ভে’ঙে পড়েছে হেফাজতের শীর্ষ কমান্ড, বাবুনগরীও গ্রে’প্তার হবেন?

| আপডেট :  ২৪ এপ্রিল ২০২১, ০৪:২৯ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২৪ এপ্রিল ২০২১, ০৪:২০ অপরাহ্ণ

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের বি’রোধিতা করে চা’লানো তা’ণ্ডবের ঘটনায় স’রকারের ক’ঠোর অবস্থানে বিপাকে পড়েছে হেফাজতে ইসলাম। রাষ্ট্রবি’রোধী উসকানি ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য এবং সহিং’সতাসহ বিভিন্ন অ’ভিযোগে দা’য়েরকৃত মা’মলায় এরই মধ্যে গ্রে’প্তার হয়েছেন হেফাজতের শীর্ষ পর্যায়ের বেশ কয়েকজন নেতা। এদের মধ্যে অন্তত ৩২ জন কেন্দ্রীয় নেতা রয়েছেন। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে গ্রে’প্তার হয়েছেন আরো অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী। গ্রে’প্তার আ’তঙ্কে পা’লিয়ে বেড়াচ্ছেন এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকা নেতারা।

সম্প্রতি গো’য়েন্দা পুলিশের হাতে আ’টক হওয়া হেফাজতের হেভিওয়েট নেতাদের মধ্যে আছেন নারীকাণ্ডে বি’তর্কি’ত মাওলানা মামুনুল হক, আজিজুল হক ইসলামাবা’দী, ইলিয়াস হামিদী, ওয়াসেক বিল্লাহ নোমানী, লোকমান হোসেন আমিনী, শাখাওয়াত হোসাইন রাজী, মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, মুফতি বশির উল্লাহ, মাওলানা জুবায়ের, মাওলানা জালাল উদ্দিন ও জুনায়েদ আল হাবীব। এসব নেতাই হেফাজতের মূল নিয়ন্ত্রক ছিলেন বলে জানিয়েছেন গো’য়েন্দারা।

বাবুনগরীও কি গ্রে’প্তার হবেন?
একের পর এক কেন্দ্রীয় নেতা গ্রে’প্তারের ঘটনার মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে তবে কি হেফাজত আমির মাওলানা জুনাইদ বাবুনগরীকেও গ্রে’প্তার করা হবে নাকি এই যাত্রায় রক্ষা পাবেন?

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক সংস্থার সংগে যোগাযোগ করে জানা গেছে, আপাতত জুনাইদ বাবুনগরীকে গ্রে’প্তারের সম্ভাবনা কম। তবে তিনি নজরদারিতে রয়েছেন। শীর্ষ নেতাদের গ্রে’প্তারে অনেকটা কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন বাবুনগরী। হেফাজতের আরো যেসব নেতাকে গ্রে’প্তারের চেষ্টা চলছে তাঁরা গ্রে’প্তার হলে তিনি জি’ম্মি পরিস্থিতিতে পড়ে যাবেন। ফলে তাঁকে গ্রে’প্তারের বি’ষয়ে সেভাবে ভাবছে না গো’য়েন্দা পুলিশ।

গো’য়েন্দা সংস্থার অন্য একটি সূত্রে জানা গেছে, রাষ্ট্রবি’রোধী কাজে উসকানির অ’ভিযোগে হেফাজতের ১৯৪ জন নেতার তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তালিকায় প্রথমেই রয়েছেন জুনাইদ বাবুনগরী। তবে আপাতত তাঁকে নজরদারিতে রেখে বাকিদের গ্রে’প্তারে জো’র দিচ্ছেন গো’য়েন্দা পুলিশসহ অন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

সূত্রটি আরো বলছে, জুনাইদ বাবুনগরীকে গ্রে’প্তারের মতো পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণ এখনও হাতে আসেনি। তবে অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে।

অন্য একটি গো’য়েন্দা সূত্র বলছে, ২০১৩ সালে হেফাজতকাণ্ডে দা’য়েরকৃত মা’মলার আ’সামি জুনাইদ বাবুনগরী। সম্প্রতি দা’য়েরকৃত মা’মলাগুলোতেও তাঁকে অ’ভিযুক্ত করা হচ্ছে। কিন্তু রাষ্ট্রবি’রোধী কার্যকলাপের যেসব অ’ভিযোগ তাঁর বি’রুদ্ধে আনা হচ্ছে, সেগুলোর শক্ত কোনো প্রমাণ এখনও সংগ্রহে করতে পারেননি ত’দন্তকারীরা।

পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা মহানগর গো’য়েন্দা পুলিশের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা বলেন, সম্প্রতি হেফাজতের মামুনুল হকসহ যেসব নেতাকে গ্রে’প্তার করা হয়েছে, তাঁদের জ’বানব’ন্দিতে রাষ্ট্রবি’রোধী যেসব কর্মকাণ্ডের তথ্য উঠে এসেছে তাতে বাবুনগরীর জ’ড়িত থাকার বি’ষয়ে সুস্পষ্ট প্রমাণ মিলছে না। তবু ত’দন্ত অব্যাহত রেখেছে গো’য়েন্দা পুলিশ।

তিনি আরো বলেন, মূলত বর্তমানে যেসব হেফাজত নেতা গ্রে’প্তার হয়েছেন এবং যাদের বাবুনগরীপন্থী হিসেবে বিবেচনা করা হয়, তাঁদের অনেকেই বাবুনগরীর কমান্ড মানতেন না। বিশেষ করে মামুনুল হক বাবুনগরীর সিদ্ধান্ত সব সময় উপেক্ষা করতেন। সম্প্রতি জ’বানব’ন্দিতেও তিনি এসব বি’ষয়ে স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন। একই সঙ্গে অন্য যারা গ্রে’প্তার হয়েছেন তাঁদের জ’বানব’ন্দিতেও এটি স্পষ্ট নয় যে, বাবুনগরী না’শকতার কোনো নির্দেশনা বা উসকানি দিয়েছেন।

ঢাকা মহানগর গো’য়েন্দা পুলিশের (ডি’বি) যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম বলেন, জুনাইদ বাবুনগরীর বি’রুদ্ধেও মা’মলা রয়েছে। তাঁর বি’রুদ্ধেও আমাদের ত’দন্ত অব্যাহত আছে। ত’দন্তে না’শকতা কিংবা রাষ্ট্রবি’রোধী কর্মকাণ্ডের প্রমাণ মিললে অবশ্যই তাঁকেও গ্রে’প্তার করা হবে। তিনি আমাদের নজরদারির বাইরে নন।

ভে’ঙে পড়েছে হেফাজতের শীর্ষ কমান্ড
হেফাজতের সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, কয়েক দফা চেষ্টা করেও স’রকারের সঙ্গে সমঝোতা করতে না পেরে বেকায়দায় পড়ে গেছে সংগঠনের নেতাকর্মীরা। গ্রে’প্তার আ’তঙ্কে শীর্ষনেতা থেকে কর্মীরাও এখন পা’লিয়ে বেড়াচ্ছেন। বেশির ভাগ হেফাজত নেতা রাতে নিজের বাড়িতে অবস্থান না করে বিভিন্ন মসজিদ-মাদরাসা বা আত্মীয়-স্বজনের বাসায় থাকছেন। এমনকি ইন্টারনেটের মাধ্যমে যোগাযোগের বিভিন্ন অ্যাপস ছাড়া কেউ কারও সঙ্গে কথাও বলছেন না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক হেফাজত নেতা বলেন, ‘স’রকার এত ক’ঠোর অবস্থানে চলে যাবে তারা কল্পনাও করেনি। এখন দলের শীর্ষ কমান্ড পুরোটাই ভে’ঙে পড়েছে। সবাই গ্রে’প্তার এড়ানোর চেষ্টায় ব্যস্ত। এই মুহূর্তে কোনো কর্মসূচি দেওয়ারও সাহস পাচ্ছেন না। রমজান মাস ও ক’রোনা ম’হামা’রির কারণে ঘোষিত লকডাউনও তাদের বি’পদে ফে’লেছে’। সুত্রঃ কালের কন্ঠ