পশ্চিমবঙ্গে মাদ্রাসা বোর্ডে প্রথম ঝালমুড়িওয়ালার মেয়ে, ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন তার

| আপডেট :  ১ জুন ২০২২, ০১:১৩ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১ জুন ২০২২, ০১:১৩ অপরাহ্ণ

ছোটবেলা থেকেই অভাবের সংসারে বেড়ে উঠেছেন সাকিফা। পড়ালেখার খরচ তো দূরের কথা তিনবেলা খাবারের ব্যবস্থা করতেই হিমশিম খেতে হতো তার পরিবারের। তবে এই পরিবারের মধ্যে হাসির কারণ ছিলো সাকিফা।বছর-বছর আলো জ্বালাত সারিফার রেজাল্ট। সব শ্রেণিতেই প্রথম অথবা দ্বিতীয় স্থানে থাকত সে। বাবা-মায়ের স্বপ্ন ছিল, লেখাপড়া করে মেয়ে একদিন পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করবেই। আর অবশেষে সেই স্বপ্ন সত্যি হয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গ হাই মাদ্রাসা বোর্ডের দশম শ্রেণির পরীক্ষায় রাজ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেছে মালদা জেলার রতুয়া ব্লকের বটতলা হাই মাদ্রাসার ছাত্রী সারিফা খাতুন। সকাল থেকেই তার পরিবারের চোখ ছিল মোবাইলে। বেলা বাড়তেই আসে সুখবর। জানা যায়, ৮০০ নম্বরের মধ্যে ৭৮৬ নম্বর পেয়েছে সারিফা। খবর ছড়াতেই তার বাড়িতে ভিড় করেন আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীরা। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাও শুভেচ্ছা জানাতে সারিফার বাড়িতে আসেন।

সারিফা জানান, তার বাবা একজন ঝালমুড়ি বিক্রেতা। ছোটোবেলা থেকেই চরম দারিদ্র্য দেখে এসেছে সে। এখন সে সব পার করে ভাল রেজাল্ট করলেও, উচ্চশিক্ষার জন্য আর্থিক প্রতিবন্ধকতাই বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখা।

সারিফা ছোট থেকেই দেখে এসেছে, গ্রামে চিকিৎসার অভাবে চোখের সামনে অনেক গরিব মানুষ তিলে তিলে মারা গেছেন। তাই দেখেই তার চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখা। সে চায়, গরিব মানুষের বিনামূল্যে চিকিৎসা করতে।

সারিফার বাবা উজির হোসেন জানান, তার তিন মেয়ে ও দুই ছেলে। সারিফা সবচেয়ে ছোট। অভাবের সংসার তার, বাড়ির সামনে ঝালমুড়ি বিক্রি করে দিনে দু-তিনশো টাকা আয় করেন। এই সামান্য আয়ে ছেলে-মেয়ের পড়াশোনার খরচ ও সংসারের খরচ জোগাড় করতে হিমসিম খেতে হয় তাকে। এখন পরিবারে বড় চিন্তা, আগামীদিনে মেয়ের পড়াশোনা চালানোর খরচ কীভাবে বহন করা হবে। কিভাবে সত্যি করবেন মেয়ের ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন।