মেতেছেন বলে প্রতিবেদককে শাসান এবং প্রতিবেদকের সানেই আসামীর পরিবারকে হু’মকি দেন এই বলে যে, সাংবাদিকদের তথ্য দিলে ফাঁ’সিতে ঝুলানোর ব্যবস্থা করবো ।

ভালুকা মডেল থানার ওসি মাহমুদুল ইসলাম বলেন, আমি এই থানায় নতুন এসেছি । আগের ওসি মা’মলা রেকর্ড করেছেন । ১ বছরেও আ’দালতে কেন প্রতিবেদন দাখিল করা হয়নি জানতে চাইলে প্রশ্ন এড়িয়ে যান । এসআই ইকবাল হোসেনকে তার কাছে সকল কাগজপত্র জমা দেয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন ।