যাদের ভ’য়াবহ হা’ম’লায় ঘুম হা’রাম ই’স’রায়েলের (ভিডিও)

| আপডেট :  ১৫ মে ২০২১, ০৭:১৪ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১৫ মে ২০২১, ০৭:১০ পূর্বাহ্ণ

২০১৪ সালের পর এ বছর ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠন হামাসের সঙ্গে ই’সরায়েলি সে’নাবা’হিনীর সং’ঘর্ষ শুরুর পর এখন পর্যন্ত ই’সরায়েলে দেড় হাজারের বেশি রকেট ছু’ড়েছে হামাস। সেই সঙ্গে আরও হা’মলার হু’মকি দিয়েছে তারা। হামাসের রয়েছে শক্তিশালী সে’না সংগঠন। আর এর মূলে রয়েছে যে ব্রিগেড তার নাম ‘আল-কাসসাম’।

মূলত ইসরাইলের বি’রুদ্ধে প্রতিরোধ যু’দ্ধে পুরোভাবেই থাকে তারা। কী এই ‘আল-কাসসাম’ ব্রিগেড। মূলত ১৯৯০ সালের আগে হামাসের সা’মরিক শাখা সবার কাছে অপরিচিত ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে সে বছরে এ সা’মরিক শাখার কার্যক্রম উল্লেখযোগ্য হারে বৃ’দ্ধি পায়।

ফিলিস্তিনের শহর ইয়া’বাদে ১৯৩৫ সালে ব্রিটিশ সৈন্যদের গু’লিতে নি’হত সিরিয়ান মুক্তি আন্দোলনের নেতা ‘এজ্জেদিন-আল-কাসসাম’ এর নাম অনুসারে এ সা’মরিক শাখার নাম দেওয়া হয় ‘আল-কাসসাম’ ব্রিগেড। আল-কাসসাম ব্রিগেডেন আগে এবং হামাস প্রতিষ্ঠার অনেক আগে থেকেই ভিন্ন নামে চলে আসছিল, যার মধ্যে রয়েছে- ‘ফিলিস্তিন মুজাহেদিন’ এবং ‘মাজদ’ এর মতো গ্রুপ।

‘আল-কাসসাম ব্রিগেড’ ১ জানুয়ারি ১৯৯২ সালে তাদের প্রথম অপারেশনের ঘোষণা দিয়ে আত্মপ্রকাশ করে। এ ব্রিগেডের একটি অংশ দরনসশান নামের একজন ই’সরায়েলি রাবাইকে (ই’সরায়েলি ধর্মযাজক) হ’’ত্যা করে। এক ঘোষণার মাধ্যমে হামাস আল-কাসসাম ব্রিগেডকে তাদের মিলিটারি শাখা হিসেবে ঘোষণা করে। শুরুতে সীমিত সংখ্যক সৈন্য নিয়ে শুরু করা এ ব্রিগেড এখন গাজার একটা বড় অংশ জুড়ে আছে।

নিজেদের ২০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে এক বু’লেটিনে তারা জানান, কেবল গাজাতেই তাদের সংখ্যা ১০ হাজারের বেশি। এটি একটি সত্যিকারের সে’নাদল, যেটিতে সে’নাদের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে কোম্পানি, ব্যাটালিয়ন এবং ব্রিগেড।

বু’লেটিনে জানানো হয়, নর্দার্ন গাজা ব্রিগেড, গাজা ব্রিগেড, সেন্ট্রাল গাজা ব্রিগেড এবং সাউর্দার্ন গাজা ব্রিগেড নামে আল-কাসাসামের চারটি ব্রিগেড আছে; যার মূল সৈন্য সংখ্যা অন্তত ৫০-৬০ হাজার।

একটি পি’স্তল নিয়ে শুরু হয় এ সা’মরিক শাখা, এরপর অ’স্ত্রাগারে যোগ হয় একটি রাইফেল এবং এরপরে নিজেদের তৈরি মেশিন গান। ধীরে ধীরে ‘হোয়াজ’ এর মতো বি’স্ফোরক যন্ত্র, আত্মঘা’তী হা’মলার জন্য বেল্ট এবং দূর থেকে হা’মলার জন্য বি’স্ফোরক যন্ত্র যোগ হয়।

২০০১ সালের ২৬ অক্টোবর আল-কাসসাম ব্রিগেড স্থানীয়ভাবে তৈরি রকেট দিয়ে ই’সরায়েলে হা’মলা চালায়। এ রকে’টের নাম ছিল ‘কাসসাম-১’। এ ঘটনা উল্লেখ করে টাইমস ম্যাগাজিন ‘একটি পুরোনো রকেট যেটি মধ্যপ্রাচ্যকে বদলে দিতে পারে’ নামে শিরোনাম করে। ২০০২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ব্যবহার করা হয় ‘কাসসাম-২’। এর মধ্যে ২০১২ সালের এক যু’দ্ধে তারা এম-৭৫ ব্যবহার করে। এ সময় যু’দ্ধে তারা ই’সরায়েলের হাইফা শহরকে লক্ষ্য করে আর-১৬৯ রকেট ব্যবহার করে।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের সে’নাবা’হিনীর মতো আল-কাসসাম ব্রিগেডের ইঞ্জিনিয়ারিং, এরিয়াল, আর্টিলারি এবং আত্মঘা’তী স্কোয়াড রয়েছে। ই’সরায়েলের সা’মরিক আগ্রাসন মো’কাবিলার জন্য আল কাসসাম বিভিন্ন প্রযুক্তিগত উন্নতি সাধন করেছে। আল-কাসসামের মিলিটারি শাখা ‘আল-বাত্তার’, ‘আল-ইয়াসিন’ নামের কামান বিধ্বং’সী গোলা তৈরি করে, যেটি ইসরাইলের সবচেয়ে শক্তিশালী মেরকাভা কামান ধ্বং’স করতে সক্ষম।

এছাড়া তারা ই’সরায়েলের কিছু সে’নাকে আ’টক করতে সক্ষম হয়, যার মধ্যে একজন ছিল গিলাত শালিত। ২০০৫ সালে কর্তব্য পালনরত অবস্থায় তারা তাকে আ’টক করে। ২০১১ সালে ১০৫০ জন ব’ন্দি ফিলিস্তিনির বিনিময়ে তাকে মুক্তি দেয়। এই ব্রিগেড ২০০৮ এবং ২০১২ সালে গাজা উপত্যকায় ই’সরায়েলের হা’মলার বি’রুদ্ধে যু’দ্ধ করে ই’সরায়েলের অনেক ক্ষ’তি করে।

এবারের সং’ঘর্ষে এখন পর্যন্ত ই’সরায়েলের অভ্যন্তরে দেড় হাজারের বেশি রকেট ছু’ড়েছে হামাসের আল কাসসাম ব্রিগেড।

এদিকে ই’সরায়েলের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরের পর এবার ‘রামুন’ বিমানবন্দরে ক্ষে’পণাস্ত্র হা’মলা চা’লিয়েছে হামাস। হামাসের সা’মরিক শাখা কাসাম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু ওবায়দা বলেছেন, বৃহস্পতিবার ই’সরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলের রামুন বিমানবন্দরে মধ্য পাল্লার ক্ষে’পণাস্ত্র ‘আইয়াশ-২৫০’ এর সাহায্যে হা’মলা চা’লানো হয়েছে।

আল-কাসসাম ব্রিগেডের বর্তমান প্রধানের মান মোহাম্ম’দ-আল-দেইফ। ই’সরায়েল একাধিক বার তাকে হ’’ত্যার চেষ্টা করেছে। তার নেতৃত্বেই আরও শক্তিশালী হয়ে ই’সরায়েলের ঘুম হারাম করে দিচ্ছে আল-কাসসাম ব্রিগেড। ভিডিও