বেরিয়ে আসছে থলের বিড়াল

| আপডেট :  ২৫ এপ্রিল ২০২১, ০৫:৪৬ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২৫ এপ্রিল ২০২১, ০৫:৪৬ অপরাহ্ণ

শুরু থেকেই বিএনপি বলেছিল যে, হেফাজতের আন্দোলনের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। এই আন্দোলনের বিন্দুবিসর্গও তারা কিছু জানেন না। এই বক্তব্য শুধু তারা দেননি। বিএনপি মহাস’চিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংবাদ সম্মেলন করে হেফাজতের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সম্পর্কের কথাও প্রকাশ্যে বলেছিলেন। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, থলের বিড়াল বেরিয়ে আসছে।

আজ হেফাজতের একজন নেতা গ্রে’ফতারের প্র’তিবাদ করেছেন বিএনপির মহাস’চিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ যেন `বুক ফাটে তবু মুখ ফোটে না`র মত অবস্থা। শেষ পর্যন্ত অনেক ক’ষ্ট সহ্য করে চুপ থাকতে পারলেন না বিএনপি মহাস’চিব। তার আর্তনাদ বেরিয়ে এলো। হেফাজতের নায়েবে আমীর এবং খেলাফত মজলিসের মহাস’চিব আহমেদ আবদুল কাদেরকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা গ্রে’প্তার করেছে।

তার বি’রুদ্ধে সুনির্দিষ্ট স’ন্ত্রাস ও না’শকতার অ’ভিযোগ আছে। আর তাঁকে গ্রে’প্তার করার পরপরই বিএনপির আর্তনাদ দেখা গেল। বিএনপির মহাস’চিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই গ্রে’ফতারের নি’ন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিলেন। এর মাধ্যমেই প্রকাশিত হলো যে বিএনপির সঙ্গে হেফাজতের সম্পৃক্ততা রয়েছে।

মজার ব্যাপার হল যে, খেলাফতে মজলিস ২০ দলীয় জোটের শরিক অঙ্গসংগঠন। জামাতসহ নানারকম ইসলামপন্থী দলকে নিয়েই এই জোটটি বিএনপি গঠন করেছে স’রকার বি’রোধী আন্দোলনকে চাঙ্গা করার জন্য। যদিও এখন প্রকাশ্যে ২০ দলীয় জোট নেই কিন্তু মাঝে মাঝে ২০ দলীয় জোটের মিটিং হয়। এরকম একটি বৈঠকের খবর প্রকাশ্যে আসার কারণে মহাস’চিব চটেছিলেন দলের অন্য স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের বি’রুদ্ধে।

২০ দলীয় জোটকে আন্ডারগ্রাউন্ডে রাখা হচ্ছে মূলত হেফাজতকে দিয়ে স’ন্ত্রাসী এবং অপতৎপরতা চা’লানোর জন্য, সেটি এখন প্রকাশ্য হলো। ২০২০ সালের নভেম্বরে হেফাজতের যে নতুন কমিটি হয়, যেখানে জুনায়েদ বাবুনগরী মহাস’চিব নিযুক্ত হন সেই কমিটিতে ব্যাপক পরিমাণ খেলাফত মজলিস, জামায়াত এবং অন্যান্য দক্ষিণপন্থী উ’গ্রবা’দী ইসলামী দলের অন্তর্ভুক্তি ঘটেছিল। একটি অরাজনৈতিক মাদ্রাসা সংগঠন থেকে এটিকে রাজনীতিকরন করা হয়েছিল। তখন থেকে হেফাজত বিএনপির দাবার ঘুঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

বিএনপি-জামায়াত এবং ২০ দলের ইন্ধন, প্রত্যক্ষ ম’দদেই হেফাজত ২৬-২৭ মার্চ তা’ণ্ডব চালিয়েছে। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের বি’রোধিতা করেছে। এটি এখন প্রায় প্রমাণিত সত্য। আর এই কর্মকাণ্ড করার জন্য বিএনপি নেতারা যে হেফাজতকে নানাভাবে খুশি করেছে সেই তথ্য এখন বেরিয়ে আসছে।

তবে বিএনপি থেকে বারবার বলা হচ্ছিল যে, এ ধরনের অ’ভিযোগ অসত্য, ভিত্তিহীন। এর পেছনে কোনো কারণ নেই। বিএনপি মহাস’চিব থেকে শুরু করে বিভিন্ন নেতা হেফাজতের সাথে তাদের সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছিল। কিন্তু এখন থলের বিড়াল বেরিয়ে এলো। খেলাফত মজলিস যে ২০ দলীয় জোটের অন্যতম একটি শরীক সংগঠন সেটি যেমন প্রমাণিত তেমনি খেলাফত মজলিসের নেতা যখন হেফাজতের নায়েবে আমীর হন তখন হেফাজত ২০ দলের একটি শরীক সংগঠনে পরিণত হয়।

এই সমীকরণ মিলালেই দেখা যায় যে, সাম্প্রতিক সময়ে হেফাজতের যেই তৎপরতা সেই তৎপরতার পিছনে একটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল। সুস্পষ্ট রাজনৈতিক লক্ষ্য ছিল। স’রকারকে উৎখাত করে সারাদেশে একটি তা’ণ্ডব সৃষ্টি করাই ছিল হেফাজতের পরিকল্পনার একটি অংশ। আর সেটিই করার জন্যই জুনায়েদ বাবুনগরী, মামুনুল হক এবং আহমেদ আবদুল কাদেররা তাদের কর্মীদেরকে নির্দেশনা দিয়েছিলেন।

সেই নির্দেশনা অনুযায়ী তারা দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এখন পুরো ঘটনা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ত’দন্ত করছে। ত’দন্তে নিশ্চিত আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসবে।