প্রেম করে বিয়ে, স্বামীকে বাঁচাতে নিজের কিডনি দিলেন নববধূ!

| আপডেট :  ২৭ এপ্রিল ২০২১, ০৪:৪৯ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২৭ এপ্রিল ২০২১, ০৪:৪৮ পূর্বাহ্ণ

বলা হয়ে থাকে, ভালোবাসার জন্য মানুষ যে কোন কিছু করতে পারে। আর এমনই ভালবাসার এক অনন্য উদাহরণ তৈরি করেছেন সুবর্ণা রানী নামে এক নববধূ। বাঁচলে একসঙ্গে বাঁচবেন, মরলে একসঙ্গে মরবেন এমন প্রত্যয়ে স্বামী সঞ্জয় কুমারের জীবন বাঁচাতে স্বেচ্ছায় নিজের কিডনি দান করেছেন তিনি। নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কিডনি দানের এ ঘটনাটি ঘটেছে বগুড়ার ধুনট উপজেলায় মথুরাপুর ইউনিয়নের চরজোলাগাঁতী গ্রামে।

জানা গেছে, কয়েক বছর আগে চরজোলাগাঁতী গ্রামের অজিত হাওয়ালদারের ছেলে সঞ্জয় কুমারের (২৬) সাথে প্রতিবেশী গজেন হাওলাদারের কলেজ পড়ুয়া মেয়ে সুবর্ণা রানীর (১৯) প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরে পারিবারিক সম্মতিতে ২০২০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি তাদের বিয়ে হয়। কিন্ত বিয়ের দুই মাস পরই ২০২০ সালের ৪ এপ্রিল সঞ্জয় অসুস্থ হয়ে পড়েন। সঞ্জয়ের শারীরিক পরীক্ষার পর জানা যায় তার দুটো কিডনিই অকেজো হয়ে গেছে এবং সঞ্জয়কে বাঁচাতে চাইলে দ্রুত কিডনি প্রতিস্থাপন করতে হবে।

কিন্তু কিডনি কিনে তা প্রতিস্থাপন করতে প্রয়োজন লাখ লাখ টাকা। আর সঞ্জয়ের পরিবারের পক্ষে এত টাকা যোগাড় করা সম্ভব নয়। এ অবস্থায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সঞ্জয়ের মা ইতি রানী ছেলেকে একটি কিডনি দান করবেন। কিন্তু চিকিৎসক ইতি রানী শারীরিক পরীক্ষা করে দেখেন তার একটি কিডনি অকেজো হয়ে গেছে। তাই মায়ের পক্ষে ছেলেকে কিডনি দান করা সম্ভব হলো না।

আর এমন সময়ে এগিয়ে আসেন সুবর্ণা। সঞ্জয়ের সাথে তার স্ত্রী সুবর্ণা রানীর কিডনি মিলে যায়। আর বিষয়টি জানতে পেরে স্বেচ্ছায় কিডনি দিতে রাজি হয়ে যান সুবর্ণা রানী। এরপর দীর্ঘদিন চিকিৎসার পর ১১মার্চ ঢাকা শ্যমলী সিকেডি এন্ড ইউরোলজী হাসপাতালে দুই জনেরই একসাথে অপারেশন হয়।

সিকেডি এন্ড ইউরোলজী হাসপাতালে অধ্যাপক ডাঃ কামরুল ইসলামের নিবিড় পর্যবেক্ষণে বর্তমানে স্বামী-স্ত্রী দুজনই সুস্থ আছেন। আপাতত দু’জনে হাসপাতালের কাছেই একটি ঘর ভাড়া করে রয়েছেন। অন্তত তিন মাস হাসপাতালের কাছাকাছি থেকে প্রতিস্থাপন পরবর্তী প্রতিক্রিয়া সামাল দিতেই এই ব্যবস্থা নিয়েছেন তারা।