কৌশলের খেলায় সরকার-হেফাজত

| আপডেট :  ৮ মে ২০২১, ০৩:৪৮ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৮ মে ২০২১, ০৩:৪৮ অপরাহ্ণ

স’রকার এবং হেফাজত কেউ কাউকে বিশ্বাস করতে পারছে না। দুই পক্ষই মনে করছে যে, সুযোগ পেলেই একে অন্যকে ঘায়েল করবে। কিন্তু দুইজনই আপোষের খেলায় মেতেছে। আর এ কারণেই শেষ পর্যন্ত হেফাজতের পরিণতি কি হবে তা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত করা যায়নি। স’রকারের পক্ষ থেকে হেফাজতের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করা হয়েছে। কিছু কিছু শর্ত দেয়া হয়েছে। কিন্তু এইসব বৈঠক এবং শর্ত যাই হোক না কেন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা হেফাজতের দু’র্বৃত্তদের বি’রুদ্ধে সাঁড়াশি অ’ভিযান অব্যাহত রেখেছে।

যারা বিভিন্ন সময়ে তা’ণ্ডবের সঙ্গে জড়িত তাদের বি’রুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ সেটি অব্যাহত রাখা হয়েছে। আর অন্যদিকে হেফাজত এখন স’রকারের চারপাশে ঘুরঘুর করলেও, আত্মসমর্পণের চেষ্টা করলেও তারা সুযোগের অপেক্ষা করছে। হেফাজতের অনেক নেতাই বলছে, রমজান মাসটা যাক, কওমি মাদ্রাসাগুলো খুলুক তারপর দেখা যাবে। অর্থাৎ দুই পক্ষই কৌশলের খেলাই খেলছে এবং এই কৌশলের খেলায় শেষ পর্যন্ত কে জিতবে কে হারবে সেটাই দেখার বি’ষয়।

স’রকারের বি’রুদ্ধে ২০১৩ সালের ক’ঠোর অবস্থানে গিয়েছিলো এবং সেই ক’ঠোর অবস্থানের প্রেক্ষিতে হেফাজত কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলো। তারপর তারা স’রকারের সঙ্গে এক ধরনের সমঝোতায় এসেছিলো। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন যে, সে সময় হেফাজত কৌশলী হয়েছিলো। কারণ তখন যদি স’রকার হেফাজতের শীর্ষ নেতাদের বি’রুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেন, মা’মলাগুলোকে অব্যাহত রাখতের এবং হেফাজতকে নি’ষিদ্ধ করতেন তাহলে নতুন করে হেফাজত উপদ্রব স’রকারের জন্য তৈরি হতো না।

সেই সময়ের হেফাজত আত্মসমর্পণের কৌশলে গিয়েই স’রকারের সাথে এক ধরনের সখ্যতা করে। সখ্যতা করেই স’রকারের ও’পর নানা রকম চা’প সৃষ্টি করে এবং প্রভাব বিস্তার করে। যার ফলে স’রকার হেফাজতের অনেক দাবিই মেনে নিতে সক্ষম হয় এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে একটি ধারণা তৈরি হয় যে, স’রকার আর হেফাজতের মধ্যে একটি আপস সমঝোতা হয়েছে এবং স’রকার তার মৌলিক জায়গা থেকে সরে এসেছে ।

আর হেফাজত কৌশল করেই নিজেদের শক্তির সঞ্চয় করেছে এবং একটি পর্যায়ে তারা স’রকারের ও’পর আবার আ’ঘাত হা’নার চেষ্টা করেছে গত বছরের ডিসেম্বর থেকে। অনেকেই মনে করেন যে আহম’দ শফী এবং জুনায়েদ বাবুনগরীর মধ্যে মতপার্থক্য ছিলো। আহম’দ শফী উদারনৈতিক ছিলেন। আরা বাবুনগরী কট্টরপন্থী। এ ধরনের ধারণাগু’লি হেফাজতের উপর থেকে নাকচ করে দেয়া হয়। তারা মনে করেন যে, এটাই হেফাজতের কৌশল। হেফাজত স’রকারের কাছে আসতে চায় দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল আছে এরকম একটি ধারণা দিয়ে। কাজেই হেফাজতের মৌলিক চিন্তাটাই হলো জ’ঙ্গিবা’দী চিন্তা এবং তারা যে পক্ষই থাকুক না কেনো তারা একটি নির্বাচিত স’রকারকে হটিয়ে একটি ইসলামী বিপ্লবী স’রকার গঠন করতে চায়।

আর সে কারণেই হেফাজত এখন যখন নতুন করে স’রকারের সাথে আপোষ করতে চাইছে তখন তার সততা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ তারা আবার ২০১৩ সালের খেলা খেলছে কিনা। স’রকারের মাথায়ও বি’ষয়টি আছে। স’রকারও জানে যে হেফাজত যখনই বি’পদে পড়ে তখনই পায়ের কাছে ঘুরঘুর করে এবং বি’পদ থেকে উ’দ্ধার হয়ে গেলেই তারা তাদের স্বরূপে আবির্ভূত হয়। আর এ কারণেই স’রকার খেলছে।

স’রকারের সূত্রগুলো বলছে যে, স’রকার হেফাজতের সাথে কথা বলছে ঠিকই কিন্তু কারো সাথে কোন কথা বলতে অসুবিধা নেই। কিন্তু পাশাপাশি স’রকার কাজেই কাজটি করছে। স’রকার হেফাজতের হাত-পা ডাল-পালা সবই ভে’ঙে দিচ্ছে এবং এই প্রক্রিয়া যদি অব্যাহত থাকে তাহলে স’রকার হয়তো ২০১৩ সালের ভু’লটি করবে না এবং রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে হেফাজত নিঃশেষিত হবে। সূত্রঃ বাংলা ইনসাইডার