তোপের মুখে বাবুনগরী

| আপডেট :  ২ মে ২০২১, ১১:২২ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২ মে ২০২১, ১১:২২ পূর্বাহ্ণ

তোপের মুখে পড়েছেন হেফাজতের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী। সিনিয়র নেতাদের একের পর এক গ্রে’ফতার করা হচ্ছে অথচ তিনি বসে আছেন।

তার এই নীরবতা নিয়ে হেফাজতের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। গতকালও হেফাজতের একজন শীর্ষ নেতাকে গ্রে’ফতার করা হয়েছে এবং আজ সকালে আরেকজন নেতাকে গ্রে’ফতার করা হয়েছে। হেফাজতের নেতাদের যখন গ্রে’ফতার করা হচ্ছে, রি’মান্ডে নেয়া হচ্ছে তখন জুনায়েদ বাবুনগরীর নীরবতা হেফাজতের মধ্যে ক্ষো’ভ তৈরি হয়েছে।

হেফাজতের নেতারা মনে করছেন জুনায়েদ বাবুনগরী নেতৃত্ব দিতে এবং অভিভাবক্ত করতে ব্যর্থ হয়েছেন। হেফাজতের একজন নেতা বলেছেন সংগঠনের আমির হলেন সকলের অভিভাবক। অভিভাবকের দায়িত্ব হলো সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কিন্তু জুনায়েদ বাবুনগরী শুধু নিজের স্বার্থই দেখছেন আর কারও স্বার্থ দেখছেন না। যার ফলে নেতারা গ্রে’ফতার হওয়ার পরও জুনায়েদ বাবুনগরী আর কিছুই করছেন না। তারা উল্লেখ করেন যে, ২০১৩ সালের পর যখন স’রকার হেফাজতের নেতৃবৃন্দকে গ্রে’ফতার করা শুরু করেছিলো ঠিক সেই সময় আহম’দ শফী স’রকারের সঙ্গে দেনদরবার করেছিলেন এবং তাদের মুক্তির ব্যবস্থা করেছিলেন।

হেফাজতের নেতারা মনে করেন যে, সব সময় উ’গ্রবা’দী আন্দোলন করতে হবে এমন নয়, অনেক সময় স’রকারের সঙ্গে সমঝোতা করাও দরকার। হেফাজতের নেতাদের আ’টকের প্রেক্ষিতে হেফাজতের অনেক নেতাই এখন আত্মসমালোচনা করছেন। তারা মনে করছেন বাবুনগরীর উ’স্কানিতেই বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আগমনের প্র’তিবাদ জানায় হেফাজত। সেসময় জুনায়েদ বাবুনগরীর বোঝা উচিত ছিলো হেফাজত কতদূর যেতে পরবে, কতদূর যেতে পারবে না। আর সেই প্রেক্ষিতেই পরিকল্পনা করা উচিত ছিলো। কিন্তু সেই সময় আগ্রাসী মনোভাব দেখিয়ে স’রকারকে বা’ধ্য করে হেফাজতের বি’রুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে। জুনায়েদ বাবুনগরী এখন নিজে স’রকারের সঙ্গে একটি সমঝোতার চেষ্টা করছেন অথচ অন্যান্য নেতারা এই রমজান মাসে কা’রাগারে অথবা রি’মান্ডে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

এখন হেফাজতের নেতারা মনে করছেন যে, জুনায়েদ বাবুনগরী নেতৃত্ব দিতে ব্যর্থ হয়েছেন এবং স্বার্থপরের মতো আচরণ করছেন। যেসমস্ত নেতারা গ্রে’ফতার হয়েছেন তাদের পক্ষে নূন্যতম বিবৃতিও দেনটি বাবুনগরী। এমনকি তাদের পরিবার পরিজনের খোঁজ নেয়া, তাদের পাশে থাকা ইত্যাদি কাজও করেননি। জুনায়েদ বাবুনগরীর এই আচরণ প্রসঙ্গে হেফাজতের একজন নেতা বলেছেন, যাদেরকে গ্রে’ফতার করা হয়েছে তাদের অনেকেই দরিদ্র এবং তাদের আয় উপার্জন তেমন নেই। তাদের পাশে এই রমজান মাসে দাঁড়ানো বা অন্তত সমবে’দনা টুকু জানানোর কাজটিও জুনায়েদ বাবুনগরী করেননি। যার ফলে হেফাজতেই এখন বাবুনগরী তোপের মুখে পড়েছেন।

হেফাজতের কোনো কোনো নেতা বলছেন, পরিস্থিতি এমন অবস্থায় চলে গেছে যে যেকোনো পরিস্থিতিতে হেফাজতের নেতাকর্মীরা বা মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরাই আ’ক্রমণ করতে পারে বাবুনগরীকে। তাছাড়া হেফাজতের নেতাকর্মীরা যখন গ্রে’ফতার হচ্ছেন তখন তার সিন্ডিকে’টের সদস্যদের নিয়ে নতুন করে কমিটি করার কথা ভাবছেন বাবুনগরী।

তবে জুনায়েদ বাবুনগরী যে শুধু হেফাজতের তোপের মুখে আছে তা নয় স’রকারও আটঘাট বেধে নামছে বাবুনগরীকে গ্রে’ফতারের জন্য। আর এই ঘটনায় শেষ পর্যন্ত যদি জুনায়েদ বাবুনগরী গ্রে’ফতার হন তাহলে তার দুই কূলই চলে যাবে। কারণ হেফাজতের মধ্যে তার অবস্থা নড়বড়ে। হেফাজতেই তিনি এখন ভিলেনে পরিণত হয়েছেন। অন্যদিকে স’রকার যদি তাকে গ্রে’ফতার করে তাহলে জুনায়েদ বাবুনগরীর পর্ব বোধহয় এখানেই শেষ হয়ে যাবে।