স্কুল পালানো তরুণ ব্যবসায়ী এখন ৪৫ হাজার কোটির মালিক

| আপডেট :  ২৬ এপ্রিল ২০২১, ০৪:২৭ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২৬ এপ্রিল ২০২১, ০৪:২৭ অপরাহ্ণ

স্কুলের ছকে বাঁধা পড়াশোনায় মন বসত না। মাথার মধ্যে ঘুরত হাজার ব্যবসায়িক পরিকল্পনা। ক্লাসে শিক্ষক পড়ানোর সময়েও সেই সব পরিকল্পনা নিয়েই নাড়াচাড়া করতেন। সেই করতে করতে মাত্র ১৪ বছর বয়সে এক বন্ধুর সঙ্গে শুরু করে দিলেন নিজের ব্যবসা। পুরনো মোবাইল ফোন কিনে তা অন্যকে বেশি দামে বিক্রি করা শুরু করলেন। মন্দ চলছিল না। কিন্তু ধরা পড়ে গেলেন মায়ের কাছে।

জোর করে তাঁকে ঘরে আটকে রাখা হল। গৎবাঁধা রাস্তায় চলতে বাধ্য করা হল। পড়াশোনা করতে বলা হল। ডিগ্রি অর্জন করার জন্য জোরাজুরি শুরু হল। একদিন বিরক্ত হয়ে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিলেন। স্কুলছুট সেই ছেলেই আজ ভারতের কনিষ্ঠতম কোটিপতি।

২০১০ সালে ‘জিরোধা’ নামে নিজের কোম্পানি খোলেন তিনি। মূলত শেয়ার বাজারে বিনিয়োগে সাহায্য করে তাঁর কোম্পানি। পাশাপাশি মিউচুয়াল ফান্ড এবং বন্ড কেনাবেচায় মধ্যস্থতার কাজও করে। ভারতজুড়ে ৩০ লাখ ব্যবহারকারী রয়েছে জিরোধা’র।

তিনি নিখিল কামাথ। ১৪ বছর বয়সে তাঁর প্রথম ব্যবসা ছিল ওই পুরনো মোবাইল ফোন কেনাবেচা। ব্যবসার কথা জানতে পেরে মা তাঁর সংগ্রহে থাকা সব মোবাইল ফোন শৌচাগারের জলে ফেলে দিয়েছিলেন।

তারপর ১৭ বছর বয়সে বাড়ি ছেড়ে চলে যান তিনি। প্রথমে একটি কল সেন্টারে কাজ শুরু করেন। বিকেল ৪টে থেকে রাত ১টা পর্যন্ত কাজ করতে হত তাঁকে। দিনের সময়টা কাজে লাগাতেন ব্যবসায়িক কাজে। তখন মাইনে পেতেন মাত্র ৮ হাজার টাকা।

শেয়ার বাজার, মিউচুয়াল ফান্ড এ সব নিয়ে বরাবরই কৌতূহল ছিল তাঁর। বিষয়গুলির গভীরে ঢুকতে প্রচুর পড়াশোনা করেছেন এক সময়। তাঁর বাবা ছিলেন ব্যাংককর্মী। ছেলের ইচ্ছা পূরণের জন্য তিনিই তাঁকে টাকা দিয়ে ব্যবসায় সাহায্য করেছিলেন প্রথম। এমনকি তাঁর উদ্যোগ এবং ইচ্ছাশক্তি দেখে কল সেন্টারের সহকর্মীরাও কিছু কিছু টাকা দিয়ে তাঁকে সাহায্য করেছিলেন।

ভাই নীতিন কামাথকে সঙ্গে নিয়ে তিনি শুরু করে দিলেন নিজেদের ব্যবসা। বর্তমানে তাঁদের সংস্থার দৈনন্দিন টার্নওভার প্রায় ১ কোটি ডলার। ২০২০ সালে ফোর্বসের প্রথম ১০০ ধনীর তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। ফোর্বসের হিসাব অনুযায়ী ৩৪ বছরের নিখিলের

সম্পত্তির পরিমাণ ১.৫৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থাৎ ৪৫ হাজার কোটি রুপি। জিরোধা’র পাশাপাশি ‘রেইনম্যাটার’ নামে ভেনচার ক্যাপিটল কোম্পানি ও ‘ট্রু বিকন’ নামে বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি করেছেন তারা।