মুখ খুললেন ঝর্ণা, যেভাবে জীবনে আবির্ভাব ঘটে মামুনুলের (ভিডিও)

| আপডেট :  ৩০ এপ্রিল ২০২১, ০৮:৩৪ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৩০ এপ্রিল ২০২১, ০৬:৩৫ পূর্বাহ্ণ

বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধ”ণের অ’ভিযোগে হেফাজতে ইসলামের আলোচিত নেতা মামুনুল হকের বি’রুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় একটি মা’মলা হয়েছে। মা’মলার বা’দী মামুনুল হকের কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্ণা। এই নারীর অ’ভিযোগ, ‘উনি (মামুনুল হক) আমার সরলতার সুযোগ নিয়ে আমার সঙ্গে অন্যায় করেছেন। অনেক দিন ধরে প্র’তারণা করেছেন। আমি রাষ্ট্রের কাছে এর সুষ্ঠু বিচার চাই।’

শুক্রবার (৩০ এপ্রিল) সকালে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানা থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জান্নাত আরা ঝর্ণা এসব কথা বলেন।এর আগে, সকালে সোনারগাঁ থানায় গিয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধ”ণের একটি অ’ভিযোগ দা’য়ের করেন তিনি। অ’ভিযোগের ভিত্তিতে মা’মলাটি লিপিবদ্ধ হয়।মা’মলার বি’ষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্ম’দ জায়েদুল আলম।

মা’মলার এজাহারে ঝর্ণা বলেছেন, ‘আমার সরলতার সুযোগ নিয়ে মামুনুল হক আমাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আমার সঙ্গে শা’রীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। আমাকে গত দুই বছর ধরে বিভিন্ন সময়ে ঢাকা ও ঢাকার পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকায় ঘোরাঘুরির নাম করে নিয়ে গিয়ে তার পরিচিত বিভিন্ন হোটেল ও রিসোর্টে রাত্রীযাপন ও বিয়ের আশ্বাস দিয়ে তার যৌ’ন লা’লসা চ’রিতার্থ করে। আমি বিয়ের কথা বললে সে আমাকে করব-করছি বলে নানান অজুহাতে কালক্ষেপণ করতে থাকে।’

গত ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানাধীন রয়েল রিসোর্টে জান্নাত আরা ঝর্ণাসহ মামুনুল হককে আ’টক করে স্থানীয় লোকজন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে উপস্থিত হলে ঝর্ণাকে নিজের দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে দাবি করেন মামুনুল।

এ ঘটনার বর্ণনা দিয়ে মা’মলার এজাহারে ঝর্ণা বলেছেন, সর্বশেষ গত ৩ এপ্রিল আমাকে ঘোরাঘুরির কথা বলে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ রয়েল রিসোর্টে নিয়ে আমার সঙ্গে শা’রীরিক সম্পর্ক করে। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে অবস্থানকালে স্থানীয় জনগণ আমাদের আকস্মিকভাবে আ’টক করে এবং আমাদের (মামুনুল হক ও আমার) পরিচয় জানতে চায়। আমরা কোনও সদুত্তর দিতে না পারায় স্থানীয় জনতার রোষাণলে পড়ি। পরবর্তীতে মামুনুল হকের অনুসারীরা রিসোর্টে হা’মলা করে আমাদের নিয়ে যায়।

এজাহারে তিনি আরও বলেন, এই ঘটনায় দেশব্যাপী ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠলে মামুনুল হক আমাকে আমার নর্থ সার্কুলার রোডের ভাড়া বাসায় যেতে না দিয়ে তার পরিচিত একজনের বাসায় অ’বৈধভাবে জো’রপূর্বক আ’টকে রাখে। এ সময় আমি আমার আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি। একপর্যায়ে সুকৌশলে আমার বড় ছেলে আব্দুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করে আমার দুরবস্থার কথা জানাই এবং আমাকে এই ব’ন্দিদশা থেকে উ’দ্ধারের জন্য আইনের আশ্রয় নিতে বলি। পরবর্তীতে ডি’বি পুলিশ আমাকে উ’দ্ধার করে আমাকে আমার বাবার জিম্মায় দেয়।

মামুনুল হকের সঙ্গে পরিচয়ের বর্ণনা দিয়ে ঝর্ণা তার এজাহারে বলেন, আমার সাবেক স্বামী শহীদুল ইসলামের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে ২০০৫ সালে মামুনুলের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। মামুনুল হকের সঙ্গে পরিচয়ের আগে আমাদের দাম্পত্য জীবন অত্যন্ত সুখে-শান্তিতে অতিবাহিত হচ্ছিল। স্বামীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে আমাদের বাসায় মামুনুল হকের অবাধ যাতায়াত থাকায় পরিচয়ের শুরু থেকেই আমার ও’পর তার লোলুপ দৃষ্টি পড়ে। যার ফলে আমাদের ছোটখাটো সাংসারিক মতানৈক্যের মধ্যে সে কৌশলে প্রবেশ করে ধীরে ধীরে আমাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দূরত্ব তৈরি করতে থাকে। মামুনুল হকের কু-মন্ত্রণায় আমাদের দাম্পত্য জীবন চ’রম বি’ষিয়ে ওঠে। সাংসারিক এই টানাপড়েনের মধ্যে মামুনুল হকের পরামর্শে ২০১৮ সালের ১০ আগস্ট বিবাহ বিচ্ছেদ হয়।

এজাহারে বলা হয়েছে, ‘বিচ্ছেদের পর আমি পারিবারিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে অ’সহায় হয়ে পড়ি। আমার অ’সহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে মামুনুল হক আমাকে সহযোগিতার নাম করে কৌশলে ঢাকায় আসার জন্য আমাকে প্ররোচিত করে। আমি একজন আলেমকে ভরসা করে সরল বিশ্বাসে তার সঙ্গে ঢাকায় চলে আসি।

ঢাকায় আসার পর শুরুতে আমাকে তার পরিচিত বিভিন্ন অনুসারীদের বাসায় আমাকে রাখে এবং নানান ভাবে আকার ইঙ্গিতে আমাকে কুপ্রস্তাব দিতে থাকে। একপর্যায়ে আমার পারিপার্শ্বিক অবস্থার কারণে তার প্রলোভনে পা দিতে বা’ধ্য হই। এরই ধারাবাহিকতায় তার পরামর্শে আমি কলাবাগানের নর্থ সার্কুলার রোডের একটি বাসায় সাবলেট ভাড়া নিয়ে থাকা শুরু করি এবং তার ঠিক করে দেয়া একটি বিউটি পার্লারে কাজ শিখতে থাকি।‘