বউই এখন গলার কাঁটা মামুনুলের

| আপডেট :  ২৩ এপ্রিল ২০২১, ১০:১৯ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২৩ এপ্রিল ২০২১, ১০:১৯ পূর্বাহ্ণ

হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের নারী কেলেঙ্কারি, অনেক নারীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক, লাস্পট্য, ব্যভিচার, একাধিক বিয়ে, প্রেম ইত্যাদি সারা দেশের মানুষের এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। মানুষ মামুনুলের এইসব বিষয় নিয়ে অনেক আলোচনা-সমালোচনা করেছে। এরই মধ্যে গতকাল গ্রেফতার হয়েছেন মামুনুল হক।

আর মামুনুল হকের গ্রেফতারের পরে দেখা গেছে শুধুমাত্র রাজধানীতেই তার বিরুদ্ধে ১৭ টি মামলা রয়েছে। এখন একাধিক বিয়ের বিষয়ে আরো বিপদে পড়তে যাচ্ছেন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক। এবার তার প্রথম স্ত্রী প্রথম স্ত্রী আমেনা তাইয়্যেবা এবং কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত আরা ওরফে ঝর্ণা মামুনুলের বিরুদ্ধে মামলা করা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। ফলে বউই এখন গলায় কাঁটা হয়ে উঠেছে মামুনুল হকের কাছে।

মূলত নারায়ণগঞ্জের রয়েল রিসোর্টের নারী কেলেঙ্কারির ঘটনা থেকে মামুনুলের অবৈধ সম্পর্ক, লাস্পট্য, ব্যভিচার, একাধিক বিয়ে, প্রেম ইত্যাদি সবার সামনে আসে। তখন থেকেই তার এই বিষয়ে একের পর এক ফোনালাপ ফাঁস, দ্বিতীয় স্ত্রীর বড় ছেলের অনলাইন বক্তব্যসহ নানা বিষয়ে তার সম্পর্কে মানুষের নেতীবাচক ধারণার সৃষ্টি হতে থাকে এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাও তার এই ধরনের বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজ নিয়ে নানা ধরনের চাঞ্চল্যকর তথ্য পায়। ফলে সবকিছু মানুষের সামনে আসতে থাকে

প্রথমে মামুনুল বলেছিলেন যে, ঝর্ণা তার দ্বিতীয় স্ত্রী এবং শরিয়াসম্মত উপায়ে তিনি তাকে বিয়ে করেছেন। কিন্তু ঝর্ণার ডায়েরি এবং তার কথাবার্তা থেকে স্পষ্ট হওয়া যায় যে তিনি জান্নাত ওরফে ঝর্ণাকে আসলে বিয়েই করেননি বরং তার সাথে প্রতারণা করেছেন। মামুনুলের আরো এক স্ত্রীর সন্ধান পাওয়া যায় পরে।

সেও মামুনুলের স্ত্রী বলে কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাতের ভাই দাবি করেন এবং ২০২০ সালে অর্থাৎ গত বছর তাদের বিয়ে হয়েছে বলেও তার ভাই দাবি করেন। এখন পর্যন্ত মামুনুলের তিনটি স্ত্রীর সন্ধান পাওয়া গেছে। এছাড়াও মামুনুল একাধিক নারীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে এবং তাদের সাথে মামুনুলের সম্পর্ক আছে এমন কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক এত বড় একটি দায়িত্বশীল পদে থেকে এই ধরনের লাস্পট্য, ব্যভিচার করেছেন যেটা সমাজে একটি খারাপ বার্তা দেয়। হেফাজতের প্রতি মানুষের সহানুভূতির জায়গাটি মামুনুল হকে তার এই কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে শেষ করে দিয়েছেন। এখন তার সম্পর্কে মানুষের ধারণা শুধুই একজন লাস্পট হিসেবে।

যার কোনো স্থান সাধারণ মানুষের কাছে নেই। আসলে মামুনুলের মত লোকেরা ধর্মকে সামনে রেখে সাধারণ মানুষের সহানুভূতির জায়গা তৈরি করে আর তলে তলে যত ধরনের খারাপ কাজ রয়েছে তারা সব কিছুই করে। কোনো অবৈধ কাজ করতে গিয়ে ধরা খেলে, মাদ্রাসার নিরীহ শিক্ষার্থীদের লেলিয়ে দিয়ে সেখান থেকে ছাড়া পায়। যেমনটি ঘটেছিলো নারায়ণগঞ্জের রয়েল রিসোর্টে। তাই মামুনুলের মতো মানুষের সাথ দেয়া থেকে বিরত থাকা উচিৎ।

মামুনুল হকের বিরুদ্ধে এই ধরনের কেলেঙ্কারি অভিযোগ নেহায়াতই কম নয়। এর আগেও হেফাজতের সাবেক আমির আল্লামা শফী তাকে সতর্ক করেছিলেন এবং তাকে তাওবা করিয়েছিলেন। কিন্তু আল্লামা শফীর মৃত্যুর পর জুনায়েদ বাবুনগরী হেফাজতের আমির হলে মামুনুল আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে।

যার ফলেই মামুনুল একের পর এক এই ধরনের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়েছে। এখন তো তার দুই স্ত্রী মামলা করা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সামনে আরো কতজন এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে শামিল হয় সেটিই এখন দেখার বিষয়।